বিভেদের দেয়াল ভেঙে হরভজন সিং-অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের বন্ধুত্ব গড়ে দিয়েছিল আইপিএল। সেই আইপিএলই আবার গৌতম গম্ভীর-বিরাট কোহলির সুসম্পর্ককে বৈরিতায় রূপ দিয়েছে, যার শুরুটা হয়েছিল ২০১৩ সালে। গম্ভীর তখন ছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক, কোহলি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নেতৃত্বে।
এক দশক পর দুজনেরই ভূমিকা বদলেছে। গম্ভীর এখন লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের পরামর্শক, নেতৃত্বে ছেড়ে দেওয়া কোহলি খেলছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে। কিন্তু বৈরিতা এখনো রয়েই গেছে।
গত রাতে ম্যাচ শেষ হতেই দুজনের উত্তপ্ত বাদানুবাদ বৈরিতার আগুনে নতুন করে ঘি ঢেলেছে। সতীর্থরা এগিয়ে না এলে কথা-কাটাকাটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেতেও পারত।
গম্ভীর-কোহলির এই বাদানুবাদ আইপিএল কর্তৃপক্ষ যে স্বাভাবিকভাবে নেবে না, সেটা অনুমতিই ছিল। হয়েছেও তা-ই।
বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আচরণবিধির দ্বিতীয় স্তরের ২.২১ ধারা লঙ্ঘন করেছেন ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা দুই ক্রিকেটার। শাস্তি হিসেবে তাঁদের ম্যাচ ফির পুরোটাই কেটে (১০০% জরিমানা) নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লক্ষ্ণৌয়ের আফগান পেসার নবীন উল হককে ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। তাঁরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন কি না কিংবা আনুষ্ঠানিক শুনানির দরকার পড়েছে কি না, এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। ম্যাচের ১৭তম ওভারে কোহলির সঙ্গে প্রথম ঝামেলা বাধে নবীনেরই। সে সময় এক আম্পায়ার ও অমিত মিশ্র এসে তাঁদের থামান।
ভিডিওতে দেখা গেছে, গম্ভীর-কোহলির বাদানুবাদের সূত্রপাত বেঙ্গালুরুর জয়ের পর দুই দলের খেলোয়াড়দের হাত মেলানোর সময়। ম্যাচ চলাকালেই অবশ্য লক্ষ্ণৌয়ের একটা করে উইকেট পড়ার পর নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করেছিলেন কোহলি। লক্ষ্ণৌয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে গম্ভীরকে চুপ করে থাকার ইঙ্গিত করেন কোহলি। স্ত্রী আনুশকা শর্মার জন্মদিনে তাঁর দিকে উড়ন্ত চুম্বনও দিতে দেখা যায়। আফগানিস্তানের নবীন আউট হওয়ার সময়ও বুনো উল্লাস করেন কোহলি। ক্যাপ খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা ভালোভাবে নেননি নবীন। হাত মেলানোর সময় কোহলিকে তিনি কিছু একটা বলেন। পাল্টা জবাব দেন কোহলিও। এরপরই তেড়ে আসেন গম্ভীর। তুমুল বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয় সেখানেই।
ভারতীয় ক্রিকেটের এত বড় মাপের দুই তারকার দ্বন্দ্ব ক্রিকেটপ্রেমীরা স্বাভাবিকভাবে নেননি। অনেকে দুজনকেই দুষছেন। একজন পুরোনো একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এটা সেই ভিডিও, যখন গম্ভীর ম্যাচসেরার পুরস্কার কোহলিকে দিয়ে দিয়েছিলেন।’
গম্ভীর-কোহলি দুজনই রাজ্য দল দিল্লির হয়ে লম্বা সময় একসঙ্গে খেলেছেন। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর ভারতীয় ব্যাটিংয়ের হালও ধরেছিলেন এ দুজন। সেই তাঁরাই আজ একে অপরকে সহ্য করতে পারেন না!