আইপিএলের সর্বশেষ মিডিয়াস্বত্ব রেকর্ড মূল্যে বিক্রি করেছিল বিসিসিআই। এবার জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও তেমনই আশা করছে তারা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৩-২৭ সালের এই চক্রে মিডিয়াস্বত্ব থেকে প্রত্যাশা না-ও মিটতে পারে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের।
চার বছরের এ সময়ে দেশের মাটিতে ২০টি টেস্টের সঙ্গে ২১টি ওয়ানডে ও ৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা আছে ভারতের। এ ম্যাচগুলোর স্বত্ব প্রায় ১২ হাজার কোটি রুপিতে নাকি বিক্রি করতে চাইছে বিসিসিআই। অবশ্য সর্বশেষ আইপিএলের মডেল অনুযায়ী টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আলাদা স্বত্ব বিক্রি করবে তারা।
ইনসাইডস্পোর্ট নামে ভারতভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট বলছে, পরের চার বছরের চক্রে প্রত্যাশা পূরণ না–ও হতে পারে বিসিসিআইয়ের। এর পেছনে আছে জাতীয় দলের সম্ভাব্য পালাবদলের সঙ্গে ওয়ানডে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা হারানোও।
বিসিসিআই কেন প্রত্যাশা অনুযায়ী টাকা পাবে না, সেটি ব্যাখ্যা করে এ–সংশ্লিষ্ট এক বিশেষজ্ঞ ইনসাইডস্পোর্টকে বলেন, ‘দেখুন, ওয়ানডে আর দর্শক টানছে না। হ্যাঁ, বিশ্বকাপে অনেক উন্মাদনা থাকবে, ভারতে হচ্ছে বলে দর্শকও থাকবে। তবে সব মিলিয়ে এটি বড়সংখ্যক দর্শক টানতে পারছে না। পরের চার বছরে দেশের মাটিতে ২১টির বেশি ওয়ানডে, বিসিসিআইয়ের তাই ১০ হাজার কোটির বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা কম।’
সূত্র বলে, ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার দলগুলোকে ঘিরেই যা আকর্ষণ দর্শকদের। পরের চার বছরে এ দলগুলো দুবার করে ভারত সফর করবে। এ ছাড়া এই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার কথা আছে ভারতের।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে ৫ বছরের জন্য ৬১৩৮ কোটি রুপিতে টেলিভিশনের সম্প্রচারস্বত্ব বিক্রি করেছিল বিসিসিআই। এবার টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এর দ্বিগুণ প্রত্যাশা করলেও সেটি পূরণ না হওয়ার পেছনে নাকি অবদান রাখবে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাদের সম্ভাব্য অনুপস্থিতিও।
দেশের মাটিতে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ বা এরপর ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে বড় সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ৩৫ বছর বয়সী রোহিত ও কয় দিন পর ৩৫ পূর্ণ করতে চলা কোহলি। এ দুই তারকার অনুপস্থিতিতেও আকর্ষণ কমে আসতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এক ব্রডকাস্টার বলেছেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে, বিসিসিআই যে সংখ্যাই ঠিক করুক না কেন, এটি চার থেকে পাঁচ বছর সময়ে। ফলে, বিশ্বকাপের পরবর্তী সময়টাও বিবেচনায় আনতে হবে। বিরাট, রোহিতরা তিন সংস্করণই চালিয়ে যাবে কি না, সেটি তর্কসাপেক্ষ। এ দুই তারকাকে ছাড়া স্বাভাবিকভাবেই দর্শক কমে আসবে। যদি ধরেও নেওয়া হয়, ২০২৪ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তারা খেলবে, এরপরও পালাবদল আসবে। ফলে, ১২ হাজার কোটির প্রত্যাশা একটু বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে।’
অবশ্য বিসিসিআইয়ের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে স্বত্ব পেতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বিশেষ করে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে মোটা অঙ্ক পেতে পারে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। সর্বশেষ আইপিএলের নিলামই তাদের আশা জুগিয়েছে, বলেছিলেন বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা, ‘আইপিএলে আমরা দারুণ সাড়া পেয়েছি, সামনেও তা–ই হবে। সংখ্যা বলছে, টিভির চেয়ে বেশি দর্শক ঝুঁকছে ডিজিটালে। ফলে, দুটি আলাদা করায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। এবার আমরা ১২ হাজার কোটির বেশি আশা করছি।’