জাতীয় দলে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল সেই ২০০৬ সালে। ২০১০ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচ ও সহকারী কোচ হিসেবে। ২০১০-১১ সালে ছিলেন বিসিবির একাডেমির বিশেষজ্ঞ কোচ।
প্রথমবার বিসিবির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহদের মতো তারকা ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে সালাউদ্দিনের কোচিং। তারকা ক্রিকেটারদের সেই প্রজন্ম এখন শেষের পথে। নতুন আরও একটি প্রজন্মের ক্রিকেটাররা এখন বাংলাদেশ দলে জায়গা করে নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালাবদলের সময়টায় আরও একবার বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে এলেন সালাউদ্দিন। এবার তাঁর পদের নাম সিনিয়র সহকারী কোচ, চুক্তি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। তবে সব ঠিক থাকলে সালাউদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে যেতে পারে বিসিবি। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া সালাউদ্দিন বাংলাদেশকে আরও একটি প্রজন্ম তৈরি করে দিতে চান। দায়িত্ব নেওয়ার পর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আজ সেই লক্ষ্যের কথাই জানালেন তিনি।
এবার বিসিবির চাকরি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে উত্তরে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, এখন সঠিক সময়। আমি হয়তো কোচিং আর বেশি দিন না–ও করতে পারি। হয়তো আর চার–পাঁচ বছর করব। আমার মনে হয়, এখনই সঠিক সময়। আমার দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারের শেষে আমি যদি আরও একটা জেনারেশনকে হেল্প করতে পারি, তাহলে সেটা আমার নিজের কাছেও ভালো লাগবে। কারণ, আপনি শুধু জেনে গেলেন, কিন্তু কোনো প্রদীপ জ্বালালেন না, সেটা তো ঠিক হবে না। এই কাজটা যদি ভালোভাবে করতে পারি, কিছুটা হেল্প হলেও আমি মনে করি ভালো হবে।’
গত কিছুদিন ক্রিকেট অনুরাগী মানুষদের কাছে সালাউদ্দিনের জনপ্রিয়তারও প্রমাণ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাঁদের প্রত্যাশার প্রতিদানও দিতে চান সালাউদ্দিন। নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বললেন, ‘অনুভূতি তো অবশ্যই থাকবে। হয়তো বাসায় রোমাঞ্চটা একটু বেশি। চেষ্টা করব যেন মানুষ আমাকে ভালোবাসে; আমি দেখলাম শেষ কিছুদিনে, সেটার প্রতিদান দেওয়াও নৈতিক দায়িত্ব হয়ে গেছে।
আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত সময় যতটুকুই হোক, আমি যদি কারও জীবনে সামান্যতম প্রভাব রাখতে পারি, সেটাই মনে করি সার্থকতা। আমি হয়তো নাটকীয়ভাবে (ড্রামাটিকালি) অনেক চেঞ্জ করতে পারব না। কিন্তু আমার একটা কথা, একটা কিছুতে তাঁর জীবনে কিছু পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটা আমার অনেক বড় সার্থকতা হবে।’
এর আগে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্নে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন সালাউদ্দিন। এবার কেন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন? এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আমি সব সময় বলেছি, আমাকে একটু সময় দিতে হবে। আমি আসতে চাইনি, তা নয়। কারণ, আমি দু-তিনটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেটা তো আমি একেবারে ফেলে আসতে পারব না। যেহেতু ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে, তিন মাস আগে থেকে কথা চলছিল, এর মধ্যে আমি এগুলো সেটল করতে পেরেছি বলে আসতে পেরেছি।’
সব ঠিক থাকলে এ মাসে বাংলাদেশ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে জাতীয় দলে যোগ দেবেন সালাউদ্দিন। এর মধ্যেই মিরপুর স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের অনুশীলনে সালাউদ্দিনকে দেখা গেছে। আগামী কয়েক মাসে তাঁর কাজের ধরন কী হতে পারে, সেটার একটা ধারণা দিতে দিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু আমি সহকারী কোচ, যেহেতু হেডকোচ আছে এখানে, তার দর্শনটা আমাকে আসলে...সে কীভাবে টিমটা চালাচ্ছে, তাকে সাহায্য করা। এর সঙ্গে খেলোয়াড়দের সাহায্য করা...যতটুকু পারি। আমার ভূমিকাটা হয়তো ভিন্ন হবে আগেরবারের তুলনায়।’
পরে যোগ করেন, ‘চেষ্টা করব আমাদের ছেলেরা যেন আরেকটু আত্মবিশ্বাসী হয়। সেই সঙ্গে আমাদের যে বিদেশি কোচরা আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগটা যেন আরেকটু ভালো সেদিকে যায় সেই লক্ষ রাখব।’