চিরচেনা উদ্যাপনেই সব জবাব দিলেন। ম্যাচের আগেই বলেছেন, লোকের কথা কান দেন না। যাঁরা লোকের কথায় কান দেন না, তাঁরা কী করেন? নিজের কাজটা ভালোভাবে করেন। ডেভিড ওয়ার্নারও সেটাই করলেন।
পার্থে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে করলেন ক্যারিয়ারের ২৬তম শতক। সমালোচকদের আরও একবার বোঝালেন, ওয়ার্নার এখনো ফুরিয়ে যাননি। ওয়ার্নার টেস্টে প্রায় এক বছর পর শতক পেলেন। গত বছর ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দ্বিশতক করেছিলেন। এরপর ১৬ ইনিংসে তাঁর কোনো শতক ছিল না। এই ১৬ ইনিংসে তাঁর অর্ধশতক মাত্র ২টি।
ওয়ার্নার এদিন মাঠে নামেন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে। বিশ্বকাপটা দুর্দান্ত কাটলেও ২০১৯-২০ মৌসুমের পর থেকে টেস্টে ওয়ার্নারের গড় মাত্র ২৮। ২০২০ সালের পর টেস্টে শতক মাত্র একটি। সঙ্গে সাবেক সতীর্থ মিচেল জনসনের অমন সমালোচনা। এমন চাপের মধ্যে ওয়ার্নার পাকিস্তানি পেসারদের ওপর রীতিমতো কর্তৃত্ব দেখিয়ে শতক করেছেন।
ইনিংসের ২২তম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে নিচু হয়ে শরীর ব্যবহার করে লং লেগের ওপর দিয়ে মারা ছক্কা যার প্রমাণ। ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফের বিপক্ষেও এই শট খেলেছিলেন ওয়ার্নার।
আজ ওয়ার্নার পাকিস্তানি পেসারদের সিম-সুইং সামলেছেন ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে। পেসারদের বাধ্য করেছেন খাটো লেংথে বল করতে। সে সুযোগই ব্যাট হাতে কাজে লাগিয়েছেন। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা।
ওয়ার্নার এদিন শুরু থেকেই যথারীতি আগ্রাসী ছিলেন। ২৪ বলে ৩০ রান করা ওয়ার্নার অর্ধশতক করেন ৪১ বলে। ২০১৭ সালে সিডনিতে এই পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ২৩ বলে অর্ধশতক করেছিলেন ওয়ার্নার। সেটি ছিল টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতক।
অবশ্য টেস্টে ওয়ার্নার একটু আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই করেন। একটা পরিসংখ্যান দিলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। ১৯৯৩ সালের পর থেকে ওপেনারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট ওয়ার্নারের। তাঁর স্ট্রাইকরেট ৭০.৫৬। সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইকরেট ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগের। তিনি ব্যাট করেছেন ৮৩.১০ স্ট্রাইকরেটে।
টেস্টে ওয়ার্নারের চেয়ে বেশি শতক আছে আর ৭ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারের। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ শতক রিকি পন্টিংয়ের—৪১টি। এখনো খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর মধ্যে সর্বোচ্চ স্টিভেন স্মিথের—৩২টি। ওপেনারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শতক এই বাঁহাতির। তাঁর চেয়ে বেশি শতক আছে ম্যাথু হেইডেনের (৩০)। সব মিলিয়ে ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতক সুনীল গাভাস্কারের (৩৪)।
তিন সংস্করণ মিলিয়ে ওয়ার্নারের শতক এখন ৪৯টি। এখনো খেলে যাচ্ছেন, এমন ক্রিকেটার মধ্যে তিন সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি শতক বিরাট কোহলির ৮০টি। ওয়ার্নার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেট ১৯২ রান।