এখনকার তাসকিন আহমেদকে চাইলেই ‘তাসকিন ২.০’ বলতে পারেন আপনি। ফিটনেস, পারফরম্যান্স মিলিয়ে জাতীয় দলে যেন নতুন জন্ম হয়েছে তাঁর, পেস আক্রমণের নেতাও হয়ে উঠেছেন। তবে চোট তাসকিনের মতো ফাস্ট বোলারের পিছু ছাড়েনি।
সর্বশেষ ভারত সিরিজেও প্রথম দুটি ওয়ানডের পর খেলেননি প্রথম টেস্টে। গতবারের বিপিএলে সিলেট সানরাইজার্সের আইকন খেলোয়াড় ছিলেন, তবে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই ছিটকে যান চোটে পড়ে।
এবার তাসকিন খেলবেন ঢাকা ডমিনেটরসের হয়ে। লম্বা চোট থেকে ফিরে এসে পুরো টুর্নামেন্ট খেলতে পারবেন কি না, সে প্রশ্ন আছেই। তবে চোট নিয়ে ভাবলেই ‘মানসিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েন’ বলে এ নিয়ে চিন্তাই করতে চান না এই পেসার।
বারবার চোটে পড়া নিয়ে তাসকিন বারবারই বলেন প্রক্রিয়ার কথা। এ চোট কতটা হতাশাজনক বা এর কোনো শেষ আছে কি না, আজ এমন প্রশ্নের জবাবে তাসকিন বলেন, ‘কিছু করার নাই, আমি তো ইচ্ছা করে চোটে পড়ি না ভাই। হয়ে যায়। মনে হয় না এটার কোনো শেষ আছে ভাই। যেহেতু আমার গড়ন প্রকৃতিগতভাবে এমন না, দক্ষিণ আফ্রিকান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো প্রকৃতিগতভাবে (অমন গড়ন) হলে আরেকটু ভালো অবস্থানে থাকতাম। অনেক খেলাও আছে। এটা নিয়ে চিন্তা করলে আসলে মানসিক দিক দিয়ে পিছিয়ে যাই, ফলে চিন্তাই করতে চাই না। আমি প্রক্রিয়ায় থাকতে চাই। হলে আবার চেষ্টা করব (ফিরে আসার)।’
আপাতত চোটকে সঙ্গী করেই এগোতে হবে, এমনও মনে করেন তাসকিন, ‘এখন ভালো আছি। শেষ সিরিজে দুটি ম্যাচ, একটি টেস্ট খেলার পর ভালো লাগছে। চোট হলে ছন্দপতন হয়। তবে ফাস্ট বোলার হিসেবে ইনজুরি থাকবেই। মেনে নিয়েই খেলতে হবে।’
চোট কাটিয়ে উঠলেও এবার নিজের সেরাটি দেওয়ার আশাই করছেন তাসকিন। এবার ঢাকা ড্রাফটের আগে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে তাঁকে। এমন চুক্তি চাপটা একটু হলেও বাড়িয়ে দেয়, তা মানতে আপত্তি নেই তাসকিনের, ‘যখন খেলতে নামি, তখন তো চাপ কাজ করেই। (বিপিএলে) শেষ দুই বছর আইকন হিসেবে আসছি, ভালো একটা গ্রেডে এসেছি আপনাদের দোয়ায়। এটা একটা বাড়তি চাপ। তবে এসব সামলে খেলার চেষ্টা করব। চেষ্টা করার কিছু নেই। সামলে নিয়েই খেলতে হবে।’
২০১৩ সালে বিপিএলেই টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল তাসকিনের। সেবার চিটাগং কিংসের হয়ে ফাইনালে খেলেছিলেন। তবে এর পর থেকে আর কোনো মৌসুমে ফাইনালই খেলা হয়নি তাঁর। এবার না হলেও পরেরবার হবে, তাসকিন আশা করছেন এমন।
কাগজে-কলমে ঢাকাকে এবার টুর্নামেন্টের ফেবারিট বলা যাবে না মোটেও। তাসকিন অবশ্য দলকে নিয়ে আস্থা রাখতে চান, ‘কাগজে–কলমে অনেকের চেয়ে ছোট দল। তবে আমাদের ঘরোয়ার কিছু প্লেয়ার আছে, যারা ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখে।’
টুর্নামেন্ট শুরুর দুই দিন আগেও অধিনায়ক ঠিক করেনি ঢাকা। সে দায়িত্ব পেতে পারেন তাসকিন নিজেও। তবে শুধু ঢাকা নয়, তাসকিনের আশা, এবার বিপিএলে কিছু পেসারও উঠে আসবেন, ‘কয়েকজনকে দেখলাম, বিসিএল এনসিলে দারুণ পারফর্ম করেছে। ভারত সিরিজে (অ্যালান) ডোনাল্ড (জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ) কয়েকজনকে নিয়ে কাজও করেছে। যদি গত বছরের চেয়ে ৫ শতাংশ হলেও উন্নতি করতে পারি, এটাই চ্যালেঞ্জ। প্রথম দু-এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সহজ হয় পেসারদের জন্য। এখন আমাদের ফাস্ট বোলিং ইউনিট মোটামুটি অভিজ্ঞ, এখন চ্যালেঞ্জ পরের পর্যায়ে যাওয়া। সে জন্য একটু মেহনত বাড়াতে হবে।’