রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর আবার সামনে এসেছে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের ধরন। অধিনায়ক বাবর আজম অবশ্য মানতে চান না, মাঝের ওভারগুলোয় ধীরগতির ব্যাটিং ভুগিয়েছে তাদের। যদিও প্রধান কোচ আজহার মেহমুদ ও সহ-অধিনায়ক শাদাব খান বলছেন ভিন্ন কথা।
ব্যাটিং–সহায়ক উইকেটে পাকিস্তান তোলে ১৭৮ রান। পাওয়ারপ্লেতে ৫৪ রান উঠলেও পরের ৭ ওভারে ওঠে মাত্র ৫১ রান। সে সময় ব্যাটিং করেছেন বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান, সম্মিলিতভাবে দুজন ৫০ বলে করেন ৫৯ রান। শেষ দিকে ছয়ে নামা শাদাব খানের ২০ বলে ৪১ রানের ঝোড়ো ইনিংসে শেষ ৭ ওভারে ৭৫ রান তুললেও সেটি যথেষ্ট ছিল না পাকিস্তানের। মার্ক চ্যাপম্যানের ৪২ বলে ৮৭ রানের অপরাজিত ম্যাচজয়ী ইনিংসই প্রমাণ করে তা।
বাবর অবশ্য বলছেন, ব্যাটিংয়ে তাঁরা ‘ভালো’ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না (মাঝের ওভারে রানের গতি কমে আসা) পার্থক্য গড়েছে; কারণ, আমরা শেষে তা পুষিয়ে দিয়েছি। আপনি বলতে পারেন আমরা ১০ রান কম করেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রিজওয়ানের চোটে ধাক্কা খেয়েছি। কারণ, নতুন ব্যাটারদের জন্য সহজ ছিল না। কিন্তু শাদাব পুষিয়ে দিয়েছে, ইরফানের (খান) সঙ্গে অসাধারণ জুটি গড়েছে। পিন্ডিতে ১৮০-১৯০ “পার” স্কোর।’
তবে পরিসংখ্যান বলছে, আগে ব্যাটিং কোনো স্কোরই ঠিক নিরাপদ নয় এ মাঠে। যে ছয়টি ম্যাচে ফল এসেছে, কোনোটিতেই জেতেনি আগে ব্যাটিং করা দল। এর আগে সর্বোচ্চ ১৯৩ রান করেও জিততে পারেনি পাকিস্তান। এক বছর আগে নিউজিল্যান্ডের কাছেই অমন সংগ্রহের পরও হেরেছিল স্বাগতিকেরা, সেবারও তাদের মূল ক্ষতি করেছিলেন চ্যাপম্যানই। খেলেছিলেন ৫৭ বলে ১০৪ রানের ইনিংস। পিএসএলে রাওয়ালপিন্ডিতে আগে ব্যাটিং করে জেতার ঘটনা আছে ১০টি, তবে ৮ বারই জেতা দলগুলো গত রাতে পাকিস্তানের ১৭৮ রানের চেয়ে বেশি তুলেছিল।
বাবর না মানলেও পাকিস্তানের প্রধান কোচ মেহমুদ ঠিকই মনে করছেন, তাঁরা ১৫-২০ রান কম করে ফেলেছিলেন। মেহমুদ বলেছেন, ‘আমরা অনেক ভালো শুরু করেছিলাম, প্রথম ৬ ওভারে আমাদের স্কোর ছিল ৫৪ রান, যেটি বেশ ভালো। শেষে শাদাবের ইনিংস দারুণ ছিল। মাঝের ওভারে আমরা ধীরগতির ছিলাম। ৭ থেকে ১০ ওভার এবং এরপর ১১ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে। বল তখন পিচে ধরছিল, আমরা গতি কমিয়ে ফেলেছি।’
মেহমুদের মতে, ‘এসব ব্যাপারে আমাদের উন্নতি করা শিখতে হবে। তবে চ্যাপম্যান যেভাবে খেলেছে, তাতে কৃতিত্ব দিতেই হবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একজন দাঁড়িয়ে গেলেই ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে পারে।’
আর সহ-অধিনায়ক শাদাব বলছেন, বড় ইনিংসের চেয়ে তাদের এমন ইনিংস দরকার, যেগুলোর ‘ইমপ্যাক্ট’ বেশি। তাঁর মতে, ‘মাঝেমধ্যে আপনার ইমপ্যাক্টপূর্ণ ইনিংস লাগবে, বিশেষ করে এখনকার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টিতে ধারাবাহিকভাবে রান করে যাওয়া কঠিন নয়, ইমপ্যাক্টপূর্ণ ইনিংস খেলাটাই কঠিন।’