ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড আইসিসির কাছে লভ্যাংশ ভাগাভাগিতে অসমতার প্রতিকার চেয়েছেন। বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ একসময় ‘দুধেল গাই’ ছিল, এখন খারাপ অবস্থা বলে কেউ সহায়তায় এগিয়ে আসার কথা বলছে না। এখন কিসের ভিত্তিতে ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে আইসিসির তহবিল থেকে বেশি অর্থ দেওয়া হয়, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
গ্রেনাডায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্স অব হেডস অব গভর্নমেন্ট অব দ্য ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির (ক্যারিকম) ৪৭তম বৈঠকে এ কথা বলেন দুবারের বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক।
৭৯ বছর বয়সী লয়েডকে ক্যারিকমের বৈঠকে ওই অঞ্চলের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ অর্ডার অব দ্য ক্যারিবিয়ান কমিউনিটি (ওসিসি) সম্মানে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থার সূত্র ধরে আইসিসির লভ্যাংশ ভাগাভাগির কথা তোলেন।
তিনি দাবি করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল যখন ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ছিল, তখন বোর্ডকে কোনো আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখন লভ্যাংশ ভাগাভাগি করে কোন দেশ থেকে বেশি আয় আসে, সেই মানদণ্ডে। এ বিষয়ে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে (সিডব্লুআই) ন্যায্য পাওনার জন্য তৎপর হওয়ার আহবান জানান লয়েড, ‘আমরা যখন কতৃত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিলাম, তখন বাড়তি কোনো অর্থ চাইনি। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, আইসিসির তহবিল থেকে ইংল্যান্ড ১৮ কোটি ডলার পাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া ১৮ কোটি ডলার পাচ্ছে, ভারত ১৮ কোটি ডলার পাচ্ছে। আমি জানতে চাই, এই অসমতা এল কোথা থেকে?’
১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে হওয়া টানা তিন বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একই সময়ে টেস্টেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছিল সবচেয়ে ধারাবাহিক ও সফল দল। সে সময়ের দিকে ইঙ্গিত করে ১০০ টেস্ট খেলা প্রথম ক্যারিবীয় ক্রিকেটার বলেন, ‘আমরা যখন সামনের দিকে ছিলাম, সবাই আমাদের সঙ্গে খেলতে চাইত। শীতকালেও দুটি সফর করতে হতো আমাদের। এদের (অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারত) কাছে আমরা ছিলাম দুধেল গাই। কিন্তু এখন হয়তো আমরা কিছুটা পেছনে পড়ে গেছি। কেউই বলে না, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন সহায়তা করা দরকার।’
লয়েড মনে করেন, নিজেদের প্রাপ্য আদায়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া দরকার, ‘আমাদের বোর্ড থেকে আইসিসির কাছে বিশেষ আহ্বান জানানোর সময় এসে গেছে। ওখানে ১০–১২ জন লোক পাঠান, যারা কাজটা করতে পারবে। বলতে পারবে, আমাদের বিশেষ বরাদ্দ দরকার।’
আইসিসি বর্তমান লভ্যাংশ ভাগাভাগির পদ্ধতি চালু করে ২০১৫ সালে, যেখানে কোন দেশ থেকে কেমন আয় আসে, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়। বর্তমানে আইসিসির আয়ের প্রায় ৩৯ শতাংশই পায় ভারত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ শতাংশের কাছাকাছি পায় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া পায় সোয়া ৬ শতাংশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেয়ে থাকে ৪.৫৮ শতাংশ।