লিগ পর্বে দাপটের সঙ্গে খেলে শীর্ষে থেকে আইপিএলের কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছিল গুজরাট টাইটানস। কিন্তু প্রথম কোয়ালিফায়ারের আইপিএলের ‘ফাইনাল স্পেশালিস্ট’ চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। ব্যাটে-বলে দারুণ দাপট দেখিয়ে দশম বারের মতোই আইপিএল ফাইনাল নিশ্চিত করেছে চেন্নাই। ফাইনালের টিকিট পাওয়ার ম্যাচে ঘরের মাঠে চেন্নাই জিতেছে ১৫ রানে।
এই হারের পরও অবশ্য বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাটের ফাইনাল খেলার সুযোগ আছে। সে জন্য দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে তাদের হারাতে হবে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মধ্যে এলিমিনিটর ম্যাচের জয়ী দলকে।
আইপিএলের ফাইনালের সঙ্গে চেন্নাই সুপার কিংসের সম্পর্ক বরাবরই মধুর। আগের ১৫ আসরের মধ্যে ১৩টিতে অংশ নিয়ে ৯ বারই ফাইনাল খেলেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ফাইনাল খেলায় চেন্নাইয়ের কাছাকাছি আছে কেবল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া মুম্বাই ফাইনাল খেলেছে ৬ বার। যদিও মুম্বাই অংশ নিয়েছে আগের ১৫ আসরের সবগুলোতেই।
চিপকের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ঋতুরাজ গায়কোয়াড় (৬০) ও ডেভন কনওয়ের (৪০) জুটিতে ১৭২ রানের স্কোর গড়ে চেন্নাই। জবাবে গুজরাট অলআউট হয় ১৫৭ রানে।
১৭৩ রানের জবাবে শুরুটা ভালো হয়নি গুজরাটের। দিপক চাহারের বলে দলকে ২২ রানে রেখে ফেরেন ঋদ্ধিমান সাহা (১২)। চাপ কাটানোর আগে ফিরে যান অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াও (৮)। তাঁকে ফেরান মহেশ থিকশানা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে গুজরাটের রান ছিল ২ উইকেটে ৪৫। দাসুন শানাকাকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়া চেষ্টা করেন গিল।
দলীয় ৭২ রানে ফিরে যান শানাকাও (১৭)। এরপর ৮৮ রানে পরপর ২ উইকেট হারিয়ে বড় ধাক্কা খায় গুজরাট। তিন বলের মধ্যে ফিরে যান ডেভিড মিলার (৪) ও গিল (৪২)। ১৫তম ওভারে রাহুল তেওয়াতিয়াকে বোল্ড করে চেন্নাইয়ের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করে তোলেন থিকশানা। ১৫ ওভার শেষে ১০২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে গুজরাট তখন রীতিমতো হার দেখছিল।
বিপদের মুখে তুষার দেশপান্ডেকে নিয়ে গুজরাটকে আশা দেখাতে শুরু করেন রশিদ খান। দুজন মিলে ১৭তম ওভারে তোলেন ১৯ রান। তবে পরের তিন ওভারে সেই গতি ধরে রাখতে পারেনি তারা। রশিদ খানের করা ১৬ বলে ৩০ রান হারের ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত গুজরাট হেরে যায় ১৫ রানে।
এর আগে ব্যাট হাতে কিছুটা ধীরেসুস্থে শুরু করে চেন্নাই। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তারা সংগ্রহ করে ৪৯ রান। ৯ম ওভারে নিজের ফিফটি পূরণ করেন গায়কোয়াড়। ৩৯ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছান এই ওপেনার। ১০ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের রান ছিল ৮৫। ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে গায়কোয়াড়কে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মোহিত শর্মা। ৪৪ বলে ৬০ করেন গায়কোয়াড়।
প্রথম উইকেট হারানোর রেশ কাটার আগেই চেন্নাইকে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন নুর আহেমদ। পরের ওভারেই শিভম দুবেকে (১) ফিরিয়ে দেন আফগান স্পিনার। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে চেন্নাই। এ সময় রানের গতিও মন্থর হয়ে আসে। ৯.৩ ওভার থেকে ১৪.২ ওভার পর্যন্ত ২৯ বলে কোনো বাউন্ডারির দেখা পায়নি ধোনির দল।
এরপর রান বাড়ানোর চেষ্টা করে দ্রুত আরও ২ উইকেট হারায় চেন্নাই। ১৭ রান করা আজিঙ্কা রাহানে ফেরেন দর্শন নালকান্দের বলে শুবমন গিলকে ক্যাচ দিয়ে। পরের ওভারে ৩৪ বলে ৪০ রান করা ডেভন কনওয়েকে ফেরান মোহাম্মদ শামি। ১৬ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৩১ রান। এরপর তাদের রান তোলার গতি আবার কমে আসে। ১৮তম ওভার শেষে ৫ উইকেট চেন্নাইয়ের রান ছিল ১৪৫। শেষ ওভারে রবীন্দ্র জাদেজা (২২) ও মঈন আলী (৯) ১৫ রান যোগ করলে চেন্নাই পায় ৭ উইকেটে ১৭২ রানের সংগ্রহ। শামি ও মোহিত নেন ২টি করে উইকেট।