ঢাকাকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রংপুর
ঢাকাকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রংপুর

সাকিবের ‘ফেরার’ ম্যাচে ঢাকাকে পাত্তা দিল না রংপুর

শক্তিতে এগিয়ে। ফর্মেও। দুর্দান্ত ঢাকার তুলনায় রংপুর রাইডার্সের বর্তমান অবস্থাটা এভাবে ব্যাখ্যা করাই যায়। এমন ম্যাচ থেকে যা অর্জনের ছিল তার সবই পেয়েছে রংপুর। ৬০ রানের বড় জয়ে নিশ্চিত হয়েছে রংপুরের ২ পয়েন্ট, বেড়েছে রানরেটও।

আগে ব্যাট করা রংপুর বাবর আজমের ৪৭ ও রনি তালুকদারের ৩৯ রানের সৌজন্যে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান করে, জবাবে ২ ওভার বাকি থাকতে ১১৫ রানেই অলআউট ঢাকা। রান তাড়ায় ঢাকার হয়ে লড়াই করেছেন শুধু মোহাম্মদ নাঈম শেখ, তাঁর ৩১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস হয়ে থেকেছে ঢাকার ইনিংসের সর্বোচ্চ। সহজ জয়ের সঙ্গে রংপুরের বাড়তি পাওয়া রনি ও সাকিব আল হাসানের ফর্মে ফেরা। ছন্দের খোঁজে থাকা এই দুই ব্যাটসম্যানই আজ রান পেয়েছেন। সাকিব পরে ৩ উইকেটও নেন।

ঢাকার ব্যাটিং মানেই এখন নাঈম। এবারের বিপিএলে ৬ ইনিংস খেলা নাঈম এখন পর্যন্ত দলটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (১৫৬)। আজও রংপুরের রানের পেছনে একাই ছুটছিলেন এই বাঁহাতি। অন্য প্রান্ত থেকে যখন একের পর উইকেট পড়ছিল, তখন চার-ছক্কায় একাই লড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে ৩টি বিশাল ছক্কা ও ৩টি চারে ৩১ বলে ৪৪ রান করেই থামেন।

বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা সাব্বির রহমান (১), পাকিস্তানের সাইম আইয়ুবরা (২) টিকতে পারেননি। অ্যালেক্স রস (২), গুলবদিন নাইবও (১৩) রান পাননি। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা তো ব্যর্থই, লোয়ার অর্ডারেরও কেউ দাঁড়াতে পারেননি। নাঈমের পর ইরফান শুক্কুরের ১৫ বলে ২১ রান ছিল ঢাকার ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রংপুরের হয়ে ব্যাট হাতে রানে ফেরার পর বল হাতেও ছন্দে ফিরলেন সাকিব, ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে শেষ দুটি উইকেট আসে পরপর ২ বলে।

৩ উইকেট নেন সাকিব

এর আগে রংপুরের ব্যাটিংয়ের চিত্রটা উল্টোই ছিল। বাবর তাদের হয়ে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভার খেলে দেবেন, এটা একরকম নিশ্চিতই হয়ে উঠেছে। স্ট্রাইক রেট যেমনই হোক, তিনি এক প্রান্ত ধরে রাখবেন। বাকিরা অন্য প্রান্ত থেকে মেরে খেলার চেষ্টা করবেন। আর শেষে দ্রুত রান তোলার জন্য আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবী তো আছেনই। আজও রংপুরের সেই ছকে বাঁধা পারফরম্যান্স দেখা গেল।

বাবর আজ টিকে ছিলেন ইনিংসের ১৫তম ওভার পর্যন্ত। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে রংপুর ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৩ বলে ৪৭ রান। ৫টি চার ছিল তাঁর ১০৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে। আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার ফর্মে ফেরার আভাস দিয়েছেন ২৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে। তাঁর রানে ফেরা রংপুরের জন্য যেমন সুখবর, তেমনি বাংলাদেশ দলের জন্যও। জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের এই ওপেনারের সর্বশেষ চার ম্যাচে রান ছিল ৫, ৬, ১৫ ও ১১।

আজ ব্যাট হাতে ৩৪ রান করেছেন সাকিব

রনির মতো সুখবর দিয়েছেন সাকিবও। চোখের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করা এই বাঁহাতি আজ তিনে নেমেছেন। দুবার জীবন পেয়ে রান করেছেন ২০ বলে ৩৪, ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৭০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি ছিল এবারের বিপিএলে সাকিবের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। একটা পর্যায়ে তিনি ১৫ বলে ১৫ রানে খেলছিলেন, সেখান থেকে বাঁহাতি স্পিনার চতুরঙ্গ ডি সিলভার বলে দুই ছক্কায় রান বাড়িয়ে নেন সাকিব।

অবাক করার বিষয় হচ্ছে, পুরো ইনিংসে সাকিবকে একবারও পেস বোলিং সামলাতে হয়নি। চোখের সমস্যায় ভোগা সাকিবকে পেসার দিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ ছিল ঢাকার। অধিনায়ক মোসাদ্দেক কোনো এক অদ্ভুত কারণে তা করেননি। শেষ পর্যন্ত সাকিব আউট হয়েছেন মোসাদ্দেকের বলে ছক্কা মারতে গিয়েই। ওমরজাইও (৭ বলে ৩ রান) আজ ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে নবী ও নুরুল হাসানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২২ বলে ওঠে ৪৪ রান। নুরুল ১০ বলে করেন ১৬ রান, ১৬ বলে ২৯ রান নবীর। ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন মোসাদ্দেক।