দুজনের কেউই সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে এ সংস্করণে খেলেননি। সামনের মাসে হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দলেও নেই। এরপরও আগামী বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জো রুট ও বেন স্টোকসকে বিবেচনা করবে ইংল্যান্ড।
সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও পাঁচটি ওয়ানডে খেলবে ইংল্যান্ড। দুটি সিরিজের জন্য আজ দল ঘোষণা করা হয়েছে। রুট বা স্টোকস—কেউই নেই তাতে। রুটকে অবশ্য বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, স্টোকসকে বিবেচনা করা হয়নি চোটের কারণে। শুধু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ নয়, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও দুজনকে পাবে না ইংল্যান্ড। সে সময় পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজে থাকবেন তাঁরা।
তবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রুট, স্টোকসের সঙ্গে ক্রিস ওকস ও মার্ক উডদের মতো খেলোয়াড়কে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচক লুক রাইট, ‘আমরা যথাসম্ভব শক্তিশালী হতে চাই। সে সময় টেস্ট ক্রিকেট নেই, ফলে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দল খেলানোর সুযোগ থাকবে। বড়দিন পর্যন্ত সূচি বেশ খ্যাপাটে, ফলে এ সময়ে (অন্য) ছেলেদের সুযোগ থাকবে নিজেদের দাবি জানানোর। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এলে আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী দল বেছে নিতে পারব।’
সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে রুট অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি মোটেও। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া ইংল্যান্ডের হয়ে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৩০.৬৬। বিশ্বকাপের আগে সেভাবে ওয়ানডে না খেলা এর অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়। সামনের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে থাকলেও একই রকম সমস্যায় পড়তে হতে পারে তাঁকে। যদিও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে ভারতের সঙ্গে একটি সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ড, সেটিই হতে পারে স্টোকস-রুটদের প্রস্তুতির একমাত্র সুযোগ।
এরপরও রুটকে বিশ্রাম দেওয়ার কারণ হিসেবে রাইট বলেছেন, ‘সে ইংলিশ ক্রিকেটকে অনেক দিয়েছে। বড় টুর্নামেন্টে সে (সরাসরি) কেন আসতে পারবে না, এমন কারণ নেই। আমরা জানি জো ইংল্যান্ড দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সে বোলিংও করতে পারে, যেটি সবাই পারে না। তার মতো কাউকে আমাদের দেখেশুনে রাখতে হবে, সে ফুরিয়ে যাক, সেটি আমরা চাই না।’
আর ভিন্ন সংস্করণে মানিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে রাইটের মন্তব্য, ‘এটা তো সবার জন্যই চ্যালেঞ্জ, তাই না? ইংল্যান্ডে তো এ চ্যালেঞ্জ আরও বড়। যারা শীর্ষ পর্যায়ের খেলোয়াড়, তারা যত দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নিতে পারে। আমার মনে হয় না এটা বড় সমস্যা হবে তাদের জন্য। কারণ, সবার জন্যই ব্যাপারটি এক। এ কারণেই তরুণদের সামনে আনাটা দারুণ ব্যাপার।’
স্টোকস অবশ্য ওয়ানডে বিশ্বকাপেই ফিরেছিলেন অবসর ভেঙে। এরপর এ সংস্করণে নিজের ভবিষ্যতের ব্যাপারে কিছু খোলাসা করেননি ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের ম্যাচসেরা। রাইটের কথায় অবশ্য আভাস আছে, এ সংস্করণে আরেকটি বৈশ্বিক ইভেন্টে তিনি খেলতে চান। মাঝে বোলিংয়ের ফিটনেস ফিরে পেতে অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলেননি।
এদিকে বাদ পড়লেও জনি বেয়ারস্টো ও মঈন আলীর ক্যারিয়ার এখানেই শেষ নয় বলে জানিয়েছেন রাইট। তাঁর মতে, ‘তারা সুযোগ না পেয়ে হতাশ। আমি অবশ্যই বলব না এটিই তাদের শেষ। তারা দারুণ ক্রিকেটার। কিন্তু এ মুহূর্তে আমরা অন্যদের সুযোগ দিতে চাই।’
গত ১০ মাসে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—দুই সংস্করণেরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেতাব হারিয়েছে ইংল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ার পর বিদায় নিতে হয়েছে সীমিত ওভারের কোচ ম্যাথু মটকেও। তবে অধিনায়কত্ব ধরে রেখেছেন জস বাটলার। সামনের কয়েকটি সিরিজ ও টুর্নামেন্ট তাই তাঁর জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সহ-অধিনায়ক মঈন আলী ও সিনিয়র ক্রিকেটার ক্রিস জর্ডানের অনুপস্থিতিতে অবশ্য টি-টোয়েন্টির উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব ফিল সল্টের কাছে ছেড়ে দিতে পারেন বাটলার। তাতে মিড অন বা মিড অফে ফিল্ডিং করে বোলারদের কাছাকাছি থাকার সুযোগ মিলবে তাঁর।