মোহাম্মদ আমির পাকিস্তান ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন সেই ২০২০ সালে; আর অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম এই কদিন আগে। বিশ্বকাপ–ব্যর্থতায় পাকিস্তান ক্রিকেটে ব্যাপক রদবদলের পর আমিরের ক্রিকেটে ফেরার একটা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।
অন্যদিকে ওয়ানডে দলে ইমাদের ফেরার কথাও শোনা গেছে। তবে এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই ইমাদ অবসরের ঘোষণা দেন। এই দুই ক্রিকেটারের অবসর নিয়ে কথা বলেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নতুন পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজ, যিনি আবার অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রধান কোচের দায়িত্বও সামলাবেন। তাঁর দাবি, আমিরের সঙ্গে অবসর নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। আর দলে ফেরাতে চেয়েছেন ইমাদকেও।
আমিরকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে একটা শর্ত দিয়েছিলেন হাফিজ। খুবই সহজ শর্ত, আমিরকে ভালো করতে হবে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে। অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে হাফিজ বলেছেন, ‘আমি নিজে মোহাম্মদ আমিরকে ফোন করেছি। আমিরকে বলেছি, তোমার অবসর ভেঙে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা উচিত। যদি ভালো পারফর্ম করো, পাকিস্তান দলে সুযোগ পাবে। যখন পাকিস্তান দলে আসবে, আমি নিশ্চিত করছি, অন্যদের মতো তুমিও সমান সুযোগ পাবে। যদিও আমির বলেছে, বিষয়টি নিয়ে ও আর ভাবছে না, ওর জীবনের গুরুত্ব পরিবর্তন হয়ে গেছে, যেটাকে আমাদের সম্মান করতে হবে।’
ইমাদের সঙ্গে হাফিজের কথা হয়েছে অবসর ঘোষণার আগে। ইমাদ প্রসঙ্গে হাফিজ বলেছেন, ‘ইমাদ ওয়াসিমকে ফোন করেছি। ওকে বলেছি, আমার পাকিস্তান দলের পরিকল্পনায় ও আছে, ওর পাকিস্তান ক্রিকেটের সেবা করা উচিত। জানতে চেয়েছি পাকিস্তানের হয়ে খেলার জন্য ইমাদ প্রস্তুত কি না। ইমাদ বলেছিল, ও এই বিষয়ে ভেবে আমাকে জানবে। দুই দিন পর ইমাদ জানিয়েছে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ওকে পাওয়া যাবে না। এর দুই দিন পর ইমাদ তো অবসরের ঘোষণাই দিয়ে দিল।’
আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়াচ্ছেন। ৩১ বছর বয়সী এই পেসারের বেশির ভাগ লিগেই চাহিদা আছে। অলরাউন্ডার ইমাদও ফ্র্যাঞ্চাইজ ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ। অবসর ঘোষণার সময়েও ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চের’ বাইরের ক্যারিয়ারে নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। আমিরের অবসর নেওয়ার কারণটা সবারই জানা। ৩ বছর আগে তখনকার বোর্ড ও কোচিং স্টাফ সদস্যদের দ্বারা ‘মানসিক অত্যাচারে’র অভিযোগ এনে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন আমির; যদিও ইমাদের ক্ষেত্রে কারণটা স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের হয়ে ৬১ ওয়ানডে, ৫০ টি-টোয়েন্টি আর ৩৬ টেস্ট মিলিয়ে মোট ২৫৯ উইকেট নিয়েছেন আমির। অন্যদিকে ২০১৫ সালে অভিষেক হওয়া ইমাদ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে পাকিস্তানের হয়ে ১২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ৫৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তাঁর উইকেট ৪৪টি, পাশাপাশি ৪২.৮৬ গড়ে ৯৮৬ রানও আছে তাঁর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইমাদ ৬৬টি টি-টোয়েন্টিতে ৬৫টি উইকেট নেওয়ার সঙ্গে করেছেন ৪৮৬ রান।
আমির ও ইমাদ ভারত বিশ্বকাপ চলার সময়ে না খেলেও বেশ আলোচনাতে ছিলেন। পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে দলকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন এই দুজন। বিশেষ করে তখনকার অধিনায়ক বাবর আজমকে।