ফরচুন বরিশাল জয় পেয়েছে ২৬ রানে
ফরচুন বরিশাল জয় পেয়েছে ২৬ রানে

ইফতিখার-ঝড়ের পর বোলারদের সৌজন্যে সাকিবের বরিশালের জয়

চট্টগ্রামে রান হবে-বিপিএলের অলিখিত রীতিই যেন এটি। এ মৌসুমে ঢাকা-পর্বে সন্ধ্যার ম্যাচেও অবশ্য দেখা মিলেছে রানের। তবে চট্টগ্রাম-পর্বের প্রথম ম্যাচেই দেখা মিলল বড় স্কোরের। ইফতিখার আহমেদের ২৬ বলে ৫৭ রানের ঝড়ে ৭ উইকেটে ২০২ রান তোলা ফরচুন বরিশাল শেষ পর্যন্ত পেয়েছে ২৬ রানের জয়।

রান তাড়ায় শুরুটা ঝোড়ো হলেও রানের গতি ধরে রাখতে পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শেষ দিকে জিয়াউর রহমান খেলেছেন ২৫ বলে ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস, তবে যথেষ্ট হয়নি সেটি। তৃতীয় ম্যাচে এসে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল বরিশাল, আর তিন ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি দ্বিতীয় হার।

টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল চট্টগ্রাম, তবে বরিশাল শুরুটা করে ঝোড়ো। মৌসুম শুরুর আগেই মেহেদী হাসান মিরাজ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বরিশালের হয়ে ওপেন করতে পারেন তিনি। ঢাকা-পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে মিডল অর্ডারে খেললেও চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচেই শুরুতে এসে শুরু করেন প্রথম ওভারে আবু জায়েদকে টানা তিন চার মেরে। তৃতীয় ওভারে তাইজুল ইসলামকে ছক্কার পর আবার তুলে মারতে গিয়ে অবশ্য ক্যাচ দেন ১২ বলে ২৪ রান করে, পরের ওভারে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে টানা দুই চার মারার পর বোল্ড হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।

২৫ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেন ইফতিখার

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারালেও রানের গতি ধরে রাখে বরিশাল, এনামুল হক ও ইব্রাহিম জাদরানের সৌজন্যে। বিজয়কান্ত বিয়াসকান্তের বলে থামতে হয় এনামুলকে, ২১ বলে ৩০ রান করার পর। তাঁর সঙ্গে ২৫ রানের পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটিতে ৩১ বলে ৪৫ রান যোগ করেন জাদরান, যে জুটিতে অবশ্য চুপচাপই ছিলেন ইফতিখার। ১৭ বলে ২৫ রান করা মাহমুদউল্লাহর পর ফেরেন ৩৩ বলে ৪৮ রান করা জাদরান।

প্রথম ১৩ বলে ১০ রান করা ইফতিখার ঝড়টা শুরু করেন ১৮তম ওভারে, একটি ছয় ও চারের সঙ্গে দুটি ডাবলসে মৃত্যুঞ্জয়ের ওই ওভারে আসে ১৭ রান। তবে পরের ওভারে প্রথম দুই বলে করিম জানাত ও চতুরঙ্গ ডি সিলভাকে ফিরিয়ে বরিশালকে ভালোভাবেই চেপে ধরেন আবু জায়েদ। সে চাপ আলগা হয়ে যায় শেষ তিন বলে মারা ইফতিখারের তিন ছক্কায়-ডিপ এক্সট্রা কাভার, ডিপ মিড উইকেটের পর ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে।

শেষ ওভারে প্রথম ২ বলে আসে ১ রান, শেষ ৪ বলের মধ্যে ইফতিখার মারেন দুটি চার ও একটি ছক্কা। দ্বিতীয় চারটি দিয়ে মাত্র ২৫ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেন, শেষ বলের ছক্কায় ২০০ পেরোয় বরিশাল। মৌসুমে দ্বিতীয় দল হিসেবে ২০০ পেরোল তারা, মিরপুরে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে প্রথম এটি করেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালোই হয় চট্টগ্রামের, প্রথম ৪.২ ওভারে ওঠে ৪৬ রান। পঞ্চম ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু দেন কামরুল ইসলাম, তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সামনে এসে খেলতে গিয়ে সরাসরি কাভারে ক্যাচ তোলেন ১৯ বলে ৩৬ রান করা উসমান খান। উসমান ফেরার পর থেকেই কমে আসে চট্টগ্রামের গতি, শিগগির বাড়েনি সেটি।

জিয়াউর রহমান ২৫ বলে ৪৭ রান করেও দলকে জেতাতে পারিনি

পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান তোলা বরিশাল পরের ১০ ওভারে তোলে মাত্র ৬৪ রান। ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ও তিনে আসা উন্মুক্ত চাঁদ খেলেন ৫০ বল, তবে দুজন মিলে ৪৫ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। তিন ওভারের মধ্যে ফেরেন দুজন-সাকিবের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন ও’ডাউড, জানাতের বলে বোল্ড হন উন্মুক্ত।

শেষ ৩৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১০৭ রান। আফিফের সঙ্গে ৩০ বলে ৪২ রানের পর অধিনায়ক শুভাগত হোমের সঙ্গে মাত্র ১৭ বলে ৪৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন জিয়াউর। তবে বরিশাল নাগালের বাইরেই থেকে গেছে চট্টগ্রামের। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সাতজন বোলারকে ব্যবহার করেছেন সাকিব, কাজেও এসেছে সে সব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ২০২/৭ (ইফতিখার ৫৭*, করিম জানাত ৪৮, এনামুল ৩০, মাহমুদউল্লাহ ২৫; আবু জায়েদ ৩/৪৯, বিয়াসকান্ত ১/২৯, জিয়াউর ১/৩৩)

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৭৬/৪ (জিয়াউর ৪৭*, উসমান ৩৬, ও’ডাউড ২৯, আফিফ ২৮; কামরুল ১/৮, সাকিব ১/২৭, খালেদ ১/৩২)

ফল: বরিশাল ২৬ রানে জয়ী