স্ট্রেট ড্রাইভ

একাদশ নির্বাচনে শ্রীরামের পুরো স্বাধীনতা থাকা উচিত নয়

প্রথম রাউন্ডে শুরুতেই অঘটনের পর তো টুর্নামেন্ট দারুণভাবে জমে উঠল। সহযোগী দলগুলোও যেভাবে জিতছে, তাদের শরীরী ভাষা বা খেলার ধরনে একটা জিনিস স্পষ্ট—তারা জিততেই এসেছে। গতকাল আয়ারল্যান্ডের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, জয়ের তাড়না আমাকে মুগ্ধ করেছে।

স্কটল্যান্ডের মাইকেল জোনস যেভাবে একা খেলে গেল, আমাদের মধ্যে সেটির একটু অভাব আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের বোলিং দেখে আরেকবার মনে হয়েছে, যাঁদের এমন উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি সুবিধা পাবে। অস্ট্রেলিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অভিজ্ঞতা বলতে সম্বল শুধু সাত বছর আগে বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ।

দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত পারফরম্যান্স ছাড়া ব্যাটিং বিভাগ সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। তবে দুটি ম্যাচে কাছাকাছি গিয়েছি, এটা ভালো লক্ষণ। বাকিদের মধ্য থেকে একটু সমর্থন পেলে জয়ের স্বপ্ন দেখার মতো জায়গায় যেতে পারব।

আমি দলে পাঁচজন বিশেষায়িত বোলার চাই। যদিও মেহেদী হাসানকে দলে চেয়েছিলাম, তবে এখন মিরাজকে খেলানো হোক। আর তাকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে আবার ওপেনিংয়ে পাঠানোয় বিস্মিত হয়েছি। সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, শ্রীলঙ্কার বোলাররা নাকি বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ভালো বলে এমন সিদ্ধান্ত। এখানে আপত্তি আছে আমার। প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিবেচনা না করে নিজেদের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখা উচিত।

বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম

প্রথম ওভারেই তিন নম্বর ব্যাটসম্যানকে আসতে হতে পারে, ফলে এত ডান-বাম কম্বিনেশন চিন্তা করে লাভ নেই। লিটনের সঙ্গে যোগ্য একজন ওপেনারেরই আসা উচিত। প্রতিপক্ষের কথা চিন্তা করে একেক দিন একেক ওপেনিং জুটি আনা ঠিক হবে না—আমার ব্যক্তিগত মত।

শ্রীধরন শ্রীরাম আমাদের সব খেলোয়াড়কে সেভাবে জানেন না। দলের একাদশ নির্বাচনে তাঁর পুরো স্বাধীনতা থাকা উচিত নয়। তাঁর কাজের ক্ষেত্রটা ঠিক করে দেওয়া উচিত। সেখানে প্রধান নির্বাচক আছেন, খালেদ মাহমুদ আছেন। বিশ্বকাপের পর শ্রীরাম থাকবেন কি না, জানি না আমরা। ফলে টিম ম্যানেজমেন্টের অবস্থা এতটা নড়বড়ে হলে হবে না।

অস্থির হওয়ার কিছু নেই, যা হওয়ার তা ঘটবেই। কীভাবে শেষের দিকে দ্রুত রান তুলব বা বোলিংয়ে রান আটকাব, ইনিংস পুনর্গঠন করা যায়, অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ছোটখাটো যেসব ব্যাপার পার্থক্য গড়ে দিতে পারে—শ্রীরামের সেসব ধরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করুক।

অস্ট্রেলিয়ায় অনুশীলনে বাংলাদেশ দল। বাজে সময় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তো সাকিবরা

অন দ্য রাইজ খেলতে হবে, হোবার্টে ছোট মাঠের ব্যাপার আছে—দলের মধ্যে এসব বিশ্লেষণ করা উচিত। সবকিছুই গণমাধ্যম বা দেশবাসীকে জানতে হবে সেটি ঠিক নয়, বিশেষ করে এতে কোনো ক্রিকেটারের ওপর অনাস্থা প্রকাশ পায়।

বিচলিত হওয়া যাবে না। আমরা যে ইমপ্যাক্ট দেখানোর কথা বলছি, প্রতিপক্ষ দলের বোলাররা কিন্তু সেই ইমপ্যাক্ট ফেলার চেষ্টাই করবে। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করাই সব। এত টেনশন নেওয়ার কিছু নেই, আমরা তো চ্যাম্পিয়ন হতে যাইনি। যত তাড়াতাড়ি শিখতে পারি, মানিয়ে নিতে পারি—তাতেই কল্যাণ।

দলকে একটু চাপমুক্ত রাখা উচিত। যাঁরা বিশ্লেষণ করি বা সাংবাদিক আছেন, সবার বোঝা উচিত—নতুন কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার আছে। দল ঘোষণার সময় থেকেই একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

টিম ম্যানেজমেন্ট যা বলছে, তেমন কিছু ক্লিক করছে না বলে দলটির একটা ‘ক্র্যাম্পের’ মতো হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট কাছ থেকে দেখছে, নিশ্চয়ই তারা সেরা কম্বিনেশনটা বের করে আনার চেষ্টা করবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, কী ঘটে দেখার জন্য।