জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক মারা গেছেন। তাঁর স্ত্রী নাদিনে স্ট্রিক এক ফেসবুক পোস্টে খবরটি নিশ্চিত করেছেন। জিম্বাবুয়ের সংবাদমাধ্যম হেরাল্ডকে হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর বাবা ডেনিসও।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হেনরি ওলোঙ্গার একটি টুইটের সূত্র ধরে হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। পরে হিথ নিজেই জানান, তিনি বেঁচে আছেন, ভালো আছেন। তবে ক্যানসারে আক্রান্ত সাবেক এই ক্রিকেটার বেঁচে থাকলেও সংকটাপন্ন অবস্থায় ছিলেন।
নাদিনে তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ ভোরে, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রোববার, আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং আমার চমৎকার সন্তানদের পিতাকে তার বাড়ি থেকে দেবদূতরা সঙ্গে নিয়ে গেছেন, যেখানে তিনি তার শেষটা পরিবার ও প্রিয়জনবেষ্টিত হয়ে কাটাতে চেয়েছিলেন। তিনি একা যাননি, আমাদের ভালোবাসা ও শান্তিতে আচ্ছাদিত হয়ে গেছেন। আমাদের অন্তর অনন্তকালের জন্য স্ট্রিকের সঙ্গে মিশে গেছে।’
নাদিনে পোস্ট শেষ করেছেন ‘যতক্ষণ না তোমাকে আমি পাই’ লিখে, সঙ্গে ভগ্নহৃদয়ের ইমোজি জুড়ে দিয়ে।
স্ট্রিকের বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। গত মে মাসে জানা গিয়েছিল ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন জিম্বাবুয়ের প্রথম ও একমাত্র বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেওয়া এই পেসার। ২০১৪ থেকে ২০১৬—এই দুই বছর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন এই ডানহাতি পেসার।
জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার স্ট্রিক ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ছিলেন। ৬৫ টেস্ট ও ১৮৯টি ওয়ানডে খেলা স্ট্রিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ ম্যাচটি খেলেছেন ২০০৫ সালে। টেস্টে তাঁর উইকেট ২১৬টি, ওয়ানডেতে ২৩৯টি। ব্যাট হাতে টেস্টে ১৯৯০ রান করা স্ট্রিক ওয়ানডেতে করেছেন ২৯৪৩ রান।
খেলা ছাড়ার পর কোচিংয়ে আসা সাবেক এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বোলিং কোচের দায়িত্ব পান। এ ছাড়া কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট লায়নস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে কাজ করেছেন স্ট্রিক।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা ঝলমলে হলেও একটা কালো দাগ নিয়েই পৃথিবী ছেড়েছেন স্ট্রিক। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী বিধির কয়েকটি ধারা ভঙ্গের কারণে ২০২১ সালে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন স্ট্রিক। নিজের কর্মকাণ্ডের (নিয়মভঙ্গ) দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও কখনোই ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলেন না বলে জানিয়েছিলেন।
এখন তিনি দায় শিকার বা প্রশংসিত হওয়া— সবকিছুরই উর্ধ্বে চলে গেলেন।