কী সপ্তাহটাই না পার করছেন স্পেনসার জনসন! রোববার কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির ফাইনাল খেললেন। সোমবার ডাক পেলেন অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলে। এক দিন বাদে বুধবার দ্য হানড্রেডে নিজের অভিষেক ম্যাচে ২০ বলের ১৯টিই করলেন ডট, নিলেন ৩ উইকেট।
যেটা হানড্রেডের সবচেয়ে ইকোনমিক্যাল স্পেল। যাঁদের বিপক্ষে জনসন বল করেছেন, সেই ব্যাটসম্যানদের নাম শুনলে এই স্পেলের মাহাত্ম্য বাড়বে আরও। জনসন ২০ বলের ১০টিই করেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার ও ফিল সল্টকে।
পাকিস্তানি পেসার ইহসানউল্লাহর বদলি হিসেবে ওভাল ইনভিন্সিবল তাঁকে তড়িঘড়ি করে দলে নিয়েছে। ২৭ বছর বয়সী জনসন সোমবারের আগে কখনো ইংল্যান্ডেই পা রাখেননি। সোমবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার তাঁর দল ওভাল ইনভিন্সিবলের সঙ্গে ইনডোরে অনুশীলন করেন এই পেসার। এই এক ইনডোর অনুশীলন শেষেই মাঠে নামতে হয়েছিল এই পেসারকে। অথচ মাঠে কী দাপটই দেখালেন জনসন।
স্বীকৃতি টি–টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে ২০ বা তার বেশি বল করে জনসনের চেয়ে কম রান দিয়েছেন তিনজন—অক্ষয় কার্নেওয়ার (২৪ বলে ০ রান, ২ উইকেট, বিদর্ভ–মনিপুর, ২০২১); সাদ বিন জাফর (২৪ বলে ০ রান, ২ উইকেট, কানাডা–পানামা, ২০২১) ও মোহাম্মদ ইরফান (২৪ বলে ১ রান, ২ উইকেট, ট্রাইডেন্টস–প্যাট্রিয়টস, ২০১৮)।
বাটলার ও সল্টের বিপক্ষে প্রথম ৫ বলে কোনো রানই খরচ করেননি এই পেসার। এর পরের ৫ বলে বাটলার একটি সিঙ্গেল নেন। জনসন এরপর টানা ১০ বলের একটি ওভারও করেন, সেখানে রান তো দেনইনি, তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
এমন এক অবিশ্বাস্য স্পেলের পর জনসনের হতবাক হওয়াই তো স্বাভাবিক, ‘ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বুঝছি না কী হচ্ছে! নিজেকে চিমটি কাটছি। চোটের কারণে কঠিন সময় পার করেছি। কিন্তু এখন ক্রিকেটটা উপভোগ করছি, এখানে থাকতে পেরে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’
ওভালের অধিনায়ক স্যাম বিলিংসও এমন স্পেলের প্রশংসায় ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না, ‘এই মুহূর্তের সেরা দুই ক্রিকেটার জস বাটলার ও ফিল সল্টের বিপক্ষে এমন একটা পারফরম্যান্স! কতটা ভালো বোলিং পারফরম্যান্স এটা তা বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’ জনসনের এমন স্পেলের ম্যাচে ৯৪ রানে জিতেছে তাঁর দল।
অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পাওয়া জনসন ঘরোয়া ক্রিকেটেও খুব একটা অভিজ্ঞ নন। এই বাঁহাতি পেসার প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৪টি (২০ উইকেট), লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে খেলেছেন মাত্র ৬ ম্যাচ, নিয়েছেন ৬ উইকেট।
আর টি-টোয়েন্টিতেও খুব একটা অভিজ্ঞ নন, খেলেছেন মাত্র ১১ ম্যাচ (১২ উইকেট)। তবে এই জনসনেই মিচেল স্টার্কের বিকল্প দেখছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। নিজের প্রথম মৌসুমেই বিগ ব্যাশে ব্রিসবেন হিটের হয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স ছিল জনসনের, বিশেষ করে ডেথ ওভারে। এরপর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শেফিল্ড শিল্ডে আর অস্ট্রেলিয়ার ‘এ’ দলের হয়েও নিউজিল্যান্ডে ভালো করেন এই পেসার।
চোটের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করা এই পেসার তিন সংস্করণের ভাবনাতেই আছেন কয়েক দিন আগেই নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়া দলের প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি, ‘স্পেনসার (জনসন) তিন সংস্করণের রাডারেই আছে। ওর বলে গতি আছে, সুইং করানোর সামর্থ্য আছে প্রথমত আমরা তাকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখতে চাচ্ছি। সম্ভবত যেটাই ও সবচেয়ে বেশি খেলেছে। আমরা ওকে ওয়ানডে ও চার দিনের ক্রিকেটে কিছুটা দেখেছি। আমরা ওকে সময় দিতে আগ্রহী।’