হারের পর বাংলাদেশ দল

হতাশার চেয়ে বেশি তীব্র আরেকটু ভালো করতে না পারার আক্ষেপ

বেলা বাড়লেই টিম হোটেলের লবিতে ক্রিকেটারদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, হংকং—সব দলের ক্রিকেটারদের জন্য দুবাইয়ের পরিচিত রেস্তোরাঁর খাবার টিম হোটেলে নিয়ে আসে ফুড সার্ভিস অ্যাপ ‘জুমাটো’। ক্রিকেটাররাও খাবার নিতে যে যাঁর রুম থেকে বেরিয়ে আসেন হোটেল লবিতে। আর হোটেল লবিতে ঘাপটি মেরে থাকেন ভক্তরা। খাবার নিতে নিচে এলেই ছবি, অটোগ্রাফ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সবাই।

কয়েক দিন ধরে দুবাইয়ের হিলটন হোটেলে দৃশ্যটা প্রায় নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে। হোটেল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই হোটেলে সব অতিথির জন্যই খাবারের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ক্রিকেটাররা কেন যেন দুপুরের খাবারটা বাইরে থেকে কিনে এনে খান। বাংলাদেশ দলও একই হোটেলে থাকছে। তবে অন্য দলের ক্রিকেটারদের মতো তাদের খাবারের জন্য লবিতে আসতে দেখা যায় না। কাল জানা গেল সে রহস্য। জুমাটো অ্যাপে খাবারের অর্ডার বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও দিচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের খাবার নিতে লবিতে আসেন জাতীয় দলের সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য। আজ তাঁকে একাই পাঁচ-ছয়জনের খাবার নিতে দেখা গেল।

হোটেলের ওপরতলায় তখন চলছিল টিম মিটিং। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের বিশ্লেষণ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরদিনের ম্যাচই ছিল টিম মিটিংয়ের আলোচনায়। সেখানে ক্রিকেটারদের মানসিকতা চাঙাই ছিল বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। বোর্ডপ্রধানও অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ক্রিকেটারদের। প্রথম ম্যাচে হারের পর অতীতের মতো দলের ওপর যে ঝাঁপিয়ে পড়েননি, এতেই যেন ক্রিকেটারদের স্বস্তি। এক দিন পরই আরেকটি ম্যাচ আছে বলেই হয়তো স্বভাববিরুদ্ধভাবে আবেগ দমিয়ে রেখেছেন বোর্ডপ্রধান।

ক্রিকেটাররাও হারের হতাশায় একেবারে মুষড়ে পড়েননি। আফগানদের বিপক্ষে হারলেও টুর্নামেন্ট তো শেষ হয়ে যায়নি। ব্যাটিংটা আরেকটু ভালো হলেই যে আগামীকালের ম্যাচের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় সম্ভব, সেই বিশ্বাসটা ভালোই আছে বাংলাদেশ দলে। সেদিক থেকে দলের আবহে হতাশার চেয়ে আফগানদের বিপক্ষে আরেকটু ভালো করতে না পারার আক্ষেপটাই বেশি। এক ক্রিকেটার তো এমনও বললেন, ‘খুব যে খারাপ করেছি, তা নয়। ব্যাটিংটা ভালো হওয়া দরকার ছিল, তাহলেই হতো।’

টিম মিটিং শেষে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুসের কাছে দলের অবস্থা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে সবাই ভালো জায়গায় আছে। আমাদের প্রথম ম্যাচে যেসব দুর্বলতা ছিল, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকেই পজিটিভ মুডে আছে। ক্রিকেটাররা জানে যে সামনে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে, তার জন্য প্রস্তুতি দরকার, মানসিকভাবে সে প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

এক দিনের বিরতিতে দুটি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে, তাই প্রস্তুতিটা মানসিকই হওয়ার কথা। তাই আজ জাতীয় দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনে প্রথম ম্যাচের একাদশে থাকা ক্রিকেটাররা আইসিসি একাডেমিতে আসেননি। রুমেই বিশ্রাম নিয়ে সময় কাটিয়েছেন সবাই। একাদশের বাইরে থাকা নাসুম, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন, পারভেজ হোসেন ও সাব্বির হোসেন মাঠে এসেছেন। ঐচ্ছিক অনুশীলনের মেজাজেই কেটেছে তাঁদের বিকেলটা।