আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুটা কী দুর্দান্তই না ছিল হ্যারি ব্রুকের। ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান জ্বলজ্বল করে জ্বলছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে। ২০২২ সালে তো ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছেন। সেই ব্রুক এবার ভারতে ওয়ানডেতে বিশ্বকাপে শুধু হতাশাই উপহার দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের দুর্দশার বিশ্বকাপে ২৮.১৬ গড়ে ১৬৯ রান করেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের দেড় বছর হতে না হতেই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে ফেললেও ব্রুক ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) পরিকল্পনায় ভালোভাবেই আছেন। বিশ্বকাপ চলার সময়েই তিন বছরের জন্য ইসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে এতেও পুরোপুরি নির্ভার হতে পারেননি ব্রুক। নির্ভার হয়ে ক্রিকেট খেলতে ২৪ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। নিজের মুঠোফোন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব অ্যাপসও মুছে ফেলেছেন তিনি।
ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে থাকা ব্রুক নিজেই জানিয়েছেন এই খবর, ‘বেশ কিছুদিন হলো আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেই। ফোন থেকে সব ডিলিট করে দিয়েছি। আমি মনে করি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকলে আমার মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে। দেখতেই তো পেলাম, এগুলো কত নেতিবাচক জিনিস বয়ে আনে।’
মাত্র তিনটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়েই ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে ঢুকে গিয়েছিলেন ব্রুক। জেসন রয়ের মতো পরীক্ষিত ওপেনারকে বাদ দিয়েই ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রুককে।
সেই ভারতে গত বছর আইপিএল খেলতে গিয়েই প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেনস্তার শিকার হন ব্রুক। তাঁকে ১৩ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএলে অভিষেকের পর প্রথম তিন ইনিংসে মাত্র ২৯ রান করেন ব্রুক। তবে চতুর্থ ইনিংসেই ৫৫ বলে সেঞ্চুরি পেয়ে যান। ওই সেঞ্চুরির পর এক সাক্ষাৎকারে ব্রুক সমালোচকদের এক হাত নেন, ‘ভালো লাগছে আমি তাঁদের চুপ করিয়ে দিতে পেরেছি।’
ভারতে অবশ্য খেলা শেষেই হোটেল রুমে ঢুকে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। সেখানে ইনস্টাগ্রাম কিংবা টুইটার ঘুরে বেড়ানো ছাড়া কিছু করারও থাকে না। আর তখনই অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছু চোখের সামনে চলে আসে।হ্যারি ব্রুক
সমালোচকেরা অবশ্য চুপ করেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেনস্তার শিকার হতে থাকেন ব্রুক। টুর্নামেন্টের পরের অংশও যে ভালো যায়নি তাঁর।
সেই ঘটনার উল্লেখ করে ব্রুক বলেন, সাক্ষাৎকারে একটু রূঢ় ছিলেন তিনি, ‘ওই সাক্ষাৎকারে নির্বোধের মতো কথা বলেছিলাম। একটু-আধটু অনুশোচনাও আছে সেই কারণে। ভারতে অবশ্য খেলা শেষেই হোটেল রুমে ঢুকে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। সেখানে ইনস্টাগ্রাম কিংবা টুইটার ঘুরে বেড়ানো ছাড়া কিছু করারও থাকে না। আর তখনই অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছু চোখের সামনে চলে আসে।’
নিজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার থেকে সরে এলেও ব্রুকের অ্যাকাউন্টগুলো সচলই থাকবে। তাঁর হয়ে সেগুলো পরিচালনা করবেন অন্য কেউ।