শেষ ৫ ওভারে দরকার ৬৬ রান। কঠিন হলেও টি-টোয়েন্টিতে দুঃসাধ্য নয়। কিন্তু ম্যাচটা যদি হয় ফাইনাল, প্রতিপক্ষ যদি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হয় আর যখন জানবেন প্রথম ১৫ ওভারে উঠেছে মাত্র ৭৩ রান—তখন অসম্ভবই মনে হওয়ার কথা।
আজ গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) ফাইনালে এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন সেন্ট লুসিয়া কিংসের দুই ব্যাটসম্যান। অ্যারন জোন্স ও রোস্টন চেজের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৯ বলে ৬৬ রান তুলেছে সেন্ট লুসিয়া। তাতে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সিপিএল শিরোপা জিতেছে তারা।
নিজেদের মাঠে টসে হেরে ব্যাট আগে ব্যাট করা গায়ানা তুলেছিল ৮ উইকেটে ১৩৮। রান তাড়া করতে নেমে ১০ ওভার শেষে সেন্ট লুসিয়ার রান ছিল ৪ উইকেটে ৫১। ততক্ষণে ফিরে গেছেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি, জনসন চার্লস, আকিম অগাস্টে এবং টিম সাইফার্ট। দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর চেজ ও জোন্স ঢুকে পড়েছিলেন খোলসের মধ্যে। পঞ্চম ওভারের শেষ বল থেকে ১৫তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত টানা ৬১ বলে একটিও বাউন্ডারি আসেনি কারও ব্যাট থেকে।
১৫তম ওভার শেষে কোচ ড্যারেন স্যামির বার্তা নিয়ে মাঠে ঢোকেন সেন্ট লুসিয়ার এক খেলোয়াড়। ব্যাটসম্যানদের হাত খোলার বার্তাই যে দেওয়া হয়েছিল তখন, স্পষ্ট হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। গায়ানার মঈন আলী ১৬তম ওভার করতে এলে জোন্স প্রথম বলেই এগিয়ে এসে মারেন ১০০ মিটার দূরত্বের বড় ছক্কা। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল হলে স্ট্রাইকে যান চেজ। বার্বাডোজের এই ব্যাটসম্যান পরের চার বলে নেন যথাক্রমে ৬, ৪, ৬, ৪। মঈনের এক ওভারে ২৭ রান নিয়ে ৩০ বলে ৬৬ রানের সমীকরণকে ২৪ বলে ৩৯ রানে নামিয়ে আনেন দুই ব্যাটসম্যান।
এরপর আর থামেননি জোন্স-চেজ। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের করা ১৭তম ওভার থেকে ২ ছক্কা ও ১ চারসহ ২০ রান আর রোমারিও শেফার্ডের করা ১৮তম ওভার থেকে ১ ছয়, ১ চারসহ ১৮ রান তুলে স্কোরে সমতা নিয়ে আসেন। গায়ানা অধিনায়ক ইমরান তাহির ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলের সময় ওয়াইড দিলে ১১ বল হাতে রেখেই জিতে যায় সেন্ট লুসিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান জোন্স অপরাজিত থাকেন ৩১ বলে ৪৮ রান করে, চেজ মাঠ ছাড়েন ২২ বলে ৩৯ রান নিয়ে। শেষের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের আগে বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ফাইনাল হন রোস্টন চেজ। আর ১২ ইনিংসে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টসেরা হন সেন্ট লুসিয়ার আফগান স্পিনার নুর আহমেদ।