কলম্বো টেস্ট ইনিংস ব্যবধানে জিতে সিরিজও জিতেছে বাবর আজমের দল
কলম্বো টেস্ট ইনিংস ব্যবধানে জিতে সিরিজও জিতেছে বাবর আজমের দল

২৯ বছর পর শ্রীলঙ্কাকে ধবলধোলাই করল পাকিস্তান

জিম লেকার, অনিল কুম্বলে, এজাজ প্যাটেল...। টেস্ট ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়াদের ছোট তালিকায় আজ নাম ওঠানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন নোমান আলী। কিন্তু ‘বাগড়া’ দিলেন নাসিম শাহ!

এক এক করে শ্রীলঙ্কার প্রথম ৭ উইকেটই তুলে নিয়েছিলেন পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনার নোমান। তবে শেষ বিকেলে দারুণ রিভার্স সুইং পাওয়া নাসিম সেটা হতে দেননি। ডানহাতি এ পেসার ৬ বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিলে দ্রুতই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। যে গুটিয়ে যাওয়া শুধু একটা ইনিংসের নয়, ম্যাচের এবং সিরিজেরও।

আজ কলম্বো টেস্টের চতুর্থ দিনে নোমান–নাসিমের বোলিং–ঝড়ে পড়ে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ১৮৮ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৬৬ রানে আটকে যাওয়ার কারণে সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার রান মাত্র ৩৫৪। আর পাকিস্তান এক ইনিংস ব্যাট করেই তুলেছিল ৫ উইকেটে ৫৭৬ রান। যার অর্থ, ইনিংস ও ২২২ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে বাবর আজমের দল।

সেই সঙ্গে গল টেস্টেও জয় থাকায় ২–০ ব্যবধানে সিরিজও জিতেছে পাকিস্তান। দুই দলের দুই বা তার বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এ নিয়ে দশমবার সিরিজ জিতল পাকিস্তান। আর শ্রীলঙ্কাকে ধবলধোলাই করে সিরিজ জিতল ২৯ বছর পর, সর্বশেষটি ছিল ১৯৯৪ সালে।

শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে একাই ৭ উইকেট নিয়েছেন নোমান আলী

কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে চতুর্থ দিনের সকালে পাকিস্তানের জয় নিয়ে সংশয় কমই ছিল। আগের দিনের সঙ্গে ৫৬৩ রানের সঙ্গে আর মাত্র ১৩ রান যোগ করেই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। একাই ১৩ রান তুলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।

শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংয়ে নামে ৪১০ রানে পিছিয়ে থেকে। দিমুথ করুনারত্নে আর নিশান মাদুশকার উদ্বোধনী জুটিতে অবশ্য প্রতিরোধ গড়ারই ইঙ্গিত ছিল, প্রথম ১৮ ওভার ব্যাট করে ৬৯ রান তুলে নেন দুজনে। তবে নোমান বোলিংয়ে আসতেই খেই হারাতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। প্রথম বলেই বোল্ড হন মাদুশকা। ৭২ বলে ৩৩ রান করেন তিনি।

৩৬ বছর বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার এরপর শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটসম্যানকে থিতু হতে দেননি। তার একেকটি স্পিন ভেলকিতে আউট হয়ে ফেরেন করুনারত্নে (৬১ বলে ৪১), দিনেশ চান্ডিমাল, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, সাদিরা সামারাবিক্রমা ও রমেশ মেন্ডিসরা। বিনা উইকেটে ৬৯ থেকে ১৭৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা—সব কটিই নোমানের।

নোমানের সপ্তম শিকার হওয়ার আগে রমেশের আউট নিয়ে বেশ নাটকীয়তা তৈরি হয়। ইনিংসের ৬২তম ওভারে নাসিমের দ্বিতীয় বল রমেশের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় পাকিস্তান, তবে লেগ স্টাম্প মিস করায় সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এর পর তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আবারও রমেশের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদন করেন নাসিম। দুইবারই আম্পায়ার আউট দেন। তবে রিভিউ চেয়ে টিকে যান রমেশ।

এক ওভারের মধ্যে তিনবার রিভিউতে আউটের সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়ার পর মাটিতেই বসে পড়েন নাসিম শাহ

তবে কিছুক্ষণ পরই নোমানকে এগিয়ে খেলতে গেলে স্টাম্পিং হন ৪২ বলে ১৬ রান করা রমেশ।

রমেশকে আউট করতে না পারলেও শ্রীলঙ্কার শেষ তিন ব্যাটসম্যানকে তুলে নেন নাসিম। যাতে আবারও দুই শর আগে থেমে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের সঙ্গে হারে সিরিজও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ১৬৬ ও ১৮৮ (ম্যাথুজ ৬৩*, করুনারত্নে ৪১, মাদুশকা ৩৩; নোমান ৭/৭০, নাসিম ৩/৪৪)।

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৫৭৬/৫ ডিক্লে. (শফিক ২০১, সালমান ১৩২*, শাকিল ৫৭; আসিতা ৩/১৩৩, জয়াসুরিয়া ২/১৯৪)।

ফল: পাকিস্তান ইনিংস ও ২২২ রানে জয়ী।

সিরিজ: পাকিস্তান ২–০ ব্যবধানে জয়ী।