ইমাদ ওয়াসিম কি তাহলে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন? এমনিতেই নিজে গত ফেব্রুয়ারিতে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সঙ্গে এবারের পিএসএলে টানা ৪টি নকআউট ম্যাচে অমন পারফরম্যান্সের পর অনেক ক্রিকেটারই ইমাদকে যেভাবে ফেরার কথা বলছেন, তাতে বিশ্বকাপের আগে তিনি না ফিরলেই বরং অবাক হতে হবে।
গত নভেম্বরে হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন ইমাদ। পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আছেন, তখনকার ক্রিকেট পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজের কাছ থেকে এমন নিশ্চয়তা পাওয়ার পরও তিনি অবসর নিয়েছিলেন। এরপর ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে ইমাদ বলেছিলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দিন শেষে এটা আমারই সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনি কখনো জানেন না, পাকিস্তানের কখন আপনাকে প্রয়োজন হবে।’
ইমাদকে বোধ হয় এখনই পাকিস্তানে প্রয়োজন! পাকিস্তান সাবেক সহ-অধিনায়ক, পিএসএলে ইসলামাবাদকে চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ক শাদাব খান এমনটাই বলছেন। ফাইনালের আগে শাদাব বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে ইমাদ যখন এই সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল, আমি চাইনি সে খেলা ছাড়ুক। কারণ, পাকিস্তানের এমন ক্রিকেটারের প্রয়োজন আছে। আল্লাহ চাইলে, যদি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করা হয়, আশা করছি সে অবশ্যই ফিরবে। কারণ, সামনেই বিশ্বকাপ এবং সে যেভাবে পারফর্ম করছে, সিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে। পাকিস্তানের তাঁকে প্রয়োজন।’
ইসলামাবাদ অধিনায়কের সামনে ইমাদের প্রসঙ্গ উঠে আসার কারণ ফাইনালের আগের তিন ম্যাচে ইমাদের পারফরম্যান্স। তিনটি বাঁচামরার ম্যাচেই জ্বলে উঠেছিলেন ইমাদ। দ্বিতীয় এলিমিনেটরে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ইমাদ খেলেন ৪০ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস।
দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। এর আগে বল হাতে ৪ ওভারে কোনো উইকেট না পেলেও রান দেন মাত্র ২৩। প্রথম এলিমিনেটরেও ইমাদ জ্বলে ওঠেন, তবে সেটা বল হাতে। কোয়েটার বিপক্ষে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১২ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।
এর আগে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শেষ দুই বলে ৭ রানের সমীকরণ ইমাদ মেলান ছক্কা ও চার মেরে। সেই জয়ে প্লে-অফে পৌঁছায় ইসলামাবাদ। এর সঙ্গে যোগ করুন ফাইনালের পারফরম্যান্স। গতকাল ফাইনালে মুলতানের বিপক্ষে ২৩ রানে ৫ উইকেট নেন এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ১৯ রান করে। তাতে ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদিও ইমাদকে দলে চান। অবসর নেওয়ার ঘোষণার পরই আফ্রিদি ইমাদকে ফোন করেছিলেন, ‘অবসর নেওয়ার পরই শাহিন কল দিয়েছিল, তাকে বলেছিলাম পিএসএলের পর কথা বলব।’
পাকিস্তানের হয়ে ইমাদের অভিষেক ২০১৫ সালে। ইমাদ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে পাকিস্তানের হয়ে ১২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ৫৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তাঁর উইকেট ৪৪টি, পাশাপাশি ৪২.৮৬ গড়ে ৯৮৬ রান। ৬৬টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৬৫টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি করেছেন ৪৮৬ রান।