এই আফগানিস্তানকে নিয়ে কতজন বাজি ধরেছিল? খুব বেশি হয়তো নয়। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে শুধু কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাই বিশ্বকাপের আগে সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে আফগানিস্তানকে বেছে নিয়েছিলেন। বাকিদের কথা ছিল এমন—ভালো করবে, দুয়েকটা ম্যাচ হয়তো জিতবে।
তবে শেষ পর্যন্ত লারার কথাই সত্যি হয়েছে। আজ বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে টপকে শেষ চারে উঠেছে আফগানিস্তান। সেমিফাইনালে উঠে তাই লারাকে মনে করতে ভোলেননি আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রশিদ বলেছেন, ‘একমাত্র ব্রায়ান লারাই আমাদের সেমিফাইনালে দেখেছিলেন। আমরা তাঁকে সঠিক প্রমাণ করেছি। আমরা যখন ওয়েলকাম পার্টিতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি, আমি তাঁকে বলেছিলাম—আমরা আপনাকে হতাশ করব না।’
রশিদ এর সঙ্গে যোগ করে বলেছেন, ‘সেমিফাইনালে যাওয়া আমাদের জন্য স্বপ্নের ছিল। আমরা যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলাম, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পরই আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছিল। এটা অবিশ্বাস্য।’
আফগানিস্তান আজ আগে ব্যাটিং করে তুলেছিল ১১৫ রান। সেন্ট ভিনসেন্টের এই উইকেট বিবেচনায় রান কম করেছে আফগানিস্তান, মনে করেন রশিদ। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এই উইকেট ১৩০-১৩৫ রানের উইকেট। তবে আমরা ১৫ রান কম করেছি। আমরা জানতাম বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক খেলবে, আমরা জানতাম তাতেই আমরা সুবিধা নিতে পারব। আমরা বাড়তি কিছু করিনি, পরিকল্পনা স্পষ্ট ছিল। আমরা দেশের মানুষকে সন্তুষ্ট করতে চেয়েছি, আমরা এসব নিয়ে কথা বলেছি, সবাই দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে।’
নতুন বলে বোলিং করা পেসারদের নিয়ে রশিদ বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা ভালো হলে, মাঝের ওভারে কাজটা সহজ হয়। পুরো টুর্নামেন্টেই তারা আমাদের ভালো শুরু এনে দিয়েছে। ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক বল করতে এটা আমাদের কাজটা সহজ করে দেয়। তারা কাজটা করেছে, চিন্তাভাবনাও পরিষ্কার ছিল।’
আফগানিস্তান ১৬ বছর আগেও ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগের পঞ্চম বিভাগে খেলেছে। তখন আফগানদের খেলতে হতো জাপান, সিঙ্গাপুরের মতো দলের সঙ্গে। এখন সেমিফাইনালে রশিদের দল খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। স্বাভাবিকভাবেই আন্দাজ করা যায় আফগানিস্তানের উদ্যাপনের মাত্রাটা কেমন হবে, ‘দেশে ব্যাপক উদ্যাপন হবে। আমাদের জন্যও এটা বড় অর্জন। আমরা অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলেছিলাম, দেশে এখন কী অবস্থা সেটা বোঝানোর ভাষা নেই। সেমিতে আমাদের পরিষ্কার চিন্তাভাবনা নিয়ে যেতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন মঞ্চটা উদ্যাপন করি।’