টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইটে খেলছে বাংলাদেশ। আপাতদৃষ্টে একে উন্নতি বা সাফল্য বলাই যায়। কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলে এটুকু সাফল্য যথেষ্ট কি না, কেউ চাইলে সে প্রশ্ন তুলতেই পারেন।
বাংলাদেশের পাওয়া তিন জয়ের দুটিই যে আবার নেদারল্যান্ডস ও নেপালের মতো পিছিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে।
সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে লড়াইটুকুও করতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের কাছে গতকাল ৫০ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি অবশ্য নিজেদের পারফরম্যান্স ‘খারাপ নয়’ বলেই মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ৫০ শতাংশ সাফল্য পেয়ে মোটামুটি একটা অবস্থানে আছেন তাঁরা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপে নিজেদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে গিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘যদি ফলের দিক থেকে বলেন, তবে আমি বলব আমরা মোটামুটি একটা অবস্থানে আছি। আমরা ৩টা জিতেছি, ৩টা হেরেছি। ৫০ শতাংশ (সাফল্য)। সেদিক থেকে খুব একটা খারাপ নয়। তবে আমরা যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে লড়াই করেছি, এই দুইটা (সুপার এইট) ম্যাচের একটাতে যদি সেভাবে লড়াই করতে পারতাম, তখন বিশ্বকাপটা আমাদের জন্য সফল একটা টুর্নামেন্ট হতো। সে জায়গায় আক্ষেপ আছে।’
বিশ্বকাপজুড়ে হতাশ করেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যাটসম্যানদের এমন পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশ সাকিবও, ‘ব্যাটিংটা আসলেই হতাশাজনক। এটার একটা বড় কারণ হতে পারে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসের অভাব। বিশেষ করে এই মাঠে যে দুইটা ম্যাচ খেলেছি, সেখানে ১৭৫–১৮৫ হচ্ছে মোটামুটি স্কোর। সেটার নিচে হলে আসলে কঠিন। সে জায়গা থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আগের দিন ১৪০ করার পর আজকে ১৪৮ করছি। কিন্তু আগের দিনের পর আজকে আমাদের আরও ভালো অবস্থায় থাকা উচিত ছিল। কারণ, আমরা জানতাম, কোন টার্গেটে ব্যাটিং করছি। আমার মনে হয় আমরা প্রথম থেকেই ওই অবস্থাতে যাইনি, যেখানে আমরা মানুষকে বোঝাতে পারব যে চেষ্টা করছি। এই জায়গাটা আমার কাছে দুঃখজনক।’
বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার বিপরীতে আলো ছড়িয়েছেন বোলাররা। তবে উইকেটের সহায়তা না পেলে বোলাররা কতটা ভালো করতেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন সাকিব, ‘বোলিংয়ের ব্যাপারটা হচ্ছে, আমরা যখন উইকেটের একটু সুবিধা পাই, তখন আমাদের দল অনেক ভালো বোলিং করে। ফ্ল্যাট উইকেটে আমাদের এখনো অনেক উন্নতির জায়গা আছে। যেহেতু এবারের উইকেটগুলো বোলারদের জন্য একটু মানানসই ছিল, আমরা অসাধারণ বল করেছি। বোলারদের অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে। যেভাবে তারা বল করেছে, সেটা কেড়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।’
ব্যাটসম্যানরা কেন পারেন না, সে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যখন ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হয়, ১৮০–২০০ রানের উইকেটে খেলা হয়, তখন আমরা পিছিয়ে যাই। আমরা ১৩০, ১৪০ বা ১৫০ রানের খেলাটা ভালো জানি। এ ধরনের খেলা খেলেই আমরা অভ্যস্ত। এটা আমাদের কাছে অনেক পরিচিত।’