টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম তিন ম্যাচের ভেন্যু ছিল নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখানে প্রথম ইনিংসের গড় স্কোর ছিল ১০৩। গ্রুপ পর্বে দলের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচের ভেন্যু ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্ট। সে মাঠের উইকেটও ছিল মন্থর আর নিচু বাউন্সের। এমন উইকেটে খেললে প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ের যা হওয়ার, ঠিক তা-ই হয়েছে। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচে তাদের পাওয়ারপ্লে স্কোর ছিল ২৭/২, ১৬/৪, ২৫/৫ ও ৩৮/১।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সুপার এইটের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকা এই বিশ্বকাপে প্রথম ভালো ব্যাটিং উইকেটের দেখা পায়। যুক্তরাষ্ট্রও ভুল করে বসে। অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-স্বর্গে টসে জিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অ্যারন জোন্স প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠায়। আর সে সুযোগ দুই হাতে লুফে নেন ম্যাচ সেরা কুইন্টন ডি কক। তাঁর ৭৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে প্রোটিয়ারা শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ১৯৪ রান করে। ভালো উইকেটের সুবিধা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। রান তাড়ায় তাদের ইনিংস থেমেছে ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার ১৮ রানের জয়ে দিন ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রিস গুস।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে দ্রুত ৩৩ রান তুলে ফেললেও একটা পর্যায়ে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ৭৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে হারমিত সিংকে (৩৮) নিয়ে ৪৩ বলে ৯১ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন গুস। দুজনই প্রোটিয়া রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসির বোলিংয়ে হাত খুলে খেলেছেন। তাঁর ৪ ওভার থেকে নিয়েছেন ৫০ রান।
১৮তম ওভারে দুজন মিলে ২২ রান নিলে শেষ দুই ওভারে সমীকরণটা এসে ঠেকে ২৮ রানে। তবে কাগিসো রাবাদা ও আনরিখ নর্কিয়া মাত্র ৯ রান দিলে ১৭৬ রানে থামে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস। ৪৭ বলে ৫টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন গুস। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন রাবাদা।
এর আগে প্রোটিয়া ইনিংসের শুরুতেই ওপেনার রিজা হেনড্রিকসকে ১১ রানে থামান সৌরভ নেত্রবালকার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের সেই উইকেট পতনে অবশ্য রানের গতি কমেনি। এরপর ওভারপ্রতি রানটা ১০-এর নিচে নামতে দেননি ডি কক-মার্করাম জুটি। দ্রুত রান তোলায় এগিয়ে ছিলেন ডি কক, তাঁর অর্ধশতক এসেছে মাত্র ২৬ বলে, ৪টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। ডি ককের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৫তম অর্ধশতক এটি, গত বছরের মার্চের পর প্রথম।
ভয়ংকর হয়ে ওঠা ডি কককে ফেরান হারমিত। ১৩তম ওভারে ৪০ বলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭৪ রানে থামে তাঁর ইনিংস, স্ট্রাইক রেট ১৮৫। তাতে ভাঙে মার্করামের সঙ্গে ডি ককের ৬০ বলে ১১০ রানের জুটি। একই ওভারের পরের বলেই ডেভিড মিলারকে নিজের বোলিংয়ে নিজেই ক্যাচ নিয়ে থামান হারমিত।
সৌরভ তাঁর দ্বিতীয় স্পেলে এসে আউট করেন মার্করামকেও (৩২ বলে ৪৬ রান)। দ্রুত তিন উইকেট হারালেও হাইনরিখ ক্লাসেন (৩৬) ও ট্রিস্টান স্টাবসের (২০) ৩০ বলে ৫৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি প্রোটিয়াদের দুই শ’র কাছাকাছি নিয়ে যায়। সৌরভ ও হারমিত যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভার ১৯৪/৪ (ডি কক ৭৪, মার্করাম ৩৬, ক্লাসেন ৩৬*, স্টাবস ২০*; সৌরভ ২/২১, হারমিত ২/২৪)।
যুক্তরাষ্ট্র: ২০ ওভার ১৭৬/৬ (গুস ৮০*, হারমিত ৩৮, টেলর ২৪; রাবাদা ৩/১৮, মহারাজ ১/২৪)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কুইন্টন ডি কক।