উদ্‌যাপনটা এমনই করেন শরীফুলের
উদ্‌যাপনটা এমনই করেন শরীফুলের

শান্ত থাকার চেষ্টা করেও পারেন না শরীফুল

ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ের নামটা ঘোষণার পর শরীফুল ইসলামের মুখে হাসি। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ থেকে সে হাসি নিয়েই মাঠের অপর প্রান্তে সংবাদ সম্মেলনকক্ষ পর্যন্ত এলেন। সেখানে এক সংবাদকর্মীর দাবি, ‘আপনি লম্বা মানুষ। আজ একটু লম্বা করে কথা বলুন।’ কথাটা শুনে শরীফুলের মুখের হাসি আরও একটু চওড়া, ‘আচ্ছা, চেষ্টা করব।’

চেষ্টা করে অবশ্য সব সময় সফল হওয়া যায় না। শরীফুল নিজেই অনেক সময় উইকেট নেওয়ার পর বুনো উদ্‌যাপনটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু সব সময় পারেন না।

আজ সংবাদ সম্মেলনে এসে শরীফুলের প্রথমেই নিজের বুনো উদ্‌যাপনের ব্যাখ্যা দিতে হলো, ‘জেদ ছিল না। আমি অনুশীলনে যেমন চেষ্টা করছিলাম, ম্যাচেও তেমনই বোলিং করার চেষ্টা করেছি। শরীরী ভাষাটা চলে আসে। ড্রেসিংরুমে গিয়ে ভাবি যে এমন করা যাবে না। শান্ত থাকতে হবে। কিন্তু তবু অটোমেটিক চলে আসে (আগ্রাসন)।’

ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৪ উইকেট পেলেন শরীফুল

শরীফুলের এমন আগ্রাসী উদ্‌যাপন আজ দেখা গেল চারবার। ৯ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি, যা শরীফুলের ১৭ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নিয়েছেন। আজ সুযোগ ছিল ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট–কীর্তিটা গড়ার।

পেশিতে টান পড়ায় কোটা পূরণ করতে পারেননি শরীফুল

কিন্তু পেশির টানের কারণে সেটি হয়নি বললেন শরীফুল, ‘চেষ্টা তো ছিল। কিন্তু দেখছিলাম ক্র্যাম্প করছে। আামি যদি জোর করে বল করতাম, চোটে পড়তে পারতাম। এদিকে লুজ বল হলে বাউন্ডারি হয়ে যেত। তাই আমি চিন্তা করেছি আমার দলের ভালো একজন বোলার, যিনি কিনা শতভাগ দিতে পারবেন, তাঁরই বোলিং করা উচিত।’

স্পেলের শুরুতে অবশ্য শরীফুলের হাত থেকে বল সরানোর কোনো উপায় ছিল না। প্রথম স্পেলে তিনি ৫ ওভার বল করে রান দিয়েছেন মাত্র ৮, ডট বল ২৮টি। ৪ উইকেটের ৩টিই এসেছে প্রথম স্পেলে। একের পর এক বাউন্সার ছিল শরীফুলের প্রথম স্পেলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক, ‘শুরুতে দুই-তিন বল সামনে করার পর দেখলাম কিছু হচ্ছে না। পরে তাসকিন ভাইও বললেন ব্যাক অব লেংথে করলে ভালো হবে। আপ অ্যান্ড ডাউন হওয়ার চান্স আছে। তখন দুজন মিলে পরিকল্পনা বদল করেছি।’

তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ–সেরা শরীফুল

আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে আউট করার বিষয়টিও এসেছে শরীফুলের সংবাদ সম্মেলনে। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে এ নিয়ে চারবার ইব্রাহিমকে আউট করেছেন এই বাঁহাতি। প্রশ্নটা শুনতেই শরীফুলের মুখে সেই চওড়া হাসিটা দেখা গেল, ‘ইব্রাহিম ভাই ভালো ব্যাটসম্যান। চেষ্টা করছি তাঁকে নিজের সেরা ডেলিভারি করার। আগের তিনবার আউট করায় একটা আত্মবিশ্বাস ছিল, উইকেটটা হয়তো পাব। সেভাবেই হয়েছে।’

শরীফুলের সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই আফগানিস্তানের প্রধান কোচ জোনাথন ট্রট এসেছেন। শরীফুলকে দেখেই হাত বাড়িয়ে অভিনন্দন জানিয়ে বললেন, ‘ওয়েল ডান মেট।’ মুখে হাসি নিয়েই সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে ধন্যবাদ জানালেন শরীফুল।