বিপিএল এলেই ‘ফিক্সিং’, ‘বেটিং’ শব্দগুলো হাওয়ায় ভাসতে থাকে। ওঠানামা করতে থাকে সন্দেহের পারদ। এবারও বিপিএলের নবম আসর শুরু হতে না হতেই সে চক্রকে সক্রিয় মনে হচ্ছে। জানা গেছে, মাশরাফি বিন মুর্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্সের এক পরিচালকের কাছে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সিলেটের পক্ষ থেকে বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) প্রতিনিধিকে জানানো হয়েছে। বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘আমরা শুনেছি, একটা দলকে এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আকসু বিষয়টি দেখছে।’
এদিকে বিপিএলের আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকেই নাকি জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে সেটা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে। ঘটনাটি ঘটে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিপিএলের দলগুলোর সরাসরি চুক্তির সময়।
ক্রিকেটার ও ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে ওই সময় দেনদরবার হয় মূলত পারিশ্রমিক নিয়ে। যেহেতু সরাসরি চুক্তি, ক্রিকেটাররা ইচ্ছেমতো পারিশ্রমিক চাইতে পারেন। ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে পারিশ্রমিকের বনিবনা হলেই সেই ক্রিকেটার এক বিপিএল মৌসুমের জন্য সেই নির্দিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে যান।
এবারের বিপিএল ড্রাফটের আগে সেই ক্রিকেটারের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি নিয়ে কথা–চালাচালি হচ্ছিল এক ফ্র্যাঞ্চাইজির। কিন্তু সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে চুক্তির সঙ্গে কিছু ‘শর্ত’ জুড়ে দেওয়া হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতিনিধি হয়ে দুজন সেই ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। তাঁদের একজন সেই ক্রিকেটারকে এবারের বিপিএলে ‘তিন-চার ম্যাচে ফেভার’ করার প্রস্তাব দেন। আরেকজন বলেছিলেন, ‘দু-তিন ম্যাচে কাজ করতে হবে।’
সেই ক্রিকেটার অবশ্য অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া দেননি। সে দলের সঙ্গে সরাসরি চুক্তিতেও যাননি। পরে ড্রাফট থেকে সেই ক্রিকেটারকে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে নিয়েছে। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবের বিষয়টি সেই ক্রিকেটার বিসিবিকে জানিয়েছেন। এখন যে দলের হয়ে তিনি খেলছেন, সে দলও বিষয়টি অবগত।
ফিক্সিং তো বটেই, বিপিএলে বেটিংয়ের নানা পথও খোলা আছে। বেটিংয়ের ক্ষেত্রে বিসিবির নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দেশে ও দেশের বাইরে বিপিএলের ম্যাচের সময় বেটিং–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে টিভি ও মুঠোফোনের পর্দায়। নিয়মের ফাঁক গলে তাই বিপিএলও ঠিকই আক্রান্ত হচ্ছে ফিক্সিং নামক ব্যাধিতে!