বয়স যে খুব বেশি হয়ে গেছে, তা নয়। সামনের ডিসেম্বরে ৩৬ পূর্ণ হবে। তবে কম বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন বলে ক্যারিয়ারটা বেশ লম্বাই। আর ১৬ বছর লম্বা সেই ক্যারিয়ারকেই বিদায় বলতে যাচ্ছেন টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডের এই পেসার জানিয়েছেন, আগামী মাসে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টই তাঁর শেষ ম্যাচ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলার মাধ্যমে একটি চক্রও পূরণ হতে যাচ্ছে সাউদির। ২০০৮ সালের মার্চে নেপিয়ারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তাঁর।
চলতি মাসে তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটন হয়ে হ্যামিল্টনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর। এই ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দিতে গিয়ে সাউদি বলেছেন, ‘বড় হয়েছি নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন নিয়ে। এরপর ব্ল্যাক ক্যাপসদের হয়ে ১৮টি বছর খেলে যাওয়া আমার জন্য বড় সম্মানের। তবে যে খেলাটা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, সেটা থেকে সরে যাওয়ার এখনই সঠিক সময়। আমার হৃদয়ে টেস্টের জন্য বিশেষ স্থান আছে। যাদের বিপক্ষে এই লম্বা যাত্রার শুরুটা হয়েছিল, তাদের বিপক্ষেই এত বড় একটা সিরিজ এবং যে তিনটা মাঠ আমার কাছে অবিশ্বাস্য রকমের বিশেষ, সেখানে খেলতে পারাটা আমার ক্যারিয়ারের সমাপ্তির জন্য দারুণ মানানসই।’
২০২২ থেকে ২০২৪–এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডকে ১৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাউদি। তবে অধিনায়কত্ব ছাড়িয়েও সাউদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্মরণীয় থাকবেন নিউজিল্যান্ডের সেরা বোলার হিসেবে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭৭০ উইকেট তাঁর। সাউদির বাইরে বাঁহাতি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরি (৬৯৬) ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আর কোনো বোলার ন্যূনতম টেস্টে ৩০০, ওয়ানডেতে ২০০ এবং টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেট নিতে পারেননি।
সাউদি এখন পর্যন্ত ১০৪ টেস্টে নিয়েছেন ৩৮৫ উইকেট, যা রিচার্ড হ্যাডলির (৪৩১) পর কিউই বোলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ের জন্যও বিশেষভাবে আলোচিত থাকবেন সাউদি। মূলত বোলার হলেও টেস্টে ৯৩টি ছক্কা আছে তাঁর। যা টেস্ট ইতিহাসে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের মধ্যে সাউদির চেয়ে বেশি ছক্কা আছে শুধু ব্রেন্ডন ম্যাককালামের (১০৭)।
২০২৩ বিশ্বকাপে সর্বশেষ ওয়ানডে আর ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা সাউদি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন। এমনকি নিউজিল্যান্ড ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে উঠলে সেখানেও খেলবেন।
যদিও ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা কমই, পয়েন্ট তালিকায় নিউজিল্যান্ড এখন চার নম্বরে। সেটা ভেবেই এখনই শেষের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন সাউদি, ‘পরিবার, বন্ধু, কোচ, ভক্ত এবং খেলার সঙ্গে জড়িত যারা ক্যারিয়ারজুড়ে আমাকে সহায়তা করেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’