দুজনের জন্মই নিউজিল্যান্ডে। তাদের খেলার ধরনটাও এক। বলা হচ্ছে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস ও কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কথা। স্টোকস ১২ বছর বয়সেই নিউজিল্যান্ড ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ইংল্যান্ডে।
আর ম্যাককালাম তো নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের কিংবদন্তি, বাঁকবদলের নায়ক। ম্যাককালাম ও স্টোকস—এই দুই কিউইর হাতে যখন ইংল্যান্ড টেস্ট দলের দায়িত্ব উঠেছে, তখন থেকেই পাল্টে গেছে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের চেহারা।
ম্যাককালাম-স্টোকস জুটির সামনের পরীক্ষা তাঁদের জন্মভূমি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এই সিরিজের আগে ম্যাককালাম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সিরিজ জিততে চাওয়ার মতো সেই ‘ক্লিশে’ কথা বলেননি। বরং যা বলেছেন তাতে স্পষ্ট কিউইদের মাটিতে তাদের বিপক্ষে শুধু সিরিজ জয় নয়, পুরো সিরিজেই ছড়ি ঘোরাতে চায় তারা।
কোচ ম্যাককালাম ও অধিনায়ক স্টোকস জুটি বাঁধার পর খেলা ১০ টেস্টের ৯টিতেই জিতেছে তারা। পরিসংখ্যানের বাইরেও যে বিষয়টা নজরে এসেছে, তা এই ইংল্যান্ডের খেলার ধরন। আক্রমণই শেষ কথা, এই কৌশলে খেলে ১০ টেস্টে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা রান করেছেন ওভারপ্রতি ৪.৭৭ রেটে।
এই টেস্ট দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্টোকস। তাই তো সাক্ষাৎকারে স্টোকসকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ম্যাককালাম। স্টোকসের নেতৃত্বে খেলা দলটাকে নিয়ে প্রত্যাশার যে কোনো সীমা রাখছেন না, সেটাই যেন বললেন ইংল্যান্ড টেস্ট দলের কোচ। স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যে অধিনায়ক আছে, আমি ঠিক নিশ্চিত না, এই দলটা কত দূর যেতে পারে! কারণ, স্টোকস নিজের গল্প নিজেই লেখে, অসাধারণ সবকিছু অর্জন করে। আমি জানি দলের জন্য উচ্চাভিলাষী কোনো ভাবনাই সে ভেবেছে।’
পরিসংখ্যানে যে ম্যাককালাম-স্টোকস জুটি সফল, সেটা ভালো করেই জানেন ম্যাককালাম। তবে এই টেস্ট কোচ আবারও দাবি করেছেন ফলাফল কী হলো, সেদিকে তাঁর নজর নেই, ‘হ্যাঁ, আমরা দারুণ শুরু করেছি। ফলাফলও আমাদের পক্ষে আসছে। যদিও ফলাফল নিয়ে আমি ভাবি না। জানি, আমাদের ফলাফল দিয়েও বিচার করা হয়, কিন্তু ফলাফলের দিকে আমি ও আমার অধিনায়ক মনোযোগ দিই না। আমরা শুধু চাই দলের ক্রিকেটাররা এমন কৌশলে ক্রিকেটটা খেলুক, যাতে তারা তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সর্বোচ্চ সুযোগটা পায়।’
আক্রমণই শেষ কথা—এই কৌশলেই ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করবে ইংল্যান্ড, সেই বার্তাটাও ম্যাককালাম দিয়ে রেখেছেন, ‘যারাই জিতুক না কেন, খেলাটা সবাইকে আনন্দ দেবে। মানুষ সবাই তার দেশকে ভালোবাসে, নিজের দলকে জয়ী হিসেবে দেখতে চায়। কিন্তু আমরা টেস্ট ক্রিকেটটাকেই আরও আনন্দদায়ক করতে চাই, দর্শক খেলা দেখে দারুণ এক অভিজ্ঞতা নিয়ে যেন ফিরতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে চাই।’
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ১৬ ফেব্রুয়ারি, মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে।