আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পরবর্তী আসরের আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পরবর্তী আসরের আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও কি ‘হাইব্রিড মডেল’

দীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে পাকিস্তান কখনো এককভাবে আইসিসির টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তাই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) জন্য বড় এক মাইলফলক। ৫০ ওভার ক্রিকেটের এই প্রতিযোগিতার একক আয়োজক স্বত্ব প্রদান করে গত ডিসেম্বরেই পিসিবির সঙ্গে চুক্তি করেছে আইসিসি।

কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাই এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য অন্য বোর্ডের কথা ভাবছে। না, পিসিবি থেকে আয়োজক স্বত্ব কেড়ে নেওয়ার ভাবনা নয়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ পাকিস্তানের বাইরে অন্য একটি দেশেও আয়োজনের কথা ভাবছে আইসিসি। ২০২৩ এশিয়া কাপ সূত্রে যা ‘হাইব্রিড মডেল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

গত বছর এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপের মূল আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সেখানে যেতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রোহিত শর্মাদের ম্যাচগুলো হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সে সময় পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে সরকারের অনুমতি না থাকার যে কারণ দেখিয়েছিল, এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বেলায়ও সে রকম হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। বিসিসিআই সহসভাপতি রাজীব শুক্লা গণমাধ্যমের প্রশ্নে যা বলেছেনও।

এমন পরিস্থিতিতে এসিসির মতো হাইব্রিড মডেলের কথা ভাবা শুরু করেছে আইসিসি। পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বিসিসিআইয়ের পাকিস্তানবিষয়ক অস্বস্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিকল্প পরিকল্পনা বিবেচনা করছে আইসিসি। ১৯ থেকে ২২ জুলাই শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় আইসিসির বার্ষিক সভা আছে। সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে অন্য আরেকটি দেশে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা আছে।

বিসিসিআই এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে আইসিসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। সূত্র বলছে, বার্ষিক সভায় বিসিসিআইয়ের কাছে পাকিস্তানের খেলার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হবে। ধরে নেওয়া হচ্ছে, বিসিসিআই তখন ভারত সরকারের অনুমোদনের কথাই বলবে। এর সূত্র ধরে আলোচনা করা হবে হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করা যায় কি না। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য আয়োজক হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম তোলা হবে।

ভারত সরকার সাধারণত লিখিতভাবে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় না বা সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয় না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ক্ষেত্রেও সেটি ঘটলে এবং পাকিস্তান একক আয়োজক থেকে যাওয়ায় ভারত শেষ মুহূর্তে টুর্নামেন্ট থেকে সরে গেলে সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি হবে—এমন শঙ্কায় একটি ‘কনটিনজেন্সি’ (আকস্মিক ঘটনা) পরিকল্পনা তৈরি করছে আইসিসি। বার্ষিক বৈঠকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির যৌথ আয়োজনের বাজেট নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করা হলে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল, ফাইনাল হবে পাকিস্তানের বাইরে।

তবে এশিয়া কাপে রাজি হলেও এবার হাইব্রিড মডেলের বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিতে চায় পিসিবি। গতকাল জিও নিউজের খবরে বলা হয়, ‘হাইব্রিড মডেল’, ‘নিরপেক্ষ ভেন্যু’ বা ‘প্ল্যান বি’তে যেতে রাজি নয় পিসিবি। আইসিসির সভায় এককভাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের বক্তব্য তুলে ধরবেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।

পিসিবির খসড়া সূচি অনুযায়ী ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৯ মার্চ চলবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আট দলের টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে আছে পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আফগানিস্তান।