জয়ের পর সাদমানদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন আফ্রিদিরা, রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ
জয়ের পর সাদমানদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন আফ্রিদিরা, রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশের কাছে হারের পর চরম সমালোচনার মুখে পাকিস্তান

রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের কাছে হারের পর থেকে সমালোচনার মুখে আছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। দল নির্বাচন থেকে পেসারদের পারফরম্যান্স—সবকিছু নিয়েই সমালোচনা করছেন সাবেক ক্রিকেটাররা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে পাকিস্তান নেমেছিল চারজন বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে। দলে পার্টটাইমার আগা সালমান ছাড়া ছিলেন না বিশেষজ্ঞ কোনো স্পিনার। তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্পিনারদের ৭ উইকেট নেওয়ার পর পাকিস্তানের এমন দল নির্বাচন পড়েছে আতশি কাচের নিচে।

সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি যেমন এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘১০ উইকেটে হারের পর এমন পিচ তৈরি, চারজন ফাস্ট বোলার খেলানো এবং বিশেষজ্ঞ স্পিনারকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। এটা আমার কাছে মনে হয় দেশের মাটির কন্ডিশন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব।’

আফ্রিদি অবশ্য বাংলাদেশের প্রশংসাও করেছেন, ‘এসব বললেও আপনি বাংলাদেশকে কৃতিত্ব না দিয়ে পারবেন না। তারা টেস্টের পুরোটা সময় যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলেছে।’

রমিজ রাজা বলছেন, পাকিস্তান পেসারদের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাবেক এ অধিনায়ক বলেছেন, ‘দল নির্বাচনে তো সমস্যা আছে, স্পিনার ছাড়াই খেলতে নেমেছেন। আর ফাস্ট বোলিংয়ের যে সুনাম ছিল, সেটি তো শেষ, যেটি শুরু হয়েছে এশিয়া কাপ থেকেই। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি চলছে। ভারতের বিপক্ষে যে ম্যাচ ছিল, পেস–সহায়ক কন্ডিশনে মার খেয়েছিল। দুনিয়া বুঝে গেছে, এদের ওপর চড়াও হলে এরা সুনাম অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারবে না। কারণ, এদের গতি কমে গেছে। তার ওপর স্কিল নেই ওই পর্যায়ের।’

বাংলাদেশের কাছে হারের পর সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তান

রমিজ বাংলাদেশের পেসারদেরও প্রশংসা করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পেসাররা বরং সুযোগ তৈরি করেছে বেশি। আমাদের পেসাররা পারফরম্যান্সের চেয়ে উইকেট পাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে, একটা নাটিকা তৈরিতেই বেশি মনোযোগী।’

স্পিনার না খেলানোর সিদ্ধান্ত বোধগম্য হচ্ছে না আরেক সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফেরও। ‘কট বিহাইন্ড’ নামে ইউটিউব শোতে তিনি বলেছেন, ‘পার্থ আর ব্রিসবেনেও তো চার পেসার খেলায় না। আপনার তো বিশেষজ্ঞ স্পিনার লাগবে। হ্যাঁ, স্পিনার ছিল, সে (আগা সালমান) ৪৩ ওভার বোলিং করে কোনো উইকেটই পায়নি। সে ভালো বোলার। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে তো সমর্থন লাগবে।’

রশিদ পার্থক্য দেখছেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যেও, ‘বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে ভালো খেলেছে। অধিনায়কত্ব ভালো ছিল, পরিকল্পনা ভালো ছিল। আর আমাদের অধিনায়ককে দেখুন। সে যদি রান না করে—ব্যাটিং থেকেই তো আসলে বেরোতে পারছে না, তাই না?’

সাবেক উইকেটকিপার কামরান আকমলের মতে, পাকিস্তানের খেলা ও শরীরী ভাষা মোটেও সুবিধার ছিল না। নিজের ইউটিউবে চ্যানেলে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জন্য কঠিন সময় ছিল, কিন্তু তাদের ব্যাটাররা রান করেছে। তাদের ম্যাচটা বাঁচাতে হতো, তারাই জিতে গেছে। তারা মূলত পাকিস্তান ক্রিকেটের মুখোশ খুলে দিয়েছে। আমার ক্রিকেটারদের দেখে মনে হচ্ছিল, তারা ক্লাব ক্রিকেট খেলছে। আসলে ক্লাব ক্রিকেটাররাও এভাবে খেলে না। তাদের অ্যাপ্রোচ বাজে ছিল। খেলোয়াড়েরা ড্রেসিংরুমে হাসছে। কারণ, তারা জানে, কেউই কিছু জিজ্ঞাসা করবে না। মনে হচ্ছে, খেলছে শুধু মজা করতেই।’

আকমল ধুয়ে দিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদিদের পেস আক্রমণকেও, ‘এটা যদি উমর গুল, শোয়েব আখতার, মোহাম্মদ আসিফদের আক্রমণ হতো, তাহলে বাংলাদেশকে দুবার ১৫০ রানে আউট করত। এদের তো ইন্টেনসিটিই নেই।’