ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ আর নেপালের সন্দীপ লামিচানে এখন এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর গত চার বছরে সবচেয়ে বেশি রান আর উইকেট এই দুজনের। কিন্তু কেউই খেলতে পারছেন না বিশ্বকাপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর নেপাল—দুই দলই বাদ পড়েছে বাছাইপর্ব থেকে।
গত চার বছরে প্রচুর রান করেছেন বা উইকেট নিয়েছেন, খেলছেন এবারের বিশ্বকাপেও—তালিকাটা এভাবে করলে সবচেয়ে ওপরের দুটি নাম বাবর আজম আর অ্যাডাম জাম্পার। পাকিস্তান অধিনায়ক ও অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার বিশ্বকাপ শুরু করতে যাচ্ছেন ২০১৯ বিশ্বকাপের পর সর্বোচ্চ রান ও উইকেটের সাফল্য নিয়ে। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এই কৃতিত্ব লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের।
২০১৯ বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ৫৫ ইনিংস ব্যাট করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোপ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভৃত্য অরবিন্দ। ৯ সেঞ্চুরি ও ১১ ফিফটিতে ৫২.৫৮ গড়ে ২৪১৯ রান করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হোপ। আর ৩২.৫৫ গড়ে ১৬৯৩ রান তুলেছেন অরবিন্দ, যা তাঁকে সব ব্যাটসম্যান মিলিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ৫ নম্বরে রেখেছে।
বিশ্বকাপে খেলছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১৯৬ রান বাবরের। ৩৫ ইনিংস ব্যাট করে ৬৬.৫৪ গড়ে এই রান তুলেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। গত চার বছরে সবচেয়ে বেশি ৯টি সেঞ্চুরির মালিকও বাবরই (যৌথভাবে হোপের সঙ্গে)। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর সর্বোচ্চ রান সংগ্রহে সেরা পাঁচে পরের চারটি নামই ভারতের। ২০২০ সালে ওয়ানডে খেলা শুরু করা শুবমান গিল এ সময় ৩৩ ইনিংসে ব্যাট করে তুলেছেন ১৯০১ রান, গড় ৭০.৪০। এর মধ্যে তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস ৬টি, ফিফটি ৯টি।
৪১ ইনিংসে ১৭৯৭ রান তুলে গিলের পরেই অবস্থান বিরাট কোহলির। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেঞ্চুরি-খরায় ছিলেন কোহলি। তবু সর্বশেষ চার বছর মিলিয়ে তাঁর ওয়ানডে সেঞ্চুরি ৬টি, ফিফটি ১২টি। গিল ও কোহলির পরের দুটি স্থান শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুলের।
বোলারদের মধ্যে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর সবচেয়ে বেশি ৪৪ ম্যাচে ৯৭ উইকেট নিয়েছেন নেপালের লামিচানে। উইকেটশিকারে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বোলারও আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের—ওমানের বিলাল খান, ৪৪ ম্যাচে ৯৫ উইকেট। ৪৭ ইনিংসে ৮০ উইকেট নিয়ে তৃতীয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলজারি জোসেফ।
বিশ্বকাপে থাকা বোলারদের মধ্যে সেরা অ্যাডাম জাম্পা, অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার গত চার বছরে ৩৭ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৭৭ উইকেট। তালিকার ৫ থেকে ১০ পর্যন্ত থাকা পরের ছয়জনও আবার বিশ্বকাপে নেই (যুক্তরাষ্ট্রের নেতরাভাকার, নেপালের করন কেসি, স্কটল্যান্ডের মার্ক ওয়াট, আরব আমিরাতের জহুর খান ও জুনায়েদ সিদ্দিকী এবং নামিবিয়ার রুবেন ট্রাম্পেলমান)।
১১ নম্বরে থাকা কুলদীপ যাদব আছেন ভারতীয় দলে, ৩৮ ম্যাচে তাঁর উইকেট সংখ্যা ৫৯। একই দলের শার্দুল ঠাকুর সমান ইনিংসে নিয়েছেন ৫৮ উইকেট। আর বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৫ ম্যাচে ৫৬ উইকেট নিয়ে আছেন দুই ভারতীয়র পেছনে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে গত চার বছরে মিরাজই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। দ্বিতীয় স্থানে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান ৩৯ ম্যাচে ৫৩ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ৩১ ম্যাচে ৪৮ উইকেট।
ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিটন দাস ৪৩ ইনিংসে ৩৯ গড়ে তুলেছেন ১৪৮২ রান, যার মধ্যে ৩টি সেঞ্চুরি ও ৯টি ফিফটি। লিটনের চেয়ে ৩ ইনিংস কম ব্যাট করে মাত্র ১ রান পেছনে আছেন মুশফিকুর রহিম, যিনি ২ সেঞ্চুরি ও ১১টি ফিফটি করেছেন, রান তুলেছেন ৪৩.৫৫ গড়ে।
অধিনায়ক সাকিব আছেন ৩৩ ইনিংসে ১০৬১ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে। ৩৬.৫৮ গড়ে রান তোলার পথে এই চার বছরে সেঞ্চুরি নেই সাকিবের, ফিফটি আছে ৮টি। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান অবশ্য বিশ্বকাপ দলে থাকা কারও নয়। ৪১ ইনিংসে ১৪৮৬ রান নিয়ে সবার ওপরের নামটা তামিম ইকবালের, যিনি ফিটনেসের কারণে বাদ পড়েছেন বিশ্বকাপের দল থেকে। ৪০.১৬ গড়ে রান তোলার পথে ৩টি সেঞ্চুরি ও ৯টি ফিফটি করেছেন তামিম।