রেকর্ড, রেকর্ড এবং রেকর্ড!
সৌদ শাকিল মাঠে নামেনই যেন নতুন রেকর্ড গড়তে। কেউ এমনটা বললে, সেটাকে ভুল বলা যাবে না। তাঁর ১১ টেস্টের ক্যারিয়ারই এই কথার পক্ষে সাক্ষী দেয়। এখন পর্যন্ত খেলেছেন মাত্র ২০ ইনিংস। যেখানে ফিফটি আছে ৬টি, সেঞ্চুরি ৩টি। ৩ সেঞ্চুরির সর্বশেষটি আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে।
সেঞ্চুরির পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ২০ ইনিংসে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন। যে তালিকায় তাঁর পরে সাঈদ আহমেদ, জাভেদ মিয়াদাদদের নাম। গতকাল গড়েছিলেন ইনিংসের হিসেবে টেস্টে পাকিস্তানের হয়ে যৌথভাবে দ্রুততম ১০০০ রানের রেকর্ড। ছুঁয়ে ফেলেন ১৯৫৯ সালে করা সাঈদ আহমেদের রেকর্ড।
পাকিস্তানের প্রথম শাকিল এক জায়গায় বিশ্বেরই প্রথম। ক্যারিয়ারের প্রথম সাতটি টেস্টেই কমপক্ষে ফিফটি পাওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান শাকিল। গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিফটি করে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন প্রথম ছয় টেস্টে ফিফটি করা ভারতের সুনীল গাভাস্কার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসিল বুচার, পাকিস্তানের সাঈদ আহমেদ ও নিউজিল্যান্ডের বার্ট সাটক্লিফের যৌথ রেকর্ড।
সেই শ্রীলঙ্কা সিরিজেই পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন শাকিল। ছিলেন ২০৮ রানে অপরাজিত। অবশ্য শাকিলের সেঞ্চুরি করা মানেই অপরাজিত থাকা। ব্যতিক্রম ছিল অবশ্য আজ। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আউট হয়েছেন ১৪১ রান করে। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ সেঞ্চুরি করার আগে দুবার তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছেন, দুবারই ছিলেন অপরাজিত। ২০৮ রানের ইনিংসটার আগে গত বছর জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন।
অস্ট্রেলিয়া সফরটি বাদ দিলে ক্যারিয়ারে কখনো রানখরায় ভোগেননি এই বাঁহাতি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২৮ রানের। এই তিনটি টেস্ট বাদ দিলে বাকি সব টেস্টেই পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস আছে ২৮ বছর বয়সী শাকিলের। শাকিলের টেস্ট অভিষেক হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন শাকিল। একই দলের বিপক্ষে পরের টেস্টের দুই ইনিংসে করেন ৬৩ ও ৯৪ রান। আর করাচিতে তৃতীয় টেস্টে খেলেন ২৩ ও ৫৩ রানের ইনিংস।
ছন্দটা ধরে রাখেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের সিরিজেও। করাচিতে হওয়া দুই টেস্টের চার ইনিংসে করেন ২২, ৫৫*, ১২৫* ও ৩২ রান। শ্রীলঙ্কা সিরিজেও ছিল এমন ধারাবাহিকতা। ঘরের মাঠে এককথায় তিনি অপ্রতিরোধ্য। ঘরের মাঠে ৭টি ম্যাচ খেলেছেন শাকিল। প্রতি ম্যাচে কমপক্ষে একটি করে ফিফটির দেখা পেয়েছেন।
টেস্টে শাকিলের রান করার নিজস্ব একটা ধরন আছে। বলা যায় প্রথাগত উপায়েই রান করেন। একের পর এক ডট খেলে বোলারদের হতাশ করেন। বারবার প্রান্ত বদল করেন, সুযোগ পেলে মারেন বাউন্ডারি। বাংলাদেশের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৪১ রান, ৪ মেরেছেন মাত্র ৯টি, ছক্কা নেই। ১১ টেস্টের ক্যারিয়ারেই অবশ্য শাকিলের ছক্কা একটি। এভাবে খেলেন বলেই হয়তো তাঁকে নিয়ে আলোচনাটাও একটু কম!