অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলনে ট্রাভিস হেড
অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলনে ট্রাভিস হেড

হেডের প্রশ্ন, ‘আমরা কি শুধু লাঞ্চ করতে লর্ডসে যাব’

ওলি রবিনসন বলছেন, এজবাস্টনে ‘রক্ষণাত্মক’ অস্ট্রেলিয়াকে দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন তাঁরা। লর্ডসে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ফিরবে ইংল্যান্ড, সে ঘোষণাও দিয়েছেন। স্টুয়ার্ট ব্রড বলছেন, এজবাস্টনের চেয়ে লর্ডসে একটি কাজই ভিন্নভাবে করতে পারেন তাঁরা—আরও বেশি আক্রমণ। জেমস অ্যান্ডারসনের মতে, দ্বিতীয় টেস্টে আরও বেশি ইতিবাচক, আরও বেশি আক্রমণাত্মক হবে ইংল্যান্ড। জ্যাক ক্রলি তো বলেই দিয়েছেন, এই টেস্টটি ১৫০ রানের ব্যবধানে জিততে পারেন তাঁরা।

ইংলিশদের মুখে এত কিছু শুনে ট্রাভিস হেডের মনে হচ্ছে, তাহলে কি তাঁরা শুধু লাঞ্চ করতেই লর্ডসে যাচ্ছেন?

‘বাজবল’ ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলার নতুন ধরনের জবাব অস্ট্রেলিয়া কীভাবে দেয়, এবারের অ্যাশেজ শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ছিল সেটি। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড আক্রমণাত্মক হতে চাইলেও অস্ট্রেলিয়া সে সবের জবাব দিয়েছে চিরায়ত টেস্ট খেলেই। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে ২ উইকেটের দুর্দান্ত জয়ও পেয়েছে তারা।

এর পর থেকে ইংল্যান্ডের সমালোচনা শুরু হলেও বিভিন্ন সময় দলটির পক্ষ থেকে যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তাতে লর্ডসে খেলার ধরন বদলানোর কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং আরও বেশি আক্রমণাত্মক মানসিকতাই নাকি দেখা যাবে। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার এমন অ্যাপ্রোচ নিয়েও দু-একটি কথা শুনিয়ে দিয়েছে তারা।

রবিনসন যেমন তাঁর কলামে লিখেছিলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াকে এমন রক্ষণাত্মক খেলতে দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম আমরা। যেন আমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে অনীহা ছিল তাদের। অবশ্যই এ ম্যাচে (এজবাস্টন টেস্ট) সেটি তাদের কাজে দিয়েছে। তবে তারা যেভাবে খেলছে, আরেকটু মুভমেন্ট আছে এমন পিচ আমাদের দারুণ সহায়তা করবে। বাজ (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) ম্যাচে পর বলেছে, “ছেলেরা, মনে তো হচ্ছে আমরাই জিতেছি।” আমরা বিশ্বকে বিনোদন দিয়েছি, অজিদের ব্যাকফুটে ঠেলেছি।’

মাঠের বাইরে ইতিবাচক কথা বললেও আসলে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চিন্তিত, হেড মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও

ঠিক রবিনসনের কথারই জবাব হেড দিয়েছেন, তা নয়। তবে মজা করে নাইন নিউজ সিডনিকে অস্ট্রেলিয়ার এ ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘মনে তো হচ্ছে আমরা শুধু লাঞ্চ করতেই (লর্ডসে) যাব। হ্যাঁ, তাদের (ইংল্যান্ডের) এই মন্ত্রটা (আক্রমণের) আছে। তারা সেটিই মানছে।’

মাঠের বাইরে ইতিবাচক কথা বললেও আসলে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চিন্তিত, হেড মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তারা সুন্দর কিছু কথা বলছে। তবে এ দলটি আসলে চিন্তিত—আমরা দ্বিতীয় টেস্টে কী করলে ২-০-তে এগিয়ে যাব, তাদের চাপে ফেলব।’

অবশ্য অফ স্পিনার নাথান লায়নের মনে হচ্ছে, তাদের উন্নতি করতে হবে আরও। লন্ডনে একটি বেসবল ম্যাচে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আবহটা বদলে গেছে। আমাদের বেশ কিছু করতে হবে। আমাদের মনে হয়েছে আমরা আরও অনেক ভালো করতে পারি। আর ইংল্যান্ড যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে, তাতে আমাদের আরও অনেক ভালো করতে হবে।’

হেড নিজেও অবশ্য আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্যই আলোচিত। এজবাস্টনে প্রথম ইনিংসে ৬৩ বলে ৫০ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হন ১৬ রানে। ২৮ জুন থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্টে অবশ্য হেডের চেয়েও বেশি নজর স্টিভেন স্মিথ, মারনাস লাবুশেনদের দিকে। প্রথম টেস্টে নিস্প্রভ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের দুই শক্ত স্তম্ভই। দুজন মিলে করেছেন মাত্র ৩৫ রান।

এদিকে চাইলে লাবুশেনকে সহায়তা করতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন রিকি পন্টিং। অ্যাশেজে ধারাভাষ্য দিতে ইংল্যান্ডে থাকা সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক আইসিসি রিভিউ পডকাস্টে বলেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কথা বলতে চাই। কারণ, গত দুই সপ্তাহে যা দেখেছি, তাতে সে কিছু ব্যাপার বেশি জটিল করে ফেলছে বলে মনে হচ্ছে।’