ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ

দুই রকম ১০ উইকেটের এক ম্যাচ

বাংলাদেশের পেসাররা এর আগে কখনো এক ম্যাচে ১০ উইকেট নেননি। বাংলাদেশও এর আগে কখনো ওয়ানডে জেতেনি ১০ উইকেটে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ শেষ ওয়ানডেতে দুই ‘১০’ এর–ই দেখা পেয়ে গেল বাংলাদেশ

হাসান মাহমুদের প্রথম ৫ উইকেটের সুবাদে আজ আয়ারল্যান্ডের ১০ ব্যাটসম্যানকেই ফিরিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এরপর দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর লিটন দাস মিলেই ১০২ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশকে এনে দিলেন প্রথম ১০ উইকেটের জয়।

আইরিশদের ১০১ রানের জবাবে বাংলাদেশের জয়টা যে সহজই হবে, সেটি অনুমেয় ছিল। কিন্তু সিলেটের মেঘলা কন্ডিশনে বল সুইং করবে, নতুন কুকাবুরায় সিম মুভমেন্ট পাবেন বোলাররা। সব মিলিয়ে কন্ডিশন যে পেস বোলিংয়ের পক্ষেই থাকবে, প্রথম ইনিংস থেকে এটুক ধারণা পেয়েই গিয়েছিলেন তামিম ও লিটন।

তামিম–লিটনের জুটিতেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ

সে জন্যই হয়তো ক্রিজের অনেক বাইরে লিটনের স্টান্স নেওয়া। সুইং কাভার করে আক্রমণাত্মক ব্যাট করাই হয়তো তাঁর লক্ষ্য ছিল। আর তামিম ক্রিজে থেকে খেললেও ছোট্ট লক্ষ্যটা দ্রুতই তাড়া করার আগ্রাসী মানসিকতা ফুটে উঠছিল তাঁর শরীরী ভাষায়।

সেটার প্রতিফলন দেখা গেল স্কোরবোর্ডেও। মাত্র ১৩.১ ওভারে ১০ উইকেট হাতে রেখে আইরিশদের রান টপকে যায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো কোনো উইকেট না হারিয়ে জিতল বাংলাদেশ। চূড়ান্ত আধিপত্য দেখিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জয় এল ২-০ ব্যবধানে।

আইরিশদের ১০১ রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতেই করেছে ৮১ রান! ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ পাওয়ার প্লে স্কোর। অথচ এর আগে এই কন্ডিশনেই বাংলাদেশ দলের পেসারদের সামনে কাঁপতে দেখা গেছে আইরিশ ব্যাটসম্যানদের।

যে বলটা আজ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, সেই ফুল লেংথের বলেই তামিম ছিলেন শুরু থেকে আক্রমণাত্মক। আপার কাটে মারা নিজের প্রথম বাউন্ডারির পর বেশ কিছু ড্রাইভ খেলেছেন তিনি।

৪১ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম

পরে চড়াও হয়েছেন অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিসের ওপর। প্রথম ওভারেই হামফ্রিসকে ছক্কা মেরেছেন স্লগ সুইপে। পরে তামিমের সঙ্গে যোগ দেন লিটনও। কার্টিস ক্যাম্ফারকে অষ্টম ওভারে দুটি চার মেরেছেন। আরও দুটি মেরেছেন হামফ্রিসের করা নবম ওভারে। ওদিকে বাংলাদেশ দলের সদস্যরা ড্রেসিংরুমে অপেক্ষায় ছিলেন সিরিজ জয়ের।

সে অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি। ১৩.১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৩৮ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন। যার মধ্যে ৪০ রানই এসেছে বাউন্ডারিতে। তামিম অপরাজিত ছিলেন ৪১ বলে ৪১ রান করে।

সিরিজ জয়ের দিনে হাস্যোজ্জ্বল লিটন, তাওহিদ ও নাজমুল

আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের চিত্রটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। হাসান মাহমুদের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেটের দিনে ১০১ রানে থামে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। ২৮.১ ওভার ব্যাটিং করেছে তারা। শুধু হাসান নন, আজ সিলেটে স্বপ্নের দিন কাটিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসারই।

এর আগে এক ম্যাচে বাংলাদেশের পেসারদের নেওয়া সর্বোচ্চ উইকেট ছিল ৮টি। হাসানের ৫ উইকেটের সঙ্গে তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন ৩টি, ইবাদত হোসেন ২টি। বোলিংয়েই আসেননি সাকিব আল হাসান, দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে করেছেন ৪ ওভার।