বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের স্বস্তি দিতে পারে দিল্লির উইকেট

বিশ্বকাপ যত এগোচ্ছে, একেকটা ম্যাচের গুরুত্ব দলগুলোর কাছে ততই বদলাতে শুরু করেছে। কারও কাছে সেমিফাইনাল বা নকআউট পর্বের পোশাকি মহড়ার, আবার কারও কাছে তলানি থেকে একটু ওপরে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করার লড়াই হয়ে উঠছে ম্যাচগুলো। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারও আছে এবার।

শ্রীলঙ্কা ঠিক পাশের দেশের প্রতিবেশী না হলেও আমাদের বেশ চেনা প্রতিপক্ষ। আজ দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে খেলার মতো স্নায়ুচাপ তাই থাকার কথা নয়। কিন্তু মাথার ওপর চাপ আছে, এ ম্যাচ হেরে গেলে টুর্নামেন্টে নিজেদের অবস্থানটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! সে চাপ ভুলে গিয়ে যদি মন খুলে খেলতে পারে, উদ্যমী বোলারকে খেলানো যায়, সাকিব-মিরাজরা যদি সেরাটা দিতে পারেন, তাহলে দিনটি বাংলাদেশের হতে পারে। আমি বলব, আজ বাংলাদেশের জেতা উচিত।

শক্তিমত্তার দিক দিয়ে শ্রীলঙ্কাই এগিয়ে আছে কিছুটা। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি বাদ দিলে তাদের ব্যাটসম্যানরা, বিশেষ করে ওপরের দিকে পাতুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমারা ফর্মে আছেন। বাংলাদেশের টপ অর্ডারের কেউ সে অর্থে ফর্মে নেই। চোট হানা দেওয়াতে শ্রীলঙ্কার বোলিংও একটু অগোছালো। তবু দিলশান মাদুশঙ্কা শুরুতে নিয়মিত ব্রেকথ্রু এনে দিচ্ছেন। মহীশ তিকশানার মতো স্পিনার ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হতে পারেন। তাঁদের তুলনায় বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ এখন পর্যন্ত বেশ অনুজ্জ্বল।

দিল্লিতে অনুশীলনে নাজমুল হোসেন

বাংলাদেশ দল সামর্থ্যের ধারেকাছেও খেলতে পারেনি এবার। ব্যাটসম্যানদের সেরাটি দেখতে না পারার আক্ষেপটা রয়ে গেছে। কিন্তু দিল্লির উইকেট স্বস্তি দিতে পারে। শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকার ওই ম্যাচের পর থেকেই এ মাঠে বাংলাদেশ দলকে খেলতে দেখতে মুখিয়ে আছি। বাংলাদেশের উচিত হবে নাসুম আহমেদকে দলে আনা, তিনি নতুন বলে ভালো। সে ক্ষেত্রে হয়তো তানজিদ হাসান বা তাওহিদ হৃদয়ের একজন বাদ পড়বেন। আমি তানজিদকে রেখে দেওয়ার পক্ষে, তাঁকে সাহসী মনে হয়, দিল্লির উইকেটও তাঁর জন্য আদর্শ হতে পারে। আর উইকেটে যদি বল গ্রিপ করার তেমন সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে মোস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় তানজিম হাসানকে খেলানো দরকার।

আশা করি, নাজমুল হোসেন আজ কিছু করে দেখাতে পারবেন। এ বিশ্বকাপে যেমন খেলেছেন, তিনি সে মানের নন। শুধু মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজকেই আস্থার সঙ্গে খেলতে দেখেছি। আশা করি, ফর্মহীনতায় থাকা ব্যাটসম্যানদের কেউ আজ বড় ইনিংস খেলবেন। সে তালিকায় নাজমুলের নামটি আগে বলব।

দিল্লির আবহাওয়া বৈরী। মাঠে দলের পারফরম্যান্সও পক্ষে নেই। খেলোয়াড়েরা জানেন, কোন ব্যাপারগুলো ঠিক করতে হবে। অন্য ম্যাচগুলোতেও কোথায় পার্থক্য তৈরি হয়েছে তাঁরা দেখছেন। বাংলাদেশের সমর্থকেরা হয়তো আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু আজ অনেকেই আবার টেলিভিশন খুলে বসবেন। দলগতভাবে নিজেদের মান দেখানোর শেষ সুযোগ বলা যায় ম্যাচটিকে। কারণ, শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া আরও অনেক কঠিন।

  • গাজী আশরাফ হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক