৩৫ বলে ৬৬ রান করেছেন রনি
৩৫ বলে ৬৬ রান করেছেন রনি

নাঈম–রনির জুটিতে সহজ জয় রংপুরের

সিলেট স্ট্রাইকার্সের লড়াইটা ছিল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রাখার। আর ৪ নম্বরে থাকা রংপুর রাইডার্সকে কীভাবে ওপরে তোলা যায়, সেদিকে ছিল নুরুল হাসানের সব মনোযোগ। আজ এমন সমীকরণের ম্যাচে রংপুর তাদের সেরা পারফরম্যান্সই দেখাল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিলেটকে ১৭০ রানে থামিয়ে সে রান ১২ বল হাতে রেখে টপকে গেছে রংপুর। ৮ উইকেটের বড় জয়ে রান রেটটাও এগিয়ে রাখল দলটি।

যে টপ অর্ডার থেকে বড় রান আসছিল না রংপুরের, সিলেটের বিপক্ষে আজ সেখান থেকেই রান পেল দলটি। সিলেটের বোলিং শক্তির কারণেও রংপুরের পাওয়ার প্লে ব্যাটিংটা সহজ হয়ে যায়। দুই পাকিস্তানি মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম সিলেটের নতুন বলের বোলিংটা সামলে এসেছেন। কিন্তু দুজনই পিএসএল খেলতে দেশে ফিরে গেছেন।

ওদিকে চোটের কারণে দলের আরেক মূল বোলার মাশরাফি বিন মুর্তজা ছিলেন বিশ্রামে। সে সুযোগটা দুই হাতে লুফে নিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম ও রনি তালুকদার। উদ্বোধনী জুটিতেই দুজন তুলেছেন ১০০ রান। ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে রান তুলেছে এই জুটি।

দুজনের মধ্যে দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন রনি। মোহাম্মদ ইরফানের বলে আউট হওয়ার আগে রনির ব্যাট থেকে এসেছে ৩৫ বলে ৬৬ রান। ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ফিফটিটি এবারের বিপিএলে রনির দ্বিতীয়। নাঈমও পেতে পারতেন এবারের বিপিএলে তাঁর প্রথম ফিফটি।

ম্যাচটা রংপুরের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছেন শোয়েব মালিক ও নুরুল হাসান

কিন্তু ৩২ বলে ৪৫ রান করে রেজাউর রহমানের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হন এই বাঁহাতি। দুই ওপেনার আউট হলেও ম্যাচটা রংপুরের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছেন শোয়েব মালিক ও নুরুল হাসান। দুজন মিলে ৫২ রান যোগ করেন। মালিক ২৪ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ১৭ বল খেলে ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন নুরুল।

উল্টোটা দেখা গেছে সিলেটের ইনিংসের শুরুতে। রংপুরের নতুন বলের বোলার আজমতুল্লাহ ওমরজাই প্রথম স্পেলে অবিশ্বাস্য বোলিং করেছেন। সিম, সুইং, বাউন্স—কী ছিল না সে স্পেলে! তাঁর প্রথম দুই ওভারে ব্যাট থেকে কোনো রান নিতে পারেননি সিলেটের দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন ও তৌহিদ হৃদয়। একের পর এক ডট বল করে গেছেন এই আফগান পেসার। সিলেটের দুই ওপেনারের ভাগ্য ভালো, বেশ কয়েকবার ওমরজাইয়ের বল দুজনের ব্যাট ঘেঁষে গেছে কিপার নুরুল হাসানের গ্লাভসে। অথচ দুজনই এবারের বিপিএলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ছন্দে থাকার পরও ব্যাটে বলে হচ্ছিল না তাঁদের।

নাজমুল সে স্পেলটা পার করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। হাসান মাহমুদ এসে বোল্ড করেন ১৫ রানে থাকা নাজমুলকে। শেখ মেহেদী হাসানের অফ স্পিনে ৭ রান করে আউট হন আরেক বাঁহাতি জাকির হাসান। তবে মন্থর শুরুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন হৃদয়। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে মাঝের ওভারে জুটি গড়েন তিনি। ৪৩ বলে তুলে নেন এবারের বিপিএলের পঞ্চম ফিফটি। এরপর খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন হৃদয়।

৫৭ বলে ১১১ রান যোগ করেন হৃদয় ও মুশফিক

সে কৃতিত্বটা মুশফিককেও দিতে হয়। চোটের কারণে বিশ্রামে থাকা মাশরাফির অবর্তমানে অধিনায়কত্ব করতে নামা মুশফিক ৩০ বলে ফিফটি করেন। তিনিই মূলত সিলেটের ইনিংসে গতিপথ পাল্টে দেন। হৃদয়ও তাতে যোগ দেন। দুজন মিলে ৫৭ বলে ১১১ রান যোগ করেন। মুশফিক ৩৫ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। হৃদয় খেলেছেন ৫৭ বলে অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। হৃদয়ই এখন বিপিএলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।