আফগানিস্তানের জন্য সবটাই ইতিহাস। প্রথমবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে দলটি। স্বপ্নের সেমিফাইনালে উঠে নিঃসন্দেহে দারুণ কিছুই করতে চেয়েছিল রশিদ খানের দল। কিন্তু সেটা হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ত্রিনিদাদে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
টি-টোয়েন্টিতে যা আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। উইকেট যতই কঠিন হোক, এত কম রানে কি জেতা যায়! ৮.৫ ওভারেই এই রান তাড়া করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ মানছেন, তাঁদের জন্য কঠিন এক রাত কেটেছে। আর এর পেছনে কন্ডিশনেরও দায় দেখছেন রশিদ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ বলেছেন, ‘দল হিসেবে আমাদের জন্য কঠিন এক রাত গেছে। আমরা এর চেয়ে ভালো করতে পারতাম। কিন্তু কন্ডিশন আমাদের সেটা করতে দেয়নি, তবে এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আফগানিস্তান সেমিফাইনাল খেলার আগে কেমন সময় পার করে এসেছে, সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ করা এক পোস্টে বলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন, ‘সেন্ট ভিনসেন্টে সোমবার রাতে জিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে আফগানিস্তান। মঙ্গলবার চার ঘণ্টা ফ্লাইট দেরির পর ত্রিনিদাদে পৌঁছে অনুশীলনের সময় পায়নি কিংবা নতুন ভেন্যুর সঙ্গে মানিয়েও নিতে পারেনি। খেলোয়াড়দের প্রতি সম্মানের প্রকট অভাব।’
সেমিফাইনালে আফগানিস্তান বেশি রান তুলতে পারবে না সেটা বোঝা গিয়েছিল পাওয়ারপ্লে শেষেই। প্রথম ৬ ওভারেই ২৮ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় দলটি। এরপর আর তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রশিদও দায় দেখছেন ব্যাটিংয়ের, ‘আমার মনে হয় আমরা ব্যাটিংটা ভালো করিনি। ব্যাটিং নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে, বিশেষ করে মিডল অর্ডার কীভাবে খেলাটাকে গভীরে নিতে পারে তা নিয়ে। যেটা বলছিলাম, অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমরা দারুণ কিছু অর্জন করেছি, কঠোর পরিশ্রম করে আমরা আবার ফিরব। বিশেষ করে ব্যাটিং বিভাগ নিয়ে খাটতে হবে।’
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গর্ব করার মতো অনেক কিছুই আছে আফগানিস্তানের। গ্রুপ পর্বে উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বড় ব্যবধানে প্রত্যাশিতই জয় তো পেয়েছেই, সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে ৭৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮৪ রানে জেতে দলটি। এরপর সুপার এইটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে।
রশিদ বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের পেসাররা দারুণ বোলিং করেছে। এ কারণেই আমরা এই টুর্নামেন্টে সফলতা পেয়েছি, ভালো শুরুটা প্রয়োজন। মুজিবের চোটের কারণে কিছুটা দুর্ভাগা ছিলাম, কিন্তু পেসাররা, এমনকি নবী নতুন বলে ভালো বোলিং করেছে। তাতে আমাদের স্পিনারদের কাজটা সহজ হয়েছে।’
রশিদ আরও বলেছেন, ‘আমরা এই টুর্নামেন্ট উপভোগ করেছি। টুর্নামেন্টের আগে যদি কেউ আমাদের বলত, তোমরা সেমিফাইনাল খেলবে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শীর্ষ কোনো দলের বিপক্ষে হেরে যাবে। আমরা তা ভালোভাবেই গ্রহণ করতাম। এটা মাত্র শুরু, যেকোনো দলকে হারানোর বিশ্বাস আমাদের আছে। আমাদের শুধু প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে হবে। এটা আমাদের জন্য দারুণ শেখার অভিজ্ঞতা ছিল। এই টুর্নামেন্ট থেকে আমরা বিশ্বাস পেয়েছি। আমরা জানি, আমাদের সামর্থ্য আছে। এখন শুধু কঠিন পরিস্থিতি, চাপের মুহূর্তগুলো সামলাতে হবে।’