সাদা বলের ক্রিকেটে ‘বোলার’ সাকিব আল হাসানের বিকল্প কে? গত কয়েক বছর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কখনো নাসুম আহমেদকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কখনো তাইজুল ইসলামকে।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নাসুমই ছিলেন বাংলাদেশ দলের ব্যাক-আপ বাঁহাতি স্পিনার। কিন্তু ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকেই নাসুম দলে ব্রাত্য, সুযোগ পান রাকিবুল ইসলাম ও তানভীর ইসলাম। গত ডিসেম্বরের নিউজিল্যান্ড সফরে ছিলেন দুজনই। এ বছরের শ্রীলঙ্কা সিরিজে আবার ফেরানো হয় তাইজুলকে।
জিম্বাবুয়ে সিরিজে আবার সুযোগ হয় তানভীরের। ২ ম্যাচ খেলে ১ উইকেট নেওয়া তানভীর বিশেষ কিছু করতে না পারলেও শেষ পর্যন্ত তিনিই যাচ্ছেন বিশ্বকাপে। ২৭ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মাত্র ৪টি, উইকেট ২টি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের সময় তাইজুলের হাঁটুতে পাওয়া চোটটা একরকম শাপেবর হয়ে এসেছে তানভীরের। তাইজুল এখন পুনর্বাসনে, বিশ্বকাপের ঠিক আগে নাসুম কিংবা রাকিবুলের কাছেও ফিরে যাওয়ার তেমন যৌক্তিকতা নেই। বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সেদিক থেকে বিকল্প ছিলেন শুধু তানভীরই। আজ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ দলে ডাকও পেয়ে গেছেন।
দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে তানভীরও কিছুটা সংশয়ে ছিলেন। দল ঘোষণার পর আজ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বললেন, ‘একটা ধারণা ছিল, হয়তো সুযোগ হতে পারে। তবে তাসকিন ভাই চোটে পড়ায় একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সুযোগ হওয়ায় অবশ্যই খুশি। বাসার সবাইও খুশি। জাতীয় দলে কিংবা বরিশাল দলের হয়ে যখন খেলেছি, তখনো ঠিক এই রোমাঞ্চ কাজ করেনি, যেটা এখন কাজ করছে। খুব ভালো লাগছে।’
তানভীরের রোমাঞ্চের অন্য একটা কারণও আছে, ‘আমার প্রথম বিশ্বকাপ, আমাদের বরিশাল থেকে শাহরিয়ার নাফীসের পর আমি বিশ্বকাপে সুযোগ পাচ্ছি। এটা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার।’ বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন তিনি, ‘ভালো কিছু করার লক্ষ্য থাকবে। যদি দলে সুযোগ হয়, তাহলে দলকে জেতাতে চাইব, এমন কিছু করতে চাইব যেন আমার নামটা সবাই মনে রাখে।’
প্রথমবার দলে ডাক পাওয়া স্পিনারদের মধ্যে আছেন রিশাদ হোসেনও। ২১ বছর বয়সী লেগ স্পিনার আছেন দারুণ ছন্দে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সব কটি খেলেছেন, নিয়েছেন ৫ উইকেট। বোলিংয়ের পাশাপাশি নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের ছাপও রেখেছেন এ তরুণ। বিশ্বকাপ দলে তাঁর জায়গা একরকম পাকাই ছিল।
রিশাদ অবশ্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শুনে রোমাঞ্চিত, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো লাগছে। যেহেতু প্রথমবারের মতো দলে ডাক পেয়েছি, সব মিলিয়ে খুবই রোমাঞ্চিত বোধ করছি।’ ফর্মে থাকায় রিশাদের বিশ্বকাপের লক্ষ্যটাও বড়, ‘আল্লাহ রহমতে বেশ ভালো ফর্মে আছি, লক্ষ্য থাকবে যেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হতে পারি। আর দল হিসেবে অবশ্যই ফাইনাল খেলার লক্ষ্য থাকবে।’
রিশাদের মতো বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ দুই সিরিজের দলে নিয়মিত জাকের আলীরও প্রথম বিশ্বকাপ এটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে সব ম্যাচে খেলেছেন এ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
তৃতীয় ম্যাচে দলের বিপদে ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের পর শেষ ম্যাচে ফিনিশারের ভূমিকায় নেমে ১১ বলে করেন ২৪ রান। এর শ্রীলঙ্কা সিরিজে তাঁর ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংসটি আরও স্মরণীয়। বিশ্বকাপেও মিডল অর্ডারে নিয়মিত মুখ হওয়ার কথা সিলেটের তরুণের।