সাকিব আল হাসান মানে একের ভেতর তিন। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—তিনভাবেই পারেন দলের জন্য অবদান রাখতে। বল হাতে হয়তো ভালো কিছু করলেন না, তবু আশা থাকে ব্যাটিংয়ে দারুণ কিছু করবেন। আবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলে আশা থাকে বোলার সাকিবের কাছে। আর ফিল্ডার হিসেবেও খুব কমই ভুল করেন তিনি মাঠে।
সাকিব না খেলা মানে একই সঙ্গে একজন বাঁহাতি স্পিনার ও একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের না খেলা। অন্যভাবে দেখলে সাকিব দলে থাকা মানে একজন বাড়তি বোলার ও ব্যাটসম্যান দলে থাকা। তাঁর মতো যেহেতু আর কেউ নেই, এক সাকিবের অভাব পূরণে নির্বাচক কমিটি ও বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে ভাবতে হয় সম্ভাব্য দুজন বিকল্প নিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মিরপুরে আজ বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও বললেন সাকিবের অভাব মেটানো কতটা কঠিন, ‘একজন অধিনায়কের জন্য অবশ্যই অনেক কঠিন। হয়তো আমরা বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার নিয়ে খেলতে পারতাম, ওই জিনিসটা থাকবে না। এই মুহূর্তে সাকিব ভাইয়ের মতো কোনো ক্রিকেটার মনে হয় না আমাদের আছে।’
ব্যাটিং প্রসঙ্গে আলাদা করে বলেছেন, ‘সাত নম্বরে যে ব্যাট করবে, তার ভূমিকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে।’ তারপরও বাস্তবতা তো মেনে নিতেই হবে। নাজমুলও তা মানছেন। তা ছাড়া এমন তো নয় যে বাংলাদেশ এর আগে কখনো সাকিবকে ছাড়া টেস্ট খেলেনি। পার্থক্য হলো এত দিন তাঁকে ছাড়া খেলতে হতো মাঝেমধ্যে, এখন খেলতে হবে নিয়মিত। কাজেই সাকিবের অনুপস্থিতির একটা স্থায়ী সমাধান তো লাগবেই।
সেটা এই সিরিজেই পাওয়া সম্ভব নয়, তবে মেহেদী হাসান মিরাজের মধ্যে সাকিবের অভাব পূরণের একটা সম্ভাবনা দেখছেন নাজমুল, ‘মিরাজ খুব ভালো অপশন হতে পারে টেস্ট ক্রিকেটে। খুবই ভালো করছে, ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই দারুণ করছে। আরও উন্নতির জায়গা অবশ্যই আছে এবং মিরাজ ওই দায়িত্বটা নিতে প্রস্তুত।’
মিরাজকে নিয়ে অধিনায়কের আশা তাই বড়, ‘সবশেষ কয়েকটি টেস্ট ম্যাচে যদি মিরাজের ব্যাটিং দেখেন, আগের চেয়ে অনেক ভালো করেছে এবং দলকে বেশির ভাগ দিনই ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। আশা করব যে কিছু বছরের মধ্যে মিরাজ ওই জায়গাটা (সাকিবের) ভালোভাবে নিতে পারবে।’
তবে এটাও ঠিক, বল হাতে অন্য বোলারদের কাজও অনেকটা সহজ করে দিতেন সাকিব। কখনো উইকেট নিয়ে, কখনো রানের গতি টেনে ধরে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখতেন তিনি। সেই চাপমুক্তির পথ তাঁরা খুঁজে নিতে চাইতেন অপর প্রান্তের বোলারের ওপর চড়াও হয়ে। আর তখনই আসত উইকেট।
এখন সাকিবের এই ভূমিকাটাও পাবে না বাংলাদেশ দল। তবে অধিনায়ক নাজমুল দলে যাঁরা আছেন, তাঁদের নিয়েই সামনে তাকাতে চান। আস্থা রাখতে চান তাঁদের ওপর, ‘যে ক্রিকেটাররা আছে, সবার সামর্থ্য আছে, যার যার ভূমিকা পালন করবে। আশা করব, যে কম্বিনেশন খেলবে, তারা সবাই যার যার জায়গা থেকে শতভাগ দেবে।’