বাবর আজমের সামনে আজ সুযোগ ছিল সব সমালোচনার জবাব দেওয়ার। ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেই জবাবটা দিতে পারতেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু পারলেন না বাবর। ব্যাট হাতে অর্ধশতক পেলেন ঠিকই, তবে দলকে জয় এনে দিতে পারলেন না।
হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান হেরেছে ২১ রান। ১৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ৩ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে গেছে ১৭৩ রানে। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড।
শেষ ৪ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৫৯ রান। ক্রিজে বাবরের সঙ্গে ছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। কাজটা কঠিন ছিল, কিন্তু মিচেল স্যান্টনারের এক ওভারে ১৭ রান নিয়ে খেলা জমিয়ে তোলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে বেন সিয়ার্সের বলে ইনিংসে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে বাবর আউট হলে জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়।
বাবর আজ ক্রিজে আসেন প্রথম ওভারেই, টিম সাউদির বলে সাইম আইয়ুব ফিরে গেলে। পরের ওভারে ফিরে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে এরপর বাবর ও ফখর জামান ৮৭ রানের জুটি গড়েন। ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ২৩ বলেই অর্ধশতক তুলে নেন ফখর। ২৫ বলে ৫০ রান করে অ্যাডাম মিলনের বলে ফখর বোল্ড হওয়ার আবার পাকিস্তানের আবার ছন্দপতন। ২ উইকেটে ৯৭ থেকে ৫ ওভারের মধ্যে ৬ উইকেটে ১২৫ রান পাকিস্তানের। ৩৬ বলে অর্ধশতক করা বাবরই শুধু ভরসা হয়ে ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান জেতাতে পারেননি। মিলনে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এর আগে প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও পাকিস্তানের বোলারদের ওপর দাপট দেখান ফিন অ্যালেন। ডেভন কনওয়েকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম উইকেটে গড়েন ৩১ বলে ৫৯ রানের জুটি। কনওয়ে ১৫ বলে ২০ রান করে আমের জামালের বলে আউট হলেও কেইন উইলিয়াসনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন অ্যালেন।
উইলিয়ামসনের সঙ্গে অ্যালেনের জুটি ভাঙে উইলিয়ামসনের চোটে। ম্যাচের ১১তম ওভারে হ্যামস্ট্রিং চোটে মাঠ ছাড়েন উইলিয়ামসন। মাঠ ছাড়ার আগে করেন ১৫ বলে ২৬। বাড়তি সতর্কতার জন্য এই ম্যাচে আর মাঠেই নামেননি তিনি। ফিল্ডিংয়ের সময় অধিনায়কত্ব করছেন টিম সাউদি।
হাঁটুর চোট থেকে সেরে উঠে গত অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিলেন উইলিয়ামসন। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও অংশ নেন। কিন্তু সতর্কতা হিসেবে সাদা বলের সিরিজে তাঁকে খেলানো হয়নি। এই সিরিজেও তাঁর সব ম্যাচ খেলার কথা নয়।
দলীয় ১১১ রানে উইলিয়ামসন মাঠ ছাড়লে ক্রিজে আসেন ফর্মের তুঙ্গে থাকেন ড্যারিল মিচেল। তবে একপ্রান্তে কাজের কাজটা করতে থাকেন অ্যালেন। ২৪ বলে অর্ধশতক করা অ্যালেন উসামা মিরের বলে আউট হওয়ার আগে করেন ৪১ বলে ৭৪। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ অর্ধশতকের দেখা পাওয়া অ্যালেনের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা।
১৫ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৫৩। সেখান থেকে দারুণভাবে ফিরে আসে পাকিস্তানের বোলাররা। এর মূল কৃতিত্বটা পাবেন পেসার হারিস রউফ। পাওয়ার প্লের মধ্যে প্রথম দুই ওভারে ৩০ রান দেওয়া এই পেসার শেষ দুই ওভারে দিয়েছেন ৮ রান। নিয়েছেন ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে শেষ ৫ ওভারে পাকিস্তান রান দিয়েছে ৪১। উইকেট নিয়েছে ৫টি। আগের ম্যাচে ৪৬ রান দেওয়া আফ্রিদি এই ম্যাচে রান দিয়েছেন ৩০। যদিও কোনো উইকেট পাননি। মিডিয়াম পেসার আব্বাস আফ্রিদি ৪৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। আমের ও উসামা ১ টি করে উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৪/৮ (অ্যালেন ৭৪, উইলিয়ামসন ২৬, স্যান্টনার ২৫, কনওয়ে ২০; রউফ ৩/৩৮, আব্বাস ২/৪৩)।
পাকিস্তান: ১৯.৩ ওভারে ১৭৩ (বাবর ৬৬, ফখর ৫০, শাহিন ২২; মিলনে ৪/৩৩, সিয়ার্স ২/২৮, সাউদি ২/৩১, সোধি ২/৩৩)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২১ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৫-ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-০-তে এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ফিন অ্যালেন।