মাঠের চারপাশে নান্দনিক সব শট খেলবেন, পরিণত মস্তিষ্কে ইনিংসগুলো বড় করবেন, দলকে পৌঁছে দেবেন জয়ের বন্দরে—ব্যাপারগুলো যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন শুবমান গিল।
এ বছর ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা গিলকে ভারতের ভবিষ্যৎ তারকা মনে করছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ৪৫ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিন সংস্করণেই আছে সেঞ্চুরি। সাত সেঞ্চুরির ছয়টিই করেছেন গত ৫ মাসে।
এবারের আইপিএলও অসাধারণ কাটছে গিলের। তবে একটা আক্ষেপ রয়েই গিয়েছিল; সেঞ্চুরি না পাওয়া। গত রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে গুজরাট টাইটানসের অনায়াস জয়ে সেটাও ঘুচিয়েছেন গিল। আইপিএলে ব্যাট হাতে প্রথমবার তিন অঙ্কের স্বাদ পেয়ে আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দুইয়ে উঠে এসেছেন ২৩ বছর বয়সী ওপেনার। গুজরাটও সবার আগে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে।
স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই কাল আউট হন গিলের উদ্বোধনী সঙ্গী ঋদ্ধিমান সাহা। তবে সাই সুদর্শনকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৭ রানের জুটি গড়েন গিল। পরে পূরণ করেন সেঞ্চুরি। শেষ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে আবদুল সামাদের হাতে ধরা পড়ার আগে উপহার দেন ৫৮ বলে ১০১ রানের ইনিংস। গিল কাল চার মেরেছেন ১৩টি, ছক্কা একটি। ইনিংসের ১২তম ওভারে অভিষেক শর্মাকে ছক্কা মারার মুহূর্তটিই তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দদায়ক ছিল বলে জানিয়েছেন গিল। ছক্কাটা যে বোলারকে বলে–কয়ে মেরেছেন!
ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে গিল বলেছেন, ‘ইনিংসের সবচেয়ে আনন্দদায়ক ব্যাপার ছিল, অভিষেক শর্মার বলে ছক্কা মারা। ওকে বলেছিলাম, তুমি আমাকে বল করলেই ছক্কা মারব।’
অভিষেককে আগাম হুমকিটা আসলে মজা করেই দিয়েছিলেন গিল। আইপিএলে ভিন্ন দলে খেললেও দুজনের বন্ধুত্ব বেশ পুরোনো। ২০১৮ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জিতেছেন তাঁরা। রাজ্য দল পাঞ্জাবে তাঁরা দুজন সতীর্থ।
অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জয়ের বছরেই আইপিএলে অভিষেক হয় গিলের। তখন খেলতেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল ইডেন গার্ডেনসে হায়দরাবাদের বিপক্ষেই তিনি আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ খেলেন। ৫ বছর পর সেই দলের বিপক্ষেই পেলেন আইপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি। পুরস্কার নেওয়ার সময় সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন গিল, ‘সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে আমার আইপিএল অভিষেক হয়েছিল, আজ (কাল) সে দলের বিপক্ষেই প্রথম সেঞ্চুরি পেলাম। এটা জীবনের একটা বৃত্ত পূরণ করল। আশা করি সামনে আরও সেঞ্চুরি আসবে।’