তখন বাংলাদেশ ব্যাট করছিল। সেন্ট ভিনসেন্টে বৃষ্টিভেজা রাতে ইনিংসের ১১.৪ ওভারে নামে আরেক দফা বৃষ্টি। তবে সেই সময় বৃষ্টির গতি যা ছিল, তাতে ম্যাচ চালিয়ে যেতেন আম্পায়াররা।
ঠিক সেই মুহূর্তে ডাগআউট থেকে দলকে খেলার গতি কমিয়ে দেওয়ার ইশারা দেন আফগানিস্তানের প্রধান কোচ জোনাথন ট্রট। কিছুক্ষণ পর ঝুম বৃষ্টি নামলে যেন আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করেন, আর খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে চলে যেতে পারেন। কারণ, ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ তখন ২ রানে পিছিয়ে ছিল। মানে, আর খেলা না হলে জিতত আফগানিস্তান।
স্লিপে দাঁড়ানো আফগান অলরাউন্ডার গুলবদিন নাইব ট্রটের ইশারা দেখেই বাঁ পায়ের ঊরু ধরে মাঠে লুটিয়ে পড়েন ও ব্যথায় কাতরাতে থাকেন। আসলে নাইবের এসব কিছু ছিল ‘সাজানো নাটক’।
তাঁকে হ্যামস্ট্রিং চোটের অভিনয় করতে দেখে আফগানিস্তানের সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য ছুটে আসেন। এরপর ওই সদস্য ও সতীর্থ নাভিন উল হকের সহায়তায় মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান।
বৃষ্টি থেমে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সেই নাইব পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবার মাঠে হাজির! শুধু মাঠে ফিরেই আসেননি, বল হাতে তানজিম হাসানকে আউটও করেছেন। আফগানিস্তান প্রথমবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নাম লেখানোর পর উদ্যাপনের সময় দৌড়ে একাধিক সতীর্থকে পেছনেও ফেলেছেন।
নাইবের চোটে পড়া ও নিমেষেই সেরে ওঠার ঘটনা ইয়ান স্মিথেরও অদ্ভুত লেগেছে। নিউজিল্যান্ডের সাবেক উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ও বর্তমানে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার স্মিথ রসিকতা করে বলেছেন, ‘ছয় মাস ধরে আমি হাঁটুর সমস্যায় ভুগছি। ম্যাচ শেষেই আমি গুলবদিন নাইবের চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে তিনি পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য।’
নাইবের চোটে পড়ার ‘নাটক’ যেহেতু টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, তাই তাঁর দ্রুত সেরে ওঠা নিয়ে আরও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন লিখেছেন, ‘গুলবদিন ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আঘাত পাওয়ার (চোটে পড়ার) ২৫ মিনিট পর উইকেটে পেয়েছে। বিষয়টি দেখে খুব ভালো লাগছে।’
যে যা–ই বলুন, নাইবের তাতে বয়েই গেছে। চোখের পলকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে নামার কৃতিত্ব নাইব তাঁর ফিজিওকেই দিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি ছবি পোস্ট করে ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার লিখেছেন, ‘বিস্ময়কর ঘটনা ঘটতেই পারে।’ এরপর প্রশান্ত পঞ্চদা নামের এক ব্যক্তিকে মেনশন করে লিখেছেন, ‘আমার ফিজিও।’
অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আফগানিস্তান দলের ফিজিও প্রশান্ত পঞ্চদার চিকিৎসা নিয়েই বিস্ময়করভাবে কয়েক মিনিটের মধ্যে চোট থেকে সেরে উঠেছেন।