অ্যান্টিগায় গতকাল বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১০ ওভারে জয়ের জন্য ১২৬ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল নামিবিয়া। তাড়া করতে নেমে ৫.৫ ওভারেই হার চোখ রাঙাচ্ছিল আফ্রিকার দলটিকে। স্কোরবোর্ডে রান তখন ১ উইকেটে ৪৩। জয়ের জন্য তখনো সামনে ২৫ বলে ৮৩ রানের খুব কঠিন দূরত্ব। এ অবস্থায় নামিবিয়া ওপেনার নিকোলাস ডেভিন রিটায়ার্ড আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। বড় লক্ষ্যে ১ ছক্কা ও ১ চারে ১৬ বলে ১৮ রানে ব্যাট করছিলেন ডেভিন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে রিটায়ার্ড আউট হলেন ডেভিন। তাঁর জায়গায় ব্যাট করতে নামেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলতে নামা ডেভিড ভিসা। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ২ ছক্কা ও ২ চারে ১২ বলে ভিসা ২৭ রান করলেও শেষ পর্যন্ত ডিএলএস নিয়মে ৪১ রানে জেতে ইংল্যান্ড।
তবে ভিসা নিজে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ডেভিনের রিটায়ার্ড আউট হয়ে ফেরায় তিনি অবাকই হয়েছেন, ‘আমিও বিস্মিত হয়েছি। এটা প্রত্যাশায় ছিল না। আর তিন-চার ওভার বাকি ছিল আর প্রথা অনুযায়ী টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইমপ্যাক্ট রাখার সময়ও তখনই।’ দুনিয়াজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ানো ভিসার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, টি-টোয়েন্টি এর আগে কখনো রিটায়ার্ড আউট দেখেছে কি না?
ভিসার উত্তর, ‘না, এই প্রথমবারের মতো আমি এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত হলাম। আমার মনে হয়, এমন ঘটনা বেশি হয়নি।’ ভিসা জানতেন, তিনে তিনি ব্যাট করতে নামবেন। কিন্তু ওভাবে আউটের পর যে নামতে হবে, সেটি স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মাথায় ছিল না, ‘জানতাম এরপর আমি নামব। কিন্তু বুঝতে পারিনি, ওভাবে উইকেট পড়বে। নামার জন্য প্রস্তুত থাকলেও কিছুক্ষণের জন্য বুঝতে পারিনি কী ঘটছে। তবে বার্তা পাওয়ার পর নামার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।’
ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ২৫.৪.৩ ধারায় এই আউট সম্বন্ধে বলা আছে, ‘২৫.৪.২ ধারা (অসুস্থতা, চোট কিংবা অন্য কোনো অনিবার্য কারণ) ব্যতীত কোনো ব্যাটসম্যান যদি অন্য কোনো কারণে অবসর নেন, তাহলে শুধু প্রতিপক্ষ অধিনায়কের অনুমতি সাপেক্ষেই সেই ব্যাটসম্যান পুনরায় ইনিংস শুরু করতে পারবেন। যদি তিনি ইনিংস পুনরায় শুরু না করেন, তবে সেটি রিটায়ার্ড আউট হিসেবে নথিবদ্ধ হবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রিটায়ার্ড আউটের ঘটনা খুব বেশি নেই। ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ষষ্ঠ ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে রিটায়ার্ড আউট হলেন ডেভিন। ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো এই আউটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নাম।
২০০১ সালে কলম্বো টেস্টে শ্রীলঙ্কার মারভান আতাপাত্তু ২০১ রান ও মাহেলা জয়াবর্ধনে ১৫০ করে রিটায়ার্ড আউট হন। পরবর্তী ১৮ বছরের মধ্যে ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন আউট আর দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ভুটানের সোনম টোবগে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে রিটায়ার্ড আউট হন। এরপর ফ্রান্সের হেভিড জ্যাকসন ও গাম্বিয়ার মুস্তফা সুয়ারেহ এভাবে আউট হন।