কী এক কাণ্ডই না ঘটে গেল! ইনিংসের শেষ বল, ব্যাটসম্যান স্টাম্পিং আউট হয়ে হতাশা নিয়ে মাঠ ছেড়ে গেলেন। ফিল্ডিং দল জয়ের আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠল। নিয়ম মাফিক ‘নো’ বল পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গেল, আসলে আউটই হননি ব্যাটসম্যান। কারণ, বলটি ছিল ‘নো’!
ঘটনাটি ঘটেছে আজ বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে ম্যাচে। জয়ের জন্য শেষ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। মোসাদ্দেক হোসেন বলটি ঠিকঠাকই করেছেন। ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান ব্লেসিং মুজারাবানি এগিয়ে এসে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে বলই লাগাতে পারেননি। বাংলাদেশ দলের উইকেটকিপার নুরুল হাসান দ্রুতই তাঁকে স্টাম্পিং করে দেন।
বিপত্তিটা বেধেছে এখানেই। দ্রুত স্টাম্পিং করতে গিয়ে নুরুলের গ্লাভস আগেই ঢুকে গেছে পপিং ক্রিজের মধ্যে। এমন হলে নিয়ম অনুযায়ী ‘নো’ বলই হওয়ার কথা। তৃতীয় আম্পায়ার টিভি রিপ্লে দেখে এটিকে ‘নো’ দিয়েছেন। ততক্ষণে ব্যাটসম্যান ডাগআউটে ফিরে গিয়ে প্যাড–ট্যাড খুলে ফেলেছেন। বাংলাদেশ দলের উদ্যাপন চলছিল তখন। এমন সময়েই কিনা আম্পায়ার দুই দলকে মাঠে ডেকে পাঠান! খেলা শুরু হয় আবার।
তখন শেষ বলে ফ্রি হিট থেকে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ৪ রান। এবারও বল–ব্যাটে সংযোগ করতে পারেননি মুজারাবানি। ৩ রানে ম্যাচ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
নাজমুল হোসেনের ফিফটি আর তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজ ও মোসাদ্দেকের ভালো বোলিং ছাপিয়ে ম্যাচ শেষে আলোচনার কেন্দ্রে সেই নো বলের নাটক!
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর সঞ্চালক মাইক আথারটন যেমন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন, বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও ম্যাচসেরা তাসিকনের তিনজনকেই প্রশ্ন করেছেন, ‘এমন কাণ্ড আমি কখনো দেখিনি, তুমি কি দেখেছ?’
সাকিব এই প্রশ্নের উত্তরে হাসি দিয়ে বলেছেন, ‘এমন কিছু যেন না হয়, তা নিয়ে আমি ওকে আগেই সতর্ক করেছিলাম।’
সাকিব যে নুরুলকে সতর্ক করেছিলেন, এর কারণও আছে। এর আগের বলেই নুরুল স্টাম্পিং করে ফিরিয়েছেন এনগারাভাকে। সেই বলেও তাঁর গ্লাভস পপিং ক্রিজের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছিল। আম্পায়ার তখনো ‘নো’ বল পরীক্ষা করেছিলেন।
তবে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটা আর এরপরও বাংলাদেশের জয়—সব মিলিয়ে সাকিব অভিভূত! মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না!’
এভাবে আবার ফিরে আসার পর পুরো ঘটনা কীভাবে সামলেছেন সাকিব, ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক আথারটনের এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমি মোসাদ্দেকের সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বলেছে, “উদ্বেগের কিছু নেই। আমি ঠিক আছি এবং সবকিছু সামলে নেব।” তার কথায় আমি শান্ত হয়েছি, স্বস্তি পেয়েছি।’