পাকিস্তান তাদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়নি, ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছিলেন শান মাসুদ। বোঝাই যাচ্ছিল, সাড়ে চার শ রানকে যথেষ্ট মনে হয়েছে পাকিস্তানের। কিন্তু চতুর্থ দিন শেষে পাকিস্তান ম্যাচে পিছিয়ে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রান তুলে ১১৭ রানের লিড নিয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে স্বাগতিকদেরই এখন ম্যাচ বাঁচানোর জন্য লড়তে হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতির পেছনে যতটা না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্ব, তার চেয়ে উইকেটের দায়ই বেশি দেখছে পাকিস্তান দল। তৃতীয় দিন শেষে সহকারী কোচ আজহার মেহমুদ পিচের আচরণ পাল্টে যাওয়ার যে ‘অনুযোগ’ করেছিলেন, আজ চতুর্থ দিনের খেলা শেষে একই সুরে কথা বলেছেন পেসার নাসিম শাহও। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসারের মতে, পাকিস্তান দল ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে পারেনি। হয় পেসারদের জন্য ঘাসের উইকেট, নয়তো স্পিন-বান্ধব উইকেট বানানো দরকার ছিল বলে মন্তব্য তাঁর।
বাংলাদেশ দল চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমেছিল ৫ উইকেটে ৩১৬ রান নিয়ে। মুশফিকুর রহিম ৫৫ আর লিটন দাস ৫২ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেন। নাসিম দিনের শুরুতেই লিটনকে (৫৬) তুলে নিলেও মেহেদী হাসান মিরাজ এসে মুশফিকের সঙ্গে লম্বা এক জুটি গড়ে তোলেন। দুজনের জুটিতে বাংলাদেশ পায় ১৯৬ রান, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ। মুশফিক-মিরাজই বাংলাদেশের রান পাঁচ শর ওপরে নিয়ে যান।
নাসিম জানান, উইকেট থেকে পেসাররা কোনো সুবিধা পাননি। উইকেট পেসবান্ধব হবে বলে পাকিস্তান দল একাদশে কোনো স্পিনারই রাখেনি। তারপরও পেসারদের উইকেট নিতে হিমশিম খাওয়ার বিষয়টি ম্যানেজমেন্টের ভালো করে ভাবা দরকার বলে মন্তব্য নাসিমের, ‘পিচ তো আমরা তৈরি করি না। আমি মনে করি, আমরা যদি (ঘাসে ভরা) সবুজ উইকেট তৈরি করতে না পারি, তাহলে স্পিন-বান্ধব উইকেট বানানোই ভালো। আমাদেরকে যেকোনো মূল্যেই হোক, ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে হবে। এ বিষয়টা আমাদের ভাবা দরকার।’
নাসিম অবশ্য ভালো উইকেট না পাওয়ার জন্য ম্যানেজমেন্টকেও দায় দিতে রাজি নন, ‘আমাদের ম্যানেজমেন্ট ভালো উইকেট তৈরিতে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। এখন আমাদের ভাবা দরকার, কীভাবে ঘরের মাঠের সুবিধা আদায় করা যায়।’ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটই নিয়েছেন পাকিস্তানের চার পেসার। নাসিম তিনটি আর শাহিন আফ্রিদি, মোহাম্মদ আলী ও খুররম শেহজাদ দুটি করে। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম ম্যাচ খেলা নাসিম বোলিং বিভাগ হিসেবে নিজেদের ব্যর্থতাও মেনে নিয়েছেন, ‘বোলার হিসেবে আমাদেরকে মনোযোগী ও শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকতে হবে। বোলিং বিভাগ হিসেবেও আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
পাকিস্তানের সাবেক পেসার তানভীর আহমেদ অবশ্য চাঁছাছোলা ভাষাতেই নাসিমদের ব্যর্থতা তুলে ধরেছেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের হয়ে ৫ টেস্ট খেলা এই পেসার এক্সে হতাশা প্রকাশ করে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। একটিতে লিখেছেন, ‘নাসিমের বয়স ২১ বছর, আফ্রিদি ২৪, শেহজাদও ২৪। কিন্তু ওদের বোলিং দেখে মনে হচ্ছে, বয়স ৩৫ বছর।’