ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের উল্লাস অস্ট্রেলিয়ার
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের উল্লাস অস্ট্রেলিয়ার

উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়ার পতন দেখছেন ভন

এই অস্ট্রেলিয়া কী জেতেনি! ওয়ানডে বিশ্বকাপ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা অ্যাশেজে মর্যাদার লড়াই—সবকিছু জেতা দলটির নামই তো অস্ট্রেলিয়া। তবে প্যাট কামিন্সের এই অস্ট্রেলিয়ারই পতন দেখছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। আগামী অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে ইংল্যান্ডের ট্রফি নেওয়ার বড় সুযোগও দেখছেন তিনি। কেন হুট করে এমন দাবি করলেন ভন? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বলেই তো আর এমন দাবি কারও করার কথা নয়! নিশ্চয়ই ক্রিকেটীয় যুক্তি আছে।

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে লেখা কলামে ভন শুরুতে উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন সম্প্রতি শেষ হওয়া পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ দুটিকে, ‘এই গ্রীষ্মে যে অস্ট্রেলিয়ায় খুব জমজমাট ক্রিকেট–লড়াই হবে, এমন প্রত্যাশা খুব একটা ছিল না। কারণ, সফর করা দুটি দল পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড সেখানে খুবই বাজে। তবে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সিরিজ দুটিতে, যার প্রমাণ গ্যাবাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত এক জয়।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারটাকেই অস্ট্রেলিয়ার জন্য দুর্লক্ষণ ভাবছেন ভন, ‘অস্ট্রেলিয়া ভালো দল। প্যাট কামিন্স দুর্দান্ত নেতা। তাদের যখন খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো সেশন দরকার হয়, তারা সেটা খুঁজে পায়। এ কারণে ব্রিসবেনে তাদের হারে আমি অবাক হয়েছি। ২০২৫-২৬ অ্যাশেজে যে ইংল্যান্ডের অনেক বড় সুযোগ, এই টেস্টই তার লক্ষণ।’

২০২৫-২৬ অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের অনেক বড় সুযোগ দেখছেন ভন

আগামী অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের সুযোগটা কেন বেশি, সেটা বলতে গিয়ে অস্ট্রেলীয় তারকাদের বয়সের কথা বলেছেন ভন, ‘সেই সময় অস্ট্রেলিয়া ক্লান্ত দল হয়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছে। গ্রেট খেলোয়াড়দের যে দলটা আছে, সেখান থেকে ডেভিড ওয়ার্নার সবার আগে অবসর নিয়েছে। অন্যদের বয়স ত্রিশের কোটায়, বয়স তাদের জন্য একটা উদ্বেগের বিষয়। এই গ্রুপের ক্রিকেটাররা সবকিছু জিতে গেছে, নতুন কি তাদের অনুপ্রাণিত করবে?’

প্রায় এক যুগ ধরেই অস্ট্রেলিয়ার স্পিন আক্রমণ একাই সামলাচ্ছেন নাথান লায়ন। সেই অর্থে বলার মতো কোনো বিকল্প এখনো তারা পায়নি। ৩৬ বছর বয়সী লায়নকে নিয়েও তো ভাবার সময় এসেছে।

নাথান লায়ন, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডদের বিকল্প মাথায় রাখার কথা বলছেন ভন

ভন সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘তাদের দুর্দান্ত বোলিং লাইনআপে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কিছু নতুন মুখ ঢোকাতে হবে। নাথান লায়নের কোনো বিকল্প তাদের নেই, যার বয়স অ্যাশেজের সময় হবে ৩৮, এরই মধ্যে সে মাংসপেশির চোটে ভুগছে। এমন কেউ অপেক্ষাও করছে না, যে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে নাথান লায়নের কাজটা করতে পারবে। অ্যাশেজে মিচেল স্টার্কের বয়স হবে ৩৬, হ্যাজলউডের ৩৫, কামিন্সের ৩২। এমন একটা বয়স, যখন তারা আগের মতো ৫ টেস্ট খেলতে পারবে না, চোটের ধাক্কা আসবে। বিশ্বাসই করতে পারি না, তারা নিউজিল্যান্ডে বার্টলেটকে দলে নেয়নি, ওকে মারাত্মক বোলার মনে হয়েছে।’

স্টিভ স্মিথ সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ থেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করতে শুরু করেছেন। তাতে মিডল অর্ডার এখন অনেকটাই অনভিজ্ঞ। এই জায়গায় তারা চাইছে অলরাউন্ডার গ্রিনকে।

টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংক্রমে ডেভিড ওয়ার্নারের জায়গায় ব্যাট করছেন স্টিভ স্মিথ

তবে এই অলরাউন্ডারের কিছু সমস্যা চোখে পড়েছে ভনের, ‘আমি অস্ট্রেলিয়ান হলে ব্যাটিং নিয়েও উদ্বিগ্ন হতাম। এই গ্রীষ্মের পাঁচ টেস্টে তারা মাত্র দুটি শতক পেয়েছে। সাধারণত তারা গ্রীষ্মের প্রথম ইনিংসেই দুটি শতক করে। আমার মনে হয়, স্টিভ স্মিথ ওপেনার হিসেবে উসমান খাজার সঙ্গে দুর্দান্ত করবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মিডল অর্ডার নিয়ে, যেখানে সে দুর্দান্ত ছিল। বুঝতে পারছি, কেন ক্যামেরন গ্রিনকে ৪ নম্বরে চাইছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তার রেকর্ড দুর্দান্ত। তবে ইনিংসের শুরুতে অফ স্টাম্পের আশপাশের বলে সে খুবই দুর্বল।’