নিন্দনীয় আচরণের কারণে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটার দিলীপ সামারাবিরাকে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। আগামী ২০ বছর সামারাবিরা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডে, দেশটির যেকোনো রাজ্য ক্রিকেট দলে কিংবা নারী ও পুরুষদের বিগব্যাশ টি–টোয়েন্টি লিগের কোনো দলে কাজ করতে পারবেন না। সামারাবিরা ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৭টি টেস্ট ও ৫টি ওয়ানডে খেলেছেন।
দিলীপ সামারাবিরার আরেকটি পরিচয় তিনি বাংলাদেশ দলের সাবেক ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবিরার বড় ভাই। তিনি শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে দলে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জায়গায়। ৫২ বছর বয়সী এই লঙ্কান ভিক্টোরিয়া রাজ্য ক্রিকেটের কোচিং স্টাফে দায়িত্ব পালনকালে নানাভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে সিএ। তারা সামারাবিরার এই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাকে ‘নিন্দনীয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর সিএর অচরণবিধি কমিশন তদন্ত করে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সামারাবিরা দীর্ঘদিন ধরেই ভিক্টোরিয়া রাজ্য নারী দল ও বিগব্যাশে মেলবোর্ন স্টারসের কোচিং স্টাফে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে ভিক্টোরিয়া নারী দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এক ব্যক্তিকে তাঁর অধীন ভিক্টোরিয়া দলে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন, যা আইনসম্মত ছিল না।
এর পাশাপাশি সামারাবিরার বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ উঠেছিল। ভিক্টোরিয়া নারী দলের এক ক্রিকেটার তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে সিএর কাছে অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে ক্রিকেট ভিক্টোরিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক কামিন্স বলেছেন, ‘সামারাবিরার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আচরণবিধি কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তা সমর্থন করি। আমরা মনে করি, সামারাবিরা যে আচরণ করেছে, সেটি নিন্দনীয় ও ক্রিকেট ভিক্টোরিয়ার আচরণ নীতিমালার সঙ্গে একপ্রকার বিশ্বাসঘাতকতা। তার আচরণের শিকার হওয়া ব্যক্তির প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। তিনি সামারাবিরার বাজে আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে অসাধারণ মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া যেকোনো কর্মীরই নিরাপত্তা বিধানে বদ্ধপরিকর। আমরা কখনোই কারও কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ সহ্য করব না।’
১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে মোরাতুয়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় সামারাবিরার। একেবারেই সাদামাটা টেস্ট ক্যারিয়ারে তাঁর কোনো ফিফটি বা সেঞ্চুরি নেই। ১৯৯৫ সালের মার্চে ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি শেষ টেস্ট খেলেন। ওয়ানডেতে অভিষেক ১৯৯৩ সালে, শারজায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে ১৯৯৪ সালে শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেন জলন্ধরে। ওয়ানডেতে তাঁর সেরা ইনিংস ৪৯।