অ্যাডিলেডে রানতাড়ায় ১১ বলের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ
অ্যাডিলেডে রানতাড়ায় ১১ বলের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ

‘ভারত জেতার চেয়ে বরং বাংলাদেশই হেরেছে’

বৃষ্টির আগে বাংলাদেশ: ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৬ রান

বৃষ্টির পরে বাংলাদেশ: ৯ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৯ রান।

ব্যবধান স্পষ্ট। ভারতের ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে বৃষ্টি নামার আগপর্যন্ত বেশ স্বচ্ছন্দেই এগিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টির পর খেই হারান সাকিব আল হাসানরা। ৫৪ বলে ৮৫ রানের সমীকরণ মেলাতে না পেরে বৃষ্টি আইনে ম্যাচ হেরেছেন ৫ রানে। শেষ ৯ ওভারে বোলার-ফিল্ডারদের নৈপূণ্যে ভারত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার পথে স্নায়ুর পরীক্ষায় রোহিতরা ভালোভাবেই উতরে যাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বীরেন্দর শেবাগ, হরভজন সিং, ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো সাবেকরা। ভারতের জয়ে খুশি কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কারও। তবে সাবেক এই অধিনায়কের মতে, অ্যাডিলেডে ওভালের এই ম্যাচে ভারতের জয়ের চেয়ে বাংলাদেশের হারই বেশি স্পষ্ট হয়েছে।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তিন ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাস্কার (বাঁয়ে), আতাহার আলী খান (মাঝে) ও হার্শা ভোগলে (ডানে)

ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ গাভাস্কারকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ম্যাচের ফল নির্ধারণে বৃষ্টির কোনো ভূমিকা ছিল তাঁর মনে হয় কি না? জবাবে হ্যাঁ সূচক উত্তরই দিয়েছেন গাভাস্কার, ‘অবশ্যই ভূমিকা ছিল। বৃষ্টির সময় ওদের রান ছিল ৭ ওভারে ৬৬। ওভারপ্রতি ৯ রানের বেশি করে রান উঠছিল। হাতে ১০ উইকেট থাকায় এগোচ্ছিলও ভালো। কিন্তু বৃষ্টির পর লক্ষ্য যখন ৩৩ রান কমে গেল, মনে হলো ওরা কিছুটা ঘাবড়ে গেল। অথচ দরকারি রান তখনো প্রথমদিকের মতোই ছিল।’

গাভাস্কারের মতে, বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ছন্দ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সেটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘স্মার্ট ক্রিকেট খেলার বদলে বাংলাদেশ প্রতি বলে ছয় হাঁকানোর চেষ্টা করল। ছোট বাউন্ডারি দিয়ে বল মারার চেষ্টা করেছে। বড় শটকে আয়ত্বের মধ্যে রেখে ভারত ওই সময় বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বোলিং করেছে। যে কারণে যেসব শট ছয় হতে পারত, সেগুলো লং অন বা মিড উইকেট বাউন্ডারিতে ক্যাচ হলো।’

বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে অষ্টম ওভারে লিটন দাস আর দশম ওভারে নাজমুল হোসেন আউট হন। সাকিব ও আফিফ হোসেন যখন মাঠে, তখন ৬ ওভারে ৫২ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু অর্শদীপ সিংয়ের করা ইনিংসের ১২তম ওভারটিতে দুজনই আউট হয়ে যান। হার্দিক পান্ডিয়ার করা পরের ওভারে আউট হন ইয়াসির আলী আর মোসাদ্দেক হোসেনও। ৪ উইকেট চলে যায় মাত্র ১১ বলের মধ্যে। সেখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ।

রান আউট হওয়ার আগে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন লিটন দাস

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা গাভাস্কার মনে করেন, বাংলাদেশের নিজেদের ব্যর্থতাই হারের জন্য দায়ী, ‘আমি তো বলব ভারত জেতার চেয়ে বরং বাংলাদেশই হেরেছে। হ্যাঁ, ভারত চাপ সামলাতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিংটাই এ ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, যেখানে ঘাবড়ে গিয়ে তারা খুব বেশি বড় শট খেলার চেষ্টা করে গেছে। তাঁরা যদি স্মার্ট ক্রিকেট খেলত, দুই-দুই করে নেওয়ার চেষ্টা করত, তাহলে ওভারপ্রতি ১০ রান করে পেয়ে যেত। আর ওটাই তাদের দরকার ছিল।’