অবশেষে তাঁকে নিয়ে করা মিচেল জনসনের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে জনসনের সমালোচনা যতটা কড়া হয়েছিল, ওয়ার্নার জবাব দিতে গিয়ে সেটির ধারেকাছেও যাননি। একরকম হেসেই উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এমন সমালোচনা সহ্য করে নেওয়া অনেক আগেই শিখেছেন তিনি। এদিকে টেস্টকে বিদায় বলতে চলা বাঁহাতি এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে যেকোনো মূল্যে বাইরের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
সিডনিতে আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে এ সংস্করণকে বিদায় বলার আশার কথা আগেই জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সফল উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার। ১৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া পার্থ টেস্টের দলেও রাখা হয়েছে তাঁকে। তবে অস্ট্রেলিয়ার দল ঘোষণার পরই পত্রিকায় লেখা এক কলামে ওয়ার্নারের দলে থাকা এবং এভাবে অবসর নেওয়ার অধিকার আছে কি না—এমন প্রশ্ন তোলেন তাঁর সাবেক সতীর্থ জনসন। বল টেম্পারিং–কাণ্ডে ওয়ার্নারের জড়িত থাকার ব্যাপারটিও সামনে আনেন তিনি।
জনসনের সমালোচনার জবাবে এই প্রথম মুখ খুললেন ওয়ার্নার। ফক্স ক্রিকেটের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘এ রকম শিরোনাম না হলে কি আর গ্রীষ্ম হয় নাকি! ব্যাপারটি যা, তা-ই। সবারই নিজস্ব মতামত আছে। সামনে এগোতে গেলে, আমরা পশ্চিমে ভালো একটা টেস্টের জন্য মুখিয়ে আছি।’
সর্বশেষ বিশ্বকাপটা বেশ ভালো কাটলেও টেস্টে সাম্প্রতিক সময়টা মোটেও সুবিধার যায়নি ওয়ার্নারের। সর্বশেষ ২৫ ম্যাচে একটিমাত্র শতক তাঁর। ২০২২ সালের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শততম ম্যাচে দ্বিশতক করেছিলেন তিনি। তবে সেই ইনিংসসহও ২০২২ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তাঁর টেস্টে ব্যাটিং গড় মাত্র ২৬.৭৪, তার আগে যেটি ছিল ৪৮.৪০। এরপরও নির্বাচকেরা তাঁর ওপরই আস্থা রেখেছেন। অবশ্য সিডনি টেস্টের পর তাঁর জায়গায় কে আসবেন, সেটিও স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচকদের ঠিক করতে হবে এখন।
মা–বাবা এটি আমার মধ্যে শক্ত করে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা আমাকে প্রতিদিন লড়াই ও কঠোর পরিশ্রম করতে শিখিয়েছেন।ডেভিড ওয়ার্নার
অবশ্য তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া এই বিতর্কের মধ্যেও ভালোভাবে ক্যারিয়ার শেষ করার আশা ওয়ার্নারের। এমন সমালোচনা সহ্য করা শিখেছেন অনেক আগেই, সেটিও জানিয়েছেন তিনি, ‘মা–বাবা এটি আমার মধ্যে শক্ত করে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা আমাকে প্রতিদিন লড়াই ও কঠোর পরিশ্রম করতে শিখিয়েছেন। আপনি যখন বিশ্বমঞ্চে যান এবং বুঝতে পারেন না যে এর সঙ্গে আরও কী থাকে—অনেক সংবাদমাধ্যম, অনেক সমালোচনা কিন্তু অনেক ইতিবাচক দিকও।’
সেই ইতিবাচক দিকই দেখতে চাইলেন ওয়ার্নার, ‘আমার মনে হয়, বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনারা আজ এখানে যা দেখছেন, অনেক মানুষ ক্রিকেটের সমর্থনে এসেছেন।’
ওয়ার্নারের পাশে আছেন, নিজেদের এমন মনোভাবের কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক কামিন্সও, ‘আমরা একে অন্যের পাশে অনেক দাঁড়াই। অনেক বছর ধরে আমরা অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে গেছি। আমাদের ছেলেরা, আমি ডেভি (ওয়ার্নার) বা স্টিভির (স্মিথ) সঙ্গে ১২ বছর ধরে খেলছি। আমরা একে অন্যের ব্যাপারে ভয়ংকর সংবেদনশীল।’
নিজেদের গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগে ওয়ার্নারকে ঘিরে তৈরি হওয়া এমন বিতর্ক স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি হয়ে আসার কথা অস্ট্রেলিয়া দলের। তবে কামিন্স বলছেন, দেশের বাইরে দারুণ সময় কাটিয়ে আসা দলটি এসব পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে। তিনিও ইতিবাচক ব্যাপারগুলোর দিকেই মনযোগ দিতে বলছেন, ‘তর্ক সাপেক্ষে আমাদের সবচেয়ে সফল একটা বছর গেছে। আমরা রোমাঞ্চকর একটা গ্রীষ্মে ঢুকতে যাচ্ছি। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে অনেক ইতিবাচক দিক আছে। যেগুলো নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত, সেগুলোতে নজর দিচ্ছি।’