শাদাব খানের মতো স্পিনাররা ছিলেন বিশ্বকাপে ব্যর্থ
শাদাব খানের মতো স্পিনাররা ছিলেন বিশ্বকাপে ব্যর্থ

স্পিনে ডুবেছে পাকিস্তান, মিসবাহ বললেন পিসিবি পরামর্শ শোনেনি

এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতা আছে ব্যাটিং–বোলিং–ফিল্ডিং মিলিয়ে সব বিভাগেই। এর মধ্যে বোলিংয়ে ব্যর্থতার প্রধানতম কারণ স্পিনারদের ছন্দ খুঁজে না পাওয়া। টুর্নামেন্টজুড়ে শাদাব খান, মোহাম্মদ নেওয়াজদের উপস্থিতি বলতে গেলে টেরই পাওয়া যায়নি। দলে নতুন আসা উসামা মিরের সঙ্গে ‘অনিয়মিত’ ইফতিখার আহমেদ পর্যন্ত শাদাব, নেওয়াজদের চেয়ে ভালো বোলিং করেছেন—এতেই বোঝা যায়, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণ কতটা নখদন্তহীন ছিল।

দলের সহ–অধিনায়ক শাদাব ৬ ম্যাচে মাত্র ২ উইকেট নিয়েছেন। বাঁহাতি স্পিনার নেওয়াজও দুটির বেশি উইকেট পাননি। তুলনায় দলে নতুন আসা লেগ স্পিনার মির ও ইফতিখার শাদাব–নেওয়াজের চেয়ে ভালো করেছেন। দুজনই পেয়েছেন ৪টি করে উইকেট। এই হচ্ছে বিশ্বকাপে পাকিস্তানি স্পিনারদের অবস্থা।

মোহাম্মদ নেওয়াজ বিশ্বকাপে পেয়েছেন মাত্র ২ উইকেট

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ–উল–হক জানিয়েছেন, স্পিন বোলিংয়ের ক্ষেত্রে তাঁর এবং আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজের পরামর্শ উপেক্ষা করা হয়েছে। তাঁরা দুজনই বিশ্বকাপ দলে আরও একজন ভালো মানের বিশেষজ্ঞ স্পিনার অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিসবাহ বলেছেন, ‘যখন পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ জাতীয় দলের ব্যাপারে আমার ও হাফিজের পরামর্শ চেয়েছিলেন, তখন স্পিন বিভাগ নিয়ে আমরা কিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমরা স্পিন নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা পাল্টাতে বলেছিলাম। আমরা বলেছিলাম, যেহেতু গত এশিয়া কাপ থেকেই শাদাব ও নেওয়াজের পারফরম্যান্স খুব ভালো নয়, তাই বাড়তি স্পিনার দলের সঙ্গে নিয়ে যেতে। কিন্তু আমাদের পরামর্শ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে।’

মিসবাহ–উল–হকের পরামর্শ শোনেনি পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট

জাকা আশরাফ পিসিবির চেয়ারম্যান হওয়ার পর মিসবাহ, হাফিজ আর প্রধান নির্বাচক ইনজামাম–উল–হককে নিয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছিলেন। এই কমিটি জাতীয় দলের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্বে ছিল। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বাজে পারফরম্যান্সের পর হাফিজ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের কাছে হারার পর প্রধান নির্বাচকের পদ ছেড়ে দেন ইনজামাম, যদিও কারণ ছিল স্বার্থ–সংঘাতের।

মিসবাহ বলেছেন, ‘আমি পিসিবিকে বলেছিলাম, দুই স্পিনার দলের জন্য যথেষ্ট নয়। দলের আত্মবিশ্বাসের জন্যও এটি যথেষ্ট নয়। টিম ম্যানেজমেন্টের উচিত স্পিন বোলিং নিয়ে পরিকল্পনাটা আবারও ভেবে দেখা।’

ইফতিখার আহমেদ শাদাব–নেওয়াজদের চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন

উপমহাদেশের মাটিতে স্পিন বোলিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এমন ভাবনা থেকেই মিসবাহ টিম ম্যানেজমেন্টকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, অধিনায়ক বাবর আজম ও কোচ মিকি আর্থার সেই পরামর্শ পুরোপুরি উপেক্ষা করেছেন, ‘তাঁদের কিছু পরামর্শ দিতে গেলেই বাবর আর মিকি আর্থার বলতেন, তাঁরা দলে কোনো বদল চান না। এই স্পিনারদের নিয়েই তাঁরা সাফল্য পেয়েছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে এরাই খেলছে, তাঁরা দলকে এলোমেলো করতে চান না। ইত্যাদি ইত্যাদি।’

পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে ছিলেন তরুণ লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ। তবে খেলার সুযোগ তাঁর হয়নি।