বাংলাদেশ দলের ভাগ্যটাই খারাপ। প্রতিপক্ষ যখন আফগানিস্তানের মতো দল, তখনই বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস একদম তলানিতে। চিন্তা করে দেখুন, এশিয়া কাপে যে দলটা এক দিন আগেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৪ রানে অলআউট হলো, তাদেরই আগামীকাল খেলতে হবে রশিদ-মুজিবদের নিয়ে সাজানো আফগান বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে।
আর ম্যাচটাও বাংলাদেশ দলের জন্য বাঁচামরার। হারলেই এশিয়া কাপ থেকে বাদ। আর জিতলেও যে এশিয়া কাপের সুপার ফোর খেলবে বাংলাদেশ, সে নিশ্চয়তা নেই। তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কার ম্যাচের ফলের দিকে। তবে বাংলাদেশ দল দূরের চিন্তা করতে চাচ্ছে না, সব ভাবনা এখন আফগানিস্তান ম্যাচকে ঘিরে।
পাঁচ মিনিটের ছোট্ট সংবাদ সম্মেলনে এসেছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্রসঙ্গও। তাতে হাথুরুসিংহের উত্তর ছিল এমন, ‘আমরা এই মুহূর্তে বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছি না। আমাদের মনোযোগ এশিয়া কাপে, আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে এই ম্যাচে।’
টুর্নামেন্টে টিকে থাকার ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের খেলতে হবে আফগান বোলিং। হাথুরুসিংহে অবশ্য এ নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না। একই দলের বিপক্ষে গত জুলাইয়ে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজ ২-১–এ হারলেও বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ঘুরেফিরে সে কথাই বললেন। ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের এক সাংবাদিক হাথুরুসিংহেকে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
উত্তরে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘ফাইনালে যাওয়ার আগে আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হবে। সে জন্য এ ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে আমরা হেরেছি। আমরা জানি, আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ ম্যাচটা আমাদের জন্য বাঁচামরার লড়াই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা যে ধরনের দল, সেই অনুযায়ী খেলতে পারিনি। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আগামীকাল আমাদের সেরা খেলাটা খেলব।’
আফগান বোলিংয়ের বিপক্ষে সম্প্রতি খেলার অভিজ্ঞতা এই ম্যাচে কাজে লাগবে, হাথুরুসিংহে তা–ই মনে করেন, ‘আফগানিস্তান বোলিং আক্রমণ অবশ্যই বিশ্বের অন্যতম সেরা। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। তবে আমরা ওদের বিপক্ষে কিছুদিন আগেই খেলেছি। আমাদের খেলোয়াড়েরা কিছু সাফল্যও পেয়েছে। এখন ম্যাচের দিন কে কেমন খেলে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।’
আফগানদের বিপক্ষে সেই সিরিজে বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারে ছিলেন লিটন দাস। অসুস্থতার কারণে তিনি এখনো দলের সঙ্গে যোগ দেননি। ওদিকে চোটের কারণে এশিয়া কাপ খেলছেন না তামিম ইকবাল। দুই অভিজ্ঞ ওপেনার না থাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ইনিংস সূচনা করছেন মোহাম্মদ নাঈম ও তানজিদ হাসান। নিজের অভিষেক ম্যাচে তানজিদ কোনো রান না করে আউট হন, নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।
তবু কোচ দুজনের ওপর আস্থা রাখছেন, ‘টপ অর্ডারে দুজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হারানো অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা যেকোনো দলের জন্যই সত্যি। কিন্তু কিছু করার নেই। একজন চোটের সঙ্গে লড়ছে। আরেকজন অসুস্থ। আমাদের দলে এখন যারা আছে, তাদের ওপর ভরসা রাখতে হবে। ওরা প্রতিভাবান, সে জন্যই ওরা দলে আছে।’
তবে হাথুরুসিংহের কথায় একাদশে পরিবর্তনের আভাসও আছে, ‘আমরা মাত্রই এলাম। এখনো উইকেট দেখিনি। যদি উইকেট ভিন্ন হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা ভিন্ন সমন্বয় নিয়ে ভাবব।’